পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৮৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

बध्दिका ब्रष्नावढी কন্যা, আদরীর মত গ্রাম্যা। বষীয়সী, তোরাবের মত গ্রাম্য প্রজা, রাজীবের মত গ্রাম্য বদ্ধ, নাশীরাম ও রতার মত গ্রাম্য বালক, পক্ষান্তরে নিমচাঁদের মত সহরে শিক্ষিত মাতাল, অটলের মত নগরবিহারী গ্রাম্য বাবা, কাণগুনের মত মনষ্যিশোণিতপায়িনী নগরবাসিনী রাক্ষসী, নদেরচাঁদ হেমচাঁদের মত “উনপাঁজরে বরাখরো" হাপ পাড়া গেয়ে হপ সহরে বয়াটে ছেলে, ঘটীরামের মত ডিপটি, নীলকুঠির দেওয়ান, আমীন। তাগাদ গীর, উড়ে বেহােরা দলে বেহােরা, পেচোর মা কাওরাণীর মত লোকের পর্য্যন্ত তিনি নাড়ী নক্ষত্র জানিতেন। তাহারা কি করে, কি বলে, তাহা ঠিক জানিতেন। কলমের মখে তাহা ঠিক বাহির করিতে পারিতেন,-আর কোন বাঙ্গালী লেখক তেমন পারে নাই। তাঁহার আদরীর মত অনেক আদরী। আমি দেখিয়াছি—তাহারা ঠিক আদরী। নদেরচাদ হেমচাঁদ আমি দেখিযাছি, তাহারা ঠিক নদেরচাঁদ বা হেমচাঁদ। মল্লিকা দেখা গিয়াছো-ঠিক আমনি ফটেন্ত মল্লিকা। দীনবন্ধ অনেক সময়েই শিক্ষিত ভাস্কর বা চিত্রকারের ন্যান্য জীবিত আদশ সম্মখে রাখিযা চরিত্রগলি গঠিাতেন। সামাজিক বক্ষে সামাজিক বানর সমারঢ়ে দেখিলেই, অমনি তুলি ধরিয়া তাহার লেজশদ্ধ আকিয়া লইতেন। এটকু গেল তাঁহার Red lism, তাহার উপর ld('alize <pরি ৭ারও বিলক্ষণ ক্ষমতা ছিল। সম্মখে জীবন্ত আদশ রাখিয়া, আপনার সমতির ভান্ডার খালিয়া, তাহার ঘাড়ের উপর অন্যের গণ দোষ চাপাইয়া দিতেন। যেখানে যেটি সাজে, তাহা বসাইতে জানিতেন। গাছের বানরকে এইরপে সাজাইতে সাজাইতে সে একটা হনমান বা জাম্ববানে পরিণত হইত। নিমচাঁদ, ঘটীরাম, ভোলাচাঁদ প্রভৃতি বন্য জগুর এইরূপ উৎপত্তি। এই সকল সন্টির বাহাল্য ও বৈচিত্ৰ্য বিবেচনা করিলে, তাঁহার অভিজ্ঞতা বিস্মযকর বলিয়া বোধ হয। কিন্তু কেবল অভিজ্ঞতায় কিছ, হয় না, সহানভূতি ভিন্ন সন্টি নাই। দানবন্ধীর সামাজিক অভিজ্ঞতাই বিসমসকর নহে!—তাঁহার সহানভূতিও অতিশয় তীব্র। বিস্ময় এবং বিশেষ প্রশংসার কথা এই যে, সকল শ্রেণীর লোকের সঙ্গেই তাঁহার তীব্র সহানভূতি। গরিব দঃখীর দঃখেব ম’ম” বাঁঝিতে এমন আর কাহাকে দেখি না। তাই দীনবন্ধ অমন একটা তোরাপ কি রাইচবণ, একটা আদরী কি রেবতী লিখিতে পারিয়াছিলেন। কিন্তু তাঁহার এই তীব্র সহানভূতি কেবল গরিব দঃখীর সঙ্গে নহে; ইহা সব্বব্যাপী। তিনি নিজে পবিত্ৰচরিত্র ছিলেন, কিন্তু দশচরিত্রের দঃখ বঝিতে পারিতেন। দীনবন্ধর পবিত্রতার ভান ছিল না। এই বিশ্বব্যাপী সহানভূতির গণেই হউক না দোষেই হােডক, তিনি সব্বস্থানে যাইতেন, শব্দ্ধাত্মা পাপাত্মা সকল শ্রেণীর লোকের সঙ্গে মিশিতেন। কিন্তু অগ্নিমধ্যস্থ অদাহ্য শিলার ন্যায় পাপাগ্নিকুন্ডেও আপনার বিশদ্ধি রক্ষা করিতেন। নিজে এই প্রকার পবিত্ৰচেতা হইয়াও সহনাভূতি শক্তির গণে তিনি পাপিঠের দঃখ পাপিন্ঠের ন্যায় বঝিতে পারিতেন। তিনি নিমচাঁদ দত্তের ন্যায় বিশাকজীবন-সখি বিফলীকৃত শিক্ষা, নৈরাশ্যপীড়িত মদ্যপের দঃখ বঝিতে পারিতেন, বিবাহ বিষয়ে ভগ্ন-মনোরথ রাজীব মখোপাধ্যায়ের দঃখ বঝিতে পারিতেন গোপীনাথের ন্যায় নীলকরের আজ্ঞাবত্তিতার যন্ত্রণা বঝিতে পারিতেন। দীনবন্ধকে আমি বিশেষ জানিতাম; তাঁহার হৃদয়ের সকল ভাগই আমার জানা ছিল। আমার এই বিশ্বাস, এরপ পরিদঃখকাতর মনষ্য আর আমি দেখিয়াছি কি না। সন্দেহ। তাঁহার গ্রন্থেও সেই পরিচয় অ'ছে। কিন্তু এ সহানভূতি কেবল দঃখের সঙ্গে নহে; সখি দঃখ, রাগ দ্বেষ সকলেরই সঙ্গে তুল্য সহানভূতি। আদরীর বাউটি পৈৗঁছার সখের সঙ্গে সহানভূতি, তোরাপের রাগের সঙ্গে সহানভূতি, ভোলাচাঁদ যে শােভ কারণ বশতঃ শ্বশরবাড়ী যাইতে পারে না, সে সখের সঙ্গেও সহানভূতি। সকল কবিরই এ সহানভূতি চাই। তা নাহিলে কেহই উচ্চ শ্রেণীর কবি হইতে পারেন না। কিন্তু অন্য কবিদিগের সঙ্গে ও দীনবন্ধর সঙ্গে একটা প্ৰভেদ আছে। সহানভূতি প্রধানতঃ কলপনাশক্তির ফল। আমি আপনাকে ঠিক অন্যের স্থানে কলপনার দ্বারা বসাইতে পারিলেই তাহার সঙ্গে আমার সহানভূতি জন্মে। যদি তাহাই হয় তবে এমন হইতে পারে যে, অতি নিন্দয় নিন্ঠর ব্যক্তিও কলপনাশক্তির বল থাকিলে কাব্য প্রণয়ন কালে দঃখীর সঙ্গে আপনার সহানভূতি জন্মাইয়া লইয়া কাব্যের উদ্দেশ্য সাধন করেন। কিন্তু আবার এমন শ্রেণীর লোকও আছেন যে, দয়া প্রভৃতি কোমল বত্তি সকল তাঁহাদের সবভাবে এত প্রবল যে, সহনাভূতি তাঁহাদের সম্ভবতঃসিদ্ধ, কলপনার সাহায্যের অপেক্ষা করে না। মনস্তত্ত্ববিদেরা বলবেন, এখানেও কলপনাশক্তি লাকাইয়া কাজ করে, তবে সে কায্য এমন অভ্যস্ত, বা শীঘ্র সম্পাদিত যে, আমরা b○ミ