পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (দ্বিতীয় খণ্ড).pdf/৯৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ৰবিন রচনাবলী এখন আয় আমার সময়ও নাই। প্রচারে আার স্থানও নাই । বোধ হয়, পাঠকের আর ধৈর্য্যও থাকিবে না। সর্ঘতরাং ক্ষান্ত হইলাম এখন রবীন্দ্র বাবহ বলিতে পারেন যে, “যদি বঝিতে পারিতেছ যে, তোমার ব্যবহৃত শব্দের অর্থ বঝিতে না পারিয়া, আমি প্রমে পতিত হইয়াছি—তবে আমার ভ্ৰম সংশোধন করিয়াই তোমার ক্ষান্ত হওয়া উচিত ছিল—আদি ব্রাহ্ম সমাজকে জড়াইতেছ কেন ?” এই কথার উত্তরে যে কথা সাধারণ পাঠ্য প্রবন্ধে বলা রন্থচিবিগহি ত, যাহা *Pr-nal, তাহা বলিতে বাধ্য হইলাম । আমার সৌভাগ্যক্রমে, আমি রবীন্দ্র বাবর নিকট বিলক্ষণ পরিচিত। শ্লাঘাম্বরপ মনে। করি,–এবং ভরসা করি, ভবিষ্যতেও মনে করিতে পারিব যে, আমি তাঁহার সহজন মধ্যে গগ্য হই। চারি মাস হইল প্রচারের সেই প্রবন্ধ প্রকাশিত হইয়াছে। এই চারি মাস মধ্যে রবীন্দ্র বাব, অনাগ্রহপ ক অনেকবার আমাকে দর্শন দিয়াছেন। সাহিত্য বিষয়ে অনেক আলাপ এ প্রসঙ্গ কখনও উথাপিত করেন নাই। অথচ বোধ হয় যদি ঐ প্রবন্ধ পড়িয়া রবীন্দ্র বাবর এমন বিশ্বাসই হইরাছিল যে, দেশে তাবনতি, এবং ধর্মের উচ্ছেদ এই দইটি আমি জীবনের উদ্দেশ্য করিয়াছি, তবে যিনি ধনা প্রচারে নিয,ক্ত, আদি ব্রাহ্ম সমাজের সম্পাদক, এবং স্বয়ং সত্যানরোগ প্রচারে যত্নশীল, তিনি এমন ঘোর-পাপিষ্ঠের উদ্ধারের জন্য ষে সে প্রসঙ্গ ঘগোক্ষরেও উথাপিত করিবেন না তার পর চারি মাস বাদে সহসা পরোক্ষে বাস্মিতার উৎস। খলিয়া দিবেন, ইহা আমার অসম্ভব বোধ হয়। তাই মনে করি, এ উৎস তিনি নিজে খালেন নাই, আর কেহ খলিয়া দিয়াছে। এক্ষণে আদি ব্রাহ্ম সমাজের লেখকদিগের কাজ. গোড়ায় যাহা বলিয়াছি, পাঠক তাহা স্মরণ করনে। আদি ব্রাহ্ম সমাজকে জড়ানতে, আমার কোন দোষ আছে। কি না. বিচার করন তাই, আদি ব্রাহ্ম সমাজের লেখকদিগের কাছে আমার একটা নিবেদন আছে। আদি ব্রাহ্ম সমাজকে আমি বিশেষ ভক্তি করি। আদি ব্রাহ্ম সমাজের দ্বারা এ দেশে ধর্ম সম্বন্ধে বিশেষ উন্নতি সিদ্ধ হইয়াছে ও হইতেছে জানি। বাব দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর, বাব, রাজনারায়ণ বস বাব, দ্বিজেন্দ্রনাথ ঠাকুর যে সমাজের নেতা, সে সমাজের কাছে অনেক শিক্ষা লাভ করিব, এমন আশা রাখি। কিন্তু বিবাদ বিসবাদে সে শিক্ষা লাভ করিতে পারিব না। বিশেষ আমার বিশ্বাস, আদি ব্রাহ্ম সমাজের লেখকদিগের দ্বারা বাঙ্গালা সাহিতোর অতিশয় উন্নতি হইয়াছে ও হইতেছে সেই বাঙ্গালা সাহিত্যের কাৰ্য্যে আমরা জীবন সমপৰ্শ করিয়াছি। আমি ক্ষদ্ৰআমার দ্বারা এমন কিছ কাজ হয় নাই, বা হইতে পারে না, যাহা আদি ব্রাহ্ম সমাজের লেখকেরা গণনার মধ্যে আনেন। কিন্তু কাহারও আন্তরিক যন্ত্র নিক্ষেল হয় না। ফল যতই অল্প হউক, বিবাদ বিসবাদে কমিবে বই বাড়িবে না। পরস্পরের আন বলো ক্ষমুদ্রের দ্বারাও বড কাজ হইতে পারে। তাই বলিতেছি, বিবাদ বিসবাদে, নামে বা বিনামে, স্বতঃ বা পরতঃ প্রকাশ্যে বা পরোক্ষে, বিবাদ বিসবাদে তাঁহারা মন না দেন। আমি এই পর্যন্ত ক্ষান্ত হইলাম, আর কখন এরপে প্রতিবাদ করিব এমন ইচ্ছা নাই। তাঁহাদের যাহা কৰ্ত্তব্য বোধ হয়, অবশ্য করিবেন। উপসংহারে, রবীন্দ্র বাবকেও একটা কথা বলিবার আছে। সত্যের প্রতি কাহারও অত্যুক্তি নাই, কিন্তু সত্যের ভানের উপর আমার বড় ঘণো আছে। যাহারা নেড়ী বৈরাগীর হরিনামের মত মখে সত্য সত্য বলে. কিন্তু হৃদয় অসত্যে পরিপণ তাহাদের সত্যানরাগকেই সত্যের ভান এ জিনিস এ দেশে বড় ছিল না,এখন বিলাত হইতে ইংরেজির সঙ্গে বড় বেশী পরিমাণে আমদানি হইয়াছে। সামগ্রটা বড় কদর্য। মৌখিক প্ৰILie direct” সবন্ধে তাঁহাদের যত আপত্তি--কাৰ্য্যতঃ সম»দ্রপ্রমাণ মহাপাপেও আপত্তি নাই। সে কালের হিন্দর এই দোষ ছিল বটে ষে. Lie direct সবন্ধে তত আপত্তি ছিল না, কিন্তু ততটা কপটতা ছিল না। দইেটিই মহাপাপ এখন ইংরেজি শিক্ষার গেেণ হিন্দ: পাপটা হইতে অনেক অংশে উদ্ধার পাওয়া যাইতেছে, কিন্তু ইংরেজি পাপটা বড় বাড়িয়া উঠিতেছে। মৌখিক অসত্যের অপেক্ষা অস্তরিক অসত্য যে গতের পাপ. রবীন্দ্র বাব বোধ হয় তাহা স্বীকার কবিবেন। সত্যের মাহাত্ম্য কীৰ্ত্তন করিতে গিয়া কেবল মেখিক সত্যের প্রচার, আন্তরিক সত্যের প্রতি অপেক্ষাকৃত অমনোযোগ. রবীন্দু বাবরে যত্বে এমনটা না ঘটে. এইটকুৈ সাবধান করিয়া দিতেছি। ঘটিয়াছে, , । দেবী চৌধরাগীতে প্রসঙ্গক্রমে ইহা উথাপিত করিয়াছি-১৩০ পষ্ঠা দেখ । ১১৬