পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৯৪৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জাহি বুলি বা শনিয়াছেন। ভিতরে সর্বত্রই মন%ষ্য-প্রকৃতি এক আমরা কি৪িৎ জ্ঞানলাভ করিলে, অজ্ঞানীকে যতটা ঘশা করি, বোধ হয়ততটার কোন উপযক্ত কারণ নাই। অজ্ঞ এবং জ্ঞানী উভয়ে কান পাতিয়া শনিতে পারেন আজকার দিনে এ বাঙ্গালা দেশে এমন অনেক বলিবার কথা আছে। এ শিক্ষা শিখাইবে কে? এ পত্রের শিবোভা:ে ত সম্পাদকের নাম নাই। থাকিবারও কোন প্রয়োজন দেখি না। সম্পাদক কে, পাঠকের জানিবারও কোন প্রয়োজন নাই: কেন না পাঠকেরা প্রবন্ধ পড়িবেন, সম্পাদককে পড়িবেন না। সম্পাদকের এমন কোন দাবি দাওয়া নাই যে, তিনি আত্মপরিচয় দিয়া পাঠকদিগের সম্মুখীন হইতে পারেন। তাঁহার কাজ, যাঁহারা বিদ্বান, ভাবক, বসজ্ঞ, লোকহিতৈষী এবং সলেখক, তাঁহাদের লিখিত প্রবন্ধ সকল সংগ্রহ করিয়া পাঠকদিগকে উপহার প্রদান করেন। এ কাজ তিনি পারিবেন, এমন ভরসা করেন। আমরা মনষ্যের নিকট সাহায্যের ভরসা পাইয়াছি। এক্ষণে যিনি মননষ্যের জ্ঞানাতীত, যাঁহার নিকট মনষ্যেশ্রেষ্ঠও কীটাণমাত্র. তাঁহার সাহায্যের প্রার্থনা করি। সকল সিদ্ধিই তাঁহার প্রসাদমাত্র এবং সকল অসিদ্ধি তাঁহার কৃত নিয়মলঙঘনেরই ফল। ‘প্রচাব', শ্রাবণ ১২৯১. পকৃ. ১-৬

অাদি ব্রাহ্ম সমাজ

‘নব হিন্দ, সম্প্রদায়'


বাব; রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সম্প্রতি একটি বক্ততা করেন। তাহা অগ্রহায়ণের "ভারতীতে প্রকাশিত হইয়াছে। প্রস্তাবটির শিরোনাম, "একটি পরোতন কথা" বর্তৃতাটি শনি নাই, মদ্রিত প্রবন্ধটি দেখিয়াছি। নিবাক্ষরকারী লেখক তাহার লক্ষ্য ইহা আমার পক্ষে কিছই নতন নহে। রবীন্দ্ৰ বাব যখন ক, খ, শিখেন নাই, তাহার পর্ব হইতে এরাপ সখে দঃখ আমার কপালে অনেক ঘটিয়াছে। আমার বিরদ্ধে কেহ কখন কোন কথা লিখিলে বা বস্তৃতায় বলিলে এ পর্যন্ত কোন উত্তর করি নাই। কখন উত্তর করিবার প্রয়োজন হয় নাই। এবার উত্তর করিবার একট প্রয়োজন পড়িয়াছে। না করিলে যাহারা আমার কথায় বিশ্বাস করে, (এমন কেহ থাকিলে থাকিতে পারে) তাহাদের অনিষ্ট ঘটিবে। কিন্তু সে প্রয়োজনীয় উত্তর দই ছলে দেওয়া যাইতে পারে। রবীন্দু বাবর কথার উত্তরে ইহার বেশী প্রয়োজন নাই । রবীন্দ্ৰ বাব প্ৰতিভাশালী, সবুশিক্ষিতসলেখক, মহৎ স্বভাব, এবং আমার বিশেষ প্রীতি, যন্ত্র এবং প্রশংসার পাত্র। বিশেষতঃ তিনি তরণেবয়ক। যদি তিনি দনই একটা কথা বেশী বলিয়া থাকেন, তাহা নীরবে শনাই আমার কৰ্ত্তব্য তবে যে এ কয় পাতা লিখিলাম তাহার কারণ, এই রবির পিছনে একটা বড় ছায়া দেখিতেছি রবীন্দ্র বাব, আদি ব্রাহ্ম সমাজের সম্পাদক। সম্পাদক না হইলেও আদি ব্রাহ্ম সমাজের সঙ্গে তাঁহার সবন্ধ যে বিশেষ ঘনিষ্ঠ, তাহা বলা বাহ-ল্য। বস্তৃতাটি পড়িয়া আমার আদি ব্রাহ্ম সমাজের সবন্ধে কতকগনুলি কথা মনে পড়িল। আদি ব্রাহ্ম সমাজের লেখকদিগের নিকট আমার কিছ নিবেদন আছে। সেই জন্যই লিখিতেছি। কিন্তু নিবেদন জানাইবার পর্কে পাঠককে একটা রহস্য বঝাইতে হইবে। গত শ্রাবণ মাসে, "নবজীবন” প্রথম প্রকাশিত হয়, তাহাতে সম্পাদক একটি সচনা লিখিয়া ছিলেন। সচনায়, তত্ত্ববোধিনী পত্রিকার প্রশংসা ছিল, বঙ্গদর্শনেরও প্রশংসা ছিল। আমাদের দর্ভাগ্যক্রমে তত্ত্ববোধিনীর অপেক্ষা বঙ্গদর্শনের প্রশংসাটা একটু বেশী ঘোরাল হইয়া উঠিয়াছিল তার পর সঞ্জীবনীতে একখানি প্রেরিত পত্র প্রকাশিত হইল। পরখানির উদ্দেশ্য নবজীবন এবং নবজীবনের সচেনাকে গালি দেওয়া। এই পত্রে লেখকের বাক্ষর ছিল না, কিন্তু অনেকেই জানে যে, আদি ব্রাহ্ম সমাজের এক জন প্রধান লেখক, ঐ পত্রের প্রণেতা। তিনি আমার বিশেষ শ্রদ্ধার পাত্র এবং শনিয়াছি, তিনি নিজে ঐ পত্রখানির জন্য পরে অন্যতাপ করিয়াছিলেন, অতএব নাম প্রকাশ করিলাম না। যদি কেহ এই সকল কথা অস্বীকার করেন, তবে নাম প্রকাশ করিতে বাধ্য হইব। ব ২২৫৮ ১৯১৩