পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৮৮৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ঈশ্বরচন্দ্র গপ্তের কবিতাসংগ্ৰহ-ভূমিকা গপ্তের বেলা তাহা ঘটে নাই কেন ? এখানে দেশ, কাল, পাত্ৰ বঝিয়া দেখিতে হইবে। তাই আমি দেশের রাঁচি বাবাইলাম, কালের রচি বঝোইলাম, এবং পাত্রের রচি বক্সাইলাম। বাবাইলাম যে পাত্রের রচির অভাবের কারণ, (১) পান্তকাদত্ত সংশিক্ষার অলপতা, (২) মাতার পবিত্র সংসগের অভাব, (৩) সহধৰ্ম্মিণী, অৰ্থাৎ যাঁহার সঙ্গে একত্রে ধৰ্ম্মম শিক্ষা করি, তাহার পবিত্র সংসগের অভাব, (৪) সমাজের অত্যাচার, এবং তক্তজনিত সমাজের উপর কবির জাতক্ৰোধ। যে মেঘে। প্রভাকরের তেজোহ্রাস করিয়াছিল। এই সকল উপাদানে তাহার জন্ম। স্থলে তাৎপৰ্য্য এই যে, ঈশ্বরচন্দ্র যখন অশ্লীল তখন কুরচির বশীভূত হইয়াই অশ্লীল, ভারতচন্দ্রাদির ন্যায় কোথাও কুপ্রবত্তির বশীভূত হইয়া অশ্লীল নহেন। তাই দপণতলস্থ প্রতিবিমোবার সাহায্যে প্রতিবিম্বাবধারী সত্তাকে বঝাইবার জন্য আমরা ঈশ্বরচন্দ্ৰ গপ্তের অশ্লীলতা দোষ এত সবিস্তারে সমালোচনা করিলাম। ব্যাপারটা রীচিকর নহে। মনে করিলে, নমঃ নমঃ বলিয়া দাই কথায় সারিয়া যাইতে পারিতাম। অভিপ্রায় বঝিয়া বিস্তারিত সমালোচনা পাঠক মাতজনা করিবেন। মানষটাকে আর একটা ভাল করিয়া বঝা যাউক-কবিতা না হয় এখন থােক। দ্বিতীয় পরিচ্ছেদে আমরা বলিয়াছি ঈশ্বর গগুপ্ত বিলাসী ছিলেন না। অথচ দেখিতে পাই, মাখের আটক পাটক কিছই নাই। অশ্লীলতায় ঘোর আমোদ, ইয়ারকি ভরা-পাঁটার স্তোত্র লেখেন, তপসে মাছের মজা বাঝেন, লেব দিয়া আনারসের পরমভক্ত, সারাপান + সম্বন্ধে মক্তকণঠ-আবার বিলাসী কারে বলে ? কথাটা ববিয়া দেখা যাউক । এই সংগ্রহের প্রথম খন্ডে পাঠক ঈশ্বর গািপ্ত প্রণীত কতকগলি নৈতিক ও পারমার্থিক বিষয়ক কবিতা পাইবেন। অনেকের পক্ষে ঐগলি নীবস বলিয়া বোধ হইবে, কিন্তু যদি পাঠক ঈশ্বর গগুপ্তকে বঝিতে চাহেন, তবে সেগলি মনোযোগপর্বক পাঠ কবিনেন। দেখিবেন সেগলি ফরমায়েশি কবিতা নহে। কবির আন্তরিক কথা তাহাতে আছে । অনেকগলির মধ্যে ঐ কয়টি বাছিয়া দিয়াছি।--আর বেশী দিলে রসিক বাঙ্গালী পাঠকের বিরক্তিকর হইয়া উঠিবে। ইহা বলিলেই যথেস্ট হইবে যে পরমাথা বিষয়ে ঈশ্বরচন্দ্র গদ্যে পদ্যে যত লিখিয়াছেন, এত আর কোন বিষয়েই বোধ হয় লিখেন নাই। এ গ্রন্থ পদ্যসংগ্ৰহ বলিয়া, তামরা তাঁহার গদ্য কিছই উদ্ধত করি নাই, কিন্তু সে গদ্য পড়িয়া বোধ হয় যে, পদা অপেক্ষাও বঝি গদ্যে তাঁহার মনের ভাব আরও সাসপেন্ট। এই সকল গদ্য পদ্যে প্ৰণিধান করিয়া দেখিলে, আমরা বঝিতে পারিব যে, ঈশ্বর গপ্তের ধৰ্ম্মম , একটা কৃত্রিম ভান ছিল না। ঈশ্বরে তাপ আন্তরিক ভক্তি ছিল। তিনি মদ্যপ হউন, বিলাসী হউন কোেনা হবিষ্যাশী নামাবলীধারীতে সেরাপ আন্তরিক ঈশ্বরে ভক্তি দেখিতে পাই না। সাধারণ ঈশ্বরবাদী বা ঈশ্বরভক্তের মত তিনি ঈশ্বরবাদী ও ঈশ্বর ভক্ত ছিলেন না । তিনি ঈশ্বরকে নিকটে দেখিতেন, যেন প্রত্যক্ষ দেখিতেন, যেন মখোমখেী হইয়া কথা কহিতেন। আপনাকে যথার্থ ঈশ্বরের পত্র, ঈশ্বরকে আপনালি সাক্ষাৎ মৰ্ত্তিমান পিতা বলিযা দািঢ় বিশ্বাস করিতেন। মাখামখেী হইয়া বাপের সঙ্গে বাচসা করিতেন। কখন বাপের আদর খাইবার জন্য কোলে বসিতে যাইতেন, আপনি বােপকে কত আদর করিতেন-উত্তর না পাইলে কদাকাটা বাধাইতেন। বলিতে কি, তাঁহার ঈশ্বরে গাঢ় পত্রিবৎ আকৃত্ৰিম প্রেম দেখিয়া চক্ষের জল রাখা যায় না। অনেক সময়েই দেখিতে পাই যে, মাত্তিমান ঈশ্বর সম্মখে পাইতেছেন না, কথার উত্তর পাইতেছেন না বলিয়া, তাঁহার অসহ্য যন্ত্রণা হইতেছে, পাপকে বকিয়া ফাটাইয়া দিতেছেন। বাপ নিরাকার নিগণি চৈতন্য মাত্র, সাক্ষাৎ মাত্তিমান বাপ নহেন, এ কথা মনে করিতেও অনেক সময়ে কািট হইত। কাতর কিঙকর আমি, তোমার সন্তান। আমার জনক তুমি, সবার প্রধান৷ বার বার ডাকিতেছি, কোপা ভগবান । একবার তাহে তুমি, নাহি দাও কান ৷

  • সরোপানের মাঙ্গাজনা নাই। মান্জনার আমিও কোন কারণ দেখিতে ইচ্ছক নাহি । কেবল সে সম্বন্ধে পাঠককে ভারতবষের শ্রেদ্ঠ কবির এই উক্তিটি সমবণ করিতে বলি

একোহি দোষো গণসন্নিপাতে নিমজ জাতীন্দোঃ কিরণেজিবাবাওকঃ। কবিতাসংগ্রহের ৫১ পদ্ঠার কবিতাটি পাঠ করা। b &(。