পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৯৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ৰাতি কম রচনাবলী নসীরাম বাবা ডাকিল, “কমলাকান্ত!” আমার চমক হইল-চাহিয়া দেখিলাম-বাঝি বড় ঢলিয়া পড়িয়াছিলাম। কিন্তু চাহিয়া দেখিয়া নসীরামকে চিনিতে পারিলাম না-দেখিলাম, মনে হইল, একটা বহৎ পতঙ্গ বালিশ ঠেসান দিয়া, তামাকু টানিতেছে। সে কথা কহিতে লাগিল -আমার বোধ হইতে লাগিল যে, সে চোঁ বোঁ করিয়া কি বলিতেছে। এখন হইতে আমার বোধ হইতে লাগিল যে, মনষ্যে মাত্রেই পতঙ্গ। সকলেরই এক একটি বহ্নি আছে-সকলেই সেই আছে-কেহ মরে, কেহ কাচে বাধিয়া ফিরিয়া আসে। জ্ঞান-বহি, ধন-বহ্নি, মান-বহ্নি, রপবহি, ধৰ্ম্ম-বহ্নি, ইন্দ্ৰিয়-বহ্নি, সংসার বহ্নিময়। আবার সংসার কাচাময়। যে আলো দেখিয়া মোহিত হই-মোহিত হইয়া যাহাতে ঝাঁপ দিতে যাই-কই, তাহা ত পাই না-আবার ফিরিয়া বোঁ করিয়া চলিয়া যাই-আবার আসিয়া ফিরিয়া বেড়াই। কাচ না থাকিলে, সংসার এত দিন পড়িয়া যাইত। যদি সকল ধৰ্ম্মম বিং চৈতন্যদেবের ন্যায় ধৰ্ম্মম মানস-প্রত্যক্ষে দেখিতে পাইত, গেলিলিও তাহতে পড়িয়া মরিল্য। রপ-বহ্নি, ধন-বহ্নি, মান-বাহিতে নিত্য নিত্য সহস্র পতঙ্গ পড়িয়া মরিতেছে,-আমরা সবচক্ষে দেখিতেছি। এই বহির দাহ যাহাতে বৰ্ণিত হয়, তাহাকে কাব্য বলি। মহাভারতকার মান-বহ্নি সজন করিয়া দিযোধন পতঙ্গকে পোড়াইলেন;- জগতে অতুল্য কাব্যগ্রন্থের সন্টি হইল। জ্ঞানবহ্নিজাত দাহের গীত'Paradise Lost”। ধৰ্ম্ম-বহির অদ্বিতীয় কবি সেণ্ট পল। ভোগবহির পতঙ্গ, “আণ্টনি, ক্লিওপেত্রা”। রপ-বহির “রোমিও ও জলিয়েত,” ঈষা-বহ্নির “ওথেলো”। গীতগোবিন্দ ও বিদ্যাসন্দরে ইন্দ্ৰিয়-বহ্নি জীবলিতেছে। স্নেহ-বহ্নিতে সীতাপতঙ্গের দাহ জন্য রামায়ণের সন্টি। বহ্নি কি, আমরা জানি না। রােপ, তেজ, তাপ, ক্রিয়া, গতি, এ সকল কথার অর্থ নাই। এখানে দশন হারি মানে, বিজ্ঞান হারি মানে। ধৰ্ম্মপহন্তক হারি মানে, কাব্যগ্রন্থ হারি মানে। ঈশ্বর কি, ধৰ্ম্মম কি, জ্ঞান কি, স্নেহ কি ? তাহা কি, কিছ জানি না। তব সেই অলৌকিক, অপরিজ্ঞাত পদাৰ্থ বেড়িয়া বেড়িয়া ফিরি। আমরা १ऊ का ऊ कि ? দেখ ভাই, পতঙ্গের দল, ঘরিয়া ঘরিয়া কোন ফল নাই। পার, আগানে পড়িয়া পড়িয়া মর। না পাের, চল, “বোঁ” করিয়া চলিয়া যাই। শ্ৰীকমলাকান্ত চক্রবত্তীর্ণ 99 Rey-eats at আমার মন কোথায় গেল ? কে লইল ? কই, যেখানে আমার মন ছিল, সেখাতে তা নাই । যেখানে রাখিয়াছিলাম, সেখানে নাই। কে চুরি করিলা ? কই, সাত পথিবী খাজিয়া ত আমার “মনচোর” কাহাকে পাইলাম না। তবে কে চুরি করিল ? একজন বন্ধ বলিলেন, দেখ, পাকশালা খাজিয়া দেখ, সেখানে তোমার মন পড়িয়া থাকিতে পারে। মানি, পাকের ঘরে আমার মন পড়িয়া থাকিত। যেখানে পোলাও, কাবাব, কোফতার আমার মন পড়িয়া থাকিত। যেখানে ইলিস মৎস্য, সতৈল অভিষেকের পর ঝোলগঙ্গায় স্নান করিয়া, মলময়, কাংস্যময়, কাচাময় বা রজাতময় সিংহাসনে উপবেশন করেন, সেইখানেই আমার মন প্ৰণত হইয়া পড়িয়া থাকে, ভক্তিরসে অভিভূত হইয়া, সেই তীৰ্থস্থান আর ছড়িতে চায় না। যেখানে ছাগ-নন্দন, দ্বিতীয় দধীচির ন্যায়। পরোপকারার্থ আপন অস্থি সমপণ করেন, যেখানে মাংসসংযক্ত সেই অস্থিতে কোরমা-রাপ বঞ্জ নিশ্চিমত হইয়া, ক্ষধারােপ বল্লাসর বধের জন্য প্রস্তুত থাকে, আমার মন সেইখানেই, ইন্দুত্বলাভের জন্য বসিয়া থাকে। যেখানে, পাচকরপেী বিষ্ণুকর্তৃক, লচিরােপ সদশ্যন চক্র পরিত্যক্ত হয়, আমার মন সেইখানেই গিয়া বিষ্ণভক্ত হইয়া দাঁড়ায়। অথবা যে আকাশে লাচি-চন্দ্রের উদয় হয়, সেইখানেই আমার মন-ব্লাহ গিয়া তাহাকে গ্রাস করিতে চায়। অন্যে যাহা বলে বলক, আমি লাচিকেই অখন্ড মন্ডলাকার বলিয়া থাকি। যেখানে সন্দেশরুপে শালগ্রামের বিরাজ, আমার মন সেইখানেই পাজক। হালদারদিগের বাড়ীর রামমণি দেখিতে অতি কুৎসিত, এবং তাহার বয়ঃক্রম ষাট বৎসর, কিন্তু রাঁধে ভাল এবং পরিবেশনে @扩