পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৯৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্কিম ম, নৰল । কৃষ্ণ পাওয়া যায়, কিন্তু তাকে কৃষ্ণ বা ঈশ্বর কাহাকেও পাওয়া যায় না। কিন্তু যদি দাইটির মধ্যে একটি প্রকৃত হয়, তবে যেটি প্রকৃত সেইটি প্রচলিত হওয়াই কৰ্ত্তব্য, অপ্রকৃতের সহস্ৰ শাভ ফল থাকিলেও তাহা প্রচলিত হওয়াই অকৰ্ত্তব্য। যদি সাকার পজাই প্রকৃত ঈশ্বরোপাসনা হয়, তবে তৎপ্রদত্ত উপকার সকল এক এক কারিয়া গণিবার আবশ্যকতা নাই; তাহাতে কোন উপকার না থাকিলেও, সহস্ৰ অনপকার থাকিলেও তাঁহাই অবলম্বনীয়। আর যদি তাহা না হইয়া নিরাকার প্রকৃত ঈশ্বর সবরাপ হয়, তবে সাকার পজায়, সহস্র উপকার থাকিলেও, নিরাকার পজায় কোন ইস্ট না থাকিলেও, সাকার পজা লগুপ্ত হওয়াই উচিত। ইহার কারণ সত্য ভিন্ন অসত্যে কখন মঙ্গল নাই। সত্যই ধৰ্ম্ম, সত্যই শাভ, সত্যই বাঞ্ছনীয়, সত্যমেব জয়তি। বঃ-"ভ্রমর, অগ্রহায়ণ Տ ՀԵՏ, ?t. ՏԵՏ-ԵԳ কলপতর* গদ্যোপন্যাসকে সচরাচর আমরা কাব্যই বলিয়া থাকি। কাব্যের বিষয় মনষ্যেচরিত্র। মনষ্যচরিত্র ঘোরতর বৈচিত্র্যবিশিস্ট। মনষ্যে সর্বভাবতঃ সবার্থপর, এবং মনষ্যে সর্বভাবতঃ পরদঃখে দঃখী এবং পরোপকারী। মনষ্যে পশ্যবিত্ত, এবং মনষ্যে দেবতুল্য। সকল মানষের চরিত্রই এইরােপ বৈচিত্ৰ্যবিশিস্ট ; এমন কেহ নাই যে, সে একান্ত সাবাথ পর, এবং এমন কেহ নাই যে, সে একান্ত সবার্থবিস্মত পরহিতান রক্ত; কেহই নিতান্ত পশ্য নহে, কেহই নিতান্ত দেবতা নহে। এই পশ্যত্ব ও দেবত্ব, একত্রে, একাধারে, সকল মনষ্যেই কিয়ৎপবিমাণে আছে; তবে সৰ্ব্বত্র উভয়ের মাত্রা সমান নহে। কাহারও সদগণের ভাগই অধিক, অসদগণের ভাগ অলপ, সে ব্যক্তিকে আমরা ভাল লোক বলি; যাহার সদগণের ভাগই অলপ, অসদগণের ভাগ অধিক, তাহাকে মন্দ বলি। কিন্তু এইবােপ দ্বিপ্রকৃতিত্ব সকল মনতুষ্যেরই আছে; মনষ্যেচরিত্রই দ্বিপ্রাকৃতিক; দাইটি বিসদশে ভাগে মনষ্যহাদয় বিভক্ত। কাব্যের বিষয় মনষ্যেচরিত্র; যে বাক্য সম্পপণ্য, তাহাতে এই দাই ভাগই প্রতিবিম্বিবত হইবে। কি গদা, কি পদ্য প্রথম শ্রেণীর গ্রন্থ মাত্রেই এই রােপ সম্পণে তাযক্তি। কিন্তু কোন কোন কবি, এক একভাগ মাত্র গ্রহণ করেন। তাঁহারা যে মনষ্যের দ্বিপ্রকৃতিত্ব অবগত নহেন, এমত নহে; তবে তাঁহারা বিবেচনা করেন যে, যেমন একত্রে সমাবিল্ট মনষ্যচরিত্রের ভাল মন্দ অধীত এবং পৰ্যবেক্ষিত করা আবশ্যক, তেমনি উহা পথক পথক করিয়া অধীত এবং পর্যবেক্ষিত করাও আবশ্যক। যেমন একটি যক্তবণের উচ্চারণ শিখিবার পন্বে যে বর্ণদ্বয়ের যোগে তাহা নিস্পন্ন হইয়াছে, তত্ত্যুৎ উচ্চারণ অগ্ৰে পথক পথক করিযা শিখা কৰ্ত্তব্য, তেমনি মনষ্যচরিত্রের অংশদ্বায়কে বিযক্তি কবিয়া পথক পথক অধ্যয়ন করা বিধেয়। এইরূপে বিশ্বাসের বশবত্তীর্ণ হইয়া কতকগলি কবি মনষ্যচরিত্রের অংশমাত্র গ্রহণ করেন। যাঁহারা মহদংশ গ্রহণ করিয়াছেন, তাঁহাদিগের গ্রন্থের এক বিশিষ্ট উদাহরণ বিক্টর হ্যাগোর গদ্যকাব্যাবলী। যাঁহারা অসন্তাব গ্রহণ করেন, তাঁহারা প্রায় রহস্যলেখক। ইহাদিগের চড়ামণি সর, বণ্টিস। ইহাদিগের গ্রন্থ সকল অতি উৎকৃষ্ট হইলেও, অসম্পণে কাব্য। এই সম্প্রদায়ের কেবল দাই জন লেখক বাঙ্গালা ভাষায় সপরিচিত; প্রথম টেকচাঁদ ঠাকুর; দ্বিতীয় হতোম পেচা লেখক। অদ্য সেই সম্প্রদায়ের তৃতীয় লেখকের পরিচয় দিতেছি। বাবা ইন্দ্ৰনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, একখানি মাত্র গ্রন্থ প্রচার করিয়া, বাঙ্গালায় প্রধান লেখকদিগের মধ্যে স্থান পাইবার যোগ্য বলিয়া পরিচিত হইয়াছেন। রহস্যপটতায়, মনষ্যচরিত্রের বহ দৰ্শিতায়, লিপিচাতুৰ্য্যে, ইনি টেকচাঁদ ঠাকুর এবং হতোমের সমকক্ষ, এবং হতোম ক্ষমতাশালী হইলেও পরদ্বেষী, পরনিন্দক, সনেীতির শত্র, এবং বিশদ্ধ রচির সঙ্গে মহাসমরে প্রবত্ত। ইন্দ্রনাথ বাবা পরদখে কাতর, সনেীতির প্রতিপোষক এবং তাঁহার গ্রন্থ সরাচির বিরোধী নহে। তাঁহার যে লিপিকৌশল, যে রচনাচতুৰ্য, তাহা আলালের ঘরের দলালে নাইসে বাকশক্তি নাই। তাঁহার গ্রন্থে রঙ্গদশনপ্রিয়তার ঈষৎ, মধর হাসি ছত্ৰে ছত্রে প্রভাসিত আছে, অপাঙ্গে যে চতুরের বক্র দণ্টিন্টকু পদে পদে লক্ষিত হয়, তাহা না হতোমে, না টেকচাঁদে, দইয়ের

  • কলপাতর। শ্ৰীইন্দ্রেনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রণীত। কলিকাতা। কানিও লাইব্রেরি। ১২৮১৷৷

1yAyri