পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/১০৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

बाश्कब ब्रष्नाबद्ी সঙ্গে বিবি ও একটি নবকুমার। তাঁহারা মাতার কুটনীর সন্নিধানে আসিয়া কুটনীরমধ্যে নিশাযাপনের প্রার্থনা জানাইয়া কহিলেন, “এ রাত্রে হিন্দ পল্লীমধ্যে কেহ আমাকে স্থান দিল না। এখন আমরা এ বালকটিকে লইয়া আর কোথা যাইব ? ইহার হিম সহ্য হইবে না। আমার সহিত অধিক লোক জন নাই, কুটনীরমধ্যে অনায়াসে স্থান হইবে। আমি তোমাকে যথেস্ট পরিস্কার করিব।” বস্তুতঃ পাঠান বিশেষ প্রয়োজনে ত্বরিতগমনে দিল্লী যাইতেছিলেন; তাঁহার সহিত একমাত্র ভূত্য ছিল। মাতা দরিদ্রও বটে ; সদয় চিত্তও বটে ; ধনলোভেই হউক বা বালকের প্রতি দয়া করিয়াই হউক, পাঠানকে কুটনীরমধ্যে স্থান দিলেন। পাঠান স-সন্ত্রী-সন্তান নিশাযাপনাথ কুটীরের এক ভাগে প্ৰদীপ জবালিয়া শয়ন করিল—দ্বিতীয় ভাগে আমরা শয়ন করিলাম। ঐ সময়ে কাশীধামে অত্যন্ত বালকচোরের ভয় প্রবল হইয়াছিল। আমি তখন ছয় বৎসরের বালিকামাত্র, আমি সকল সমরণ করিয়া বলিতে পারি না। মাতার নিকটে যেরপে যেরপে শনিয়াছি, তাহাই বলিতেছি। নিশীথে প্ৰদীপ জীবলিতেছিল; একজন চোর পর্ণকুটনীরমধ্যে সিাদ দিয়া পাঠানের বালকটি অপহরণ করিয়া যাইতেছিল; আমার তখন নিদ্রাভওগ হইয়াছিল; আমি চোরের কায্য দেখিতে পাইয়াছিলাম। চোর বালক লইয়া যায় দেখিয়া উচ্চৈঃস্বরে চীৎকার করিলাম। আমার চীৎকারে সকলেরই নিদ্রাভওগ হইল। گ পাঠানের সত্ৰী দেখিলেন, বালক শয্যায় নাই। একেবারে আত্তনাদ করিয়া উঠিলেন। চোর তখন বালক লইয়া শয্যাতলে লক্কায়িত হইয়াছিল। পাঠান। তাহার কেশাকর্ষণ করিয়া আনিয়া বালক কাড়িয়া লইলেন। চোর বিস্তর অনানয় বিনয় করাতে আসি দ্বারা কণাচ্ছেদ মাত্র করিয়া বহিস্কৃত করিয়া দিলেন।” এই পৰ্যন্ত লিপি পাঠ করিয়া ওসমান অন্যমনে চিন্তা করিতে করিতে বিমলাকে কহিলেন, “তোমার কখন কি অন্য কোন নাম ছিল না ?” বিমলা কহিলেন, “ছিল, সে যাবনিক নাম বলিয়া পিতা নাম পরিবত্তন করিয়াছেন।” “কি সে নাম ? মাহর ?” বিমলা বিসিমত হইয়া কহিলেন, “আপনি কি প্রকারে জানিলেন ?” ওসমান কহিলেন, “আমিই সেই অপহৃত বালক।” বিমলা বিস্মিত হইলেন। ওসমান পনেকবার পাঠ করিতে লাগিলেন। “পরদিন প্রাতে পাঠান বিদায় কালে মাতাকে কহিলেন, “তোমার কন্যা আমার যে উপকার করিয়াছে, এক্ষণে তাহার প্রত্যুপকার করি, এমত সাধ্য নাই; কিন্তু তোমার যে কিছতে অভিলাষ থাকে আমাকে কহ ; আমি দিল্লী যাইতেছি, তথা হইতে আমি তোমার অভীষ্মট বস্তু পাঠাইয়া দিব। অর্থ চাহ, তাহাও পাঠাইয়া দিব।” মাতা কহিলেন, “আমার ধনে প্রয়োজন নাই। আমি নিজ কায়িক পরিশ্রম দ্বারা সবচ্ছন্দে দিন গজরান করি, তবে যদি বাদশাহের নিকট আপনার প্রতিপত্তি থাকে,-” এই সমস্ত কথা হইতে না হইতে পাঠান কহিলেন, “যথেষ্ট্রট আছে। আমি রাজদরবারে তোমার উপকার করিতে পারি।” মাতা কহিলেন, “তবে এই বালিকার পিতার অন্যসন্ধান করাইয়া আমাকে সংবাদ দিবেন।” পাঠান প্রতিশ্রত হইয়া গেলেন। মাতার হস্তে সবৰ্ণমাদ্রা দিলেন; মাতা তাহা গ্রহণ করিলেন না। পাঠান নিজ প্রতিশ্রুতি অনসারে রাজপরিষদিগকে পিতার অন্যসন্ধানে নিযক্ত করিলেন। কিন্তু অন্যসন্ধান পাওয়া গেল না। ইহার চতুৰ্দশ বৎসর পরে রাজপরিষেরা পিতার সন্ধান পাইয়া পািব্ব-প্রচারিত রাজাজ্ঞানসারে মাতাকে সংবাদলিপি পাঠাইলেন। পিতা দিল্লীতে ছিলেন। শশিশেখর ভট্টাচায্য নাম ত্যাগ করিয়া অভিরাম সবামী নাম ধারণা করিয়াছিলেন। যখন এই সংবাদ আসিল, তখন মাতা সবগারোহণ করিয়াছিলেন। মন্ত্রপতি ব্যতীত যাহার পাণিগ্রহণ হইয়াছে, তাহার যদি সবগারোহণে অধিকার থাকে, তবে মাতা সবগারোহণ করিয়াছেন সন্দেহ নাই। পিতৃসংবাদ পাইলে আর কাশীধামে আমার মন তিস্ঠিল না। সংসার মধ্যে কেবল আমার পিতা বিত্তমান ছিলেন; তিনি যদি দিল্লীতে, তবে আমি আর কাহার জন্য কাশীতে থাকি, এইরাপ চিন্তা করিয়া আমি একাকিনী পিতৃদশনে যাত্ৰা করিলাম। পিতা আমার গমনে প্রথমে রন্ট S O SR