পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/১৩৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

म८शभिर्नान्झनौं আর কিছই কেহ অবগত হইতে পারিলেন না। পরিশেষেYমানসিংহ নিরাশ হইয়া একজন বিশ্ববাসী অনাচরকে গড় মান্দারণে স্থাপন করিয়া এই আদেশ করিলেন যে, “তুমি এইখানে থাকিয়া মত জায়গীরদারের সত্ৰীকন্যার উদ্দেশ করিতে থাক; সন্ধান পাইলে তাহাদিগকে দাগে সন্থাপনা করিয়া আমার নিকট যাইবে, আমি তোমাকে পরস্কৃত করিব, এবং অন্য জায়গীর দিব।” এইরপ সিথর করিয়া মানসিংহ পাটনায় গমনোদ্যোগী হইলেন। মত্যুকালে কতল খাঁর মাখে যাহা শনিয়াছিলেন, তচ্ছবিণে জগৎসিংহের হৃদয়মধ্যে কোন ভাবান্তর জন্মিয়াছিল কি না, তাহা কিছই প্রকাশ পাইল না। জগৎ সিংহ অর্থব্যয় এবং শারীরিক ক্লেশ স্বীকার করিয়াছিলেন বটে, কিন্তু সে যত্ন কেবল পািব্ব সম্বন্ধের সমাতিজনিত, কি যে যে অপরাপর কারণে মানসিংহ প্রভৃতি সেইরাপ যত্ন প্রকাশ করিয়াছিলেন, সেই সেই কারণসম্পভূত, কি পািনঃসঞ্চারিত প্রেমান রোধে উৎপন্ন, তাহা কেহই বঝিতে পারে নাই। যত্ন যে কারণেই হইয়া থাকুক, বিফল হইল। মানসিংহের সেনাসকল শিবির ভঙ্গ করিতে লাগিল, পরদিন প্ৰভাতে “কুচ” করিবে। যাত্রার পািব্ব দিবস অশববলগায় প্ৰাপত লিপি পড়িবার সময় উপনীত হইল। রাজপত্র কৌতহলী হইয়া লিপি খালিয়া পাঠ করিলেন। তাহাতে কেবল এইমাত্র লেখা আছেঃ “যদি ধৰ্ম্মম ভয় থাকে, যদি ব্ৰহ্মশাপের ভয় থাকে, তবে পত্র পাঠমাত্র এই সন্থানে একা আসিবে । ইতি অহং ব্রাহ্মণঃ ।” রাজপত্র লিপি পাঠে চমৎকৃত হইলেন। একবার মনে করিলেন, কোন শত্রর চাতুরীও হইতে পারে, যাওয়া উচিত কি ? রাজপতহীদয়ে ব্ৰহ্মশাপের ভয় ভিন্ন অন্য ভয় প্রবল নহে; সতরাং যাওয়াই স্থির হইল। অতএব নিজ অনচরবগকে আদেশ করিলেন যে, যদি তিনি সৈন্যযাত্রার মধ্যে না আসিতে পারেন, তবে তাহারা তাঁহার প্রতীক্ষায় থাকিবে না; সৈন্য অগ্রগামী হয়, হানি নাই, পশ্চাৎ বদ্ধমানে কি রাজমহলে তিনি মিলিত হইতে পারিবেন। এইরপ আদেশ করিয়া জগৎ সিংহ একাকী শাল-বন অভিমখে যাত্রা করিলেন। পািব্ব কথিত ভগনাটালিকা-দাবারে উপস্থিত হইয়া রাজপত্র পকবাবৎ শালবক্ষে অশব বন্ধন করিলেন। ইতস্ততঃ দেখিলেন, কেহ কোথাও নাই। পরে অট্টালিকামধ্যে প্রবেশ করিলেন। দেখেন, প্রাঙ্গণে পৰ্ব্বব্যাবৎ এক পাশেব সমাধিমন্দির, এক পাশে বা চিতাসজা রহিয়াছে; চিতাকাঠের উপর একজন ব্রাহ্মণ অধোমখে বসিয়া রোদন করিতেছেন। রাজকুমার জিজ্ঞাসা করিলেন, “মহাশয়, আপনি আমাকে এখানে আসিতে আজ্ঞা করিয়াছেন ? ব্ৰাহ্মণ মখ তুলিলেন; রাজপত্র জিজ্ঞাসাবাদ করিয়া জানিলেন, ইনি অভিরাম সবামী। রাজপত্রের মনে একেবারে বিস্ময়, কৌত হল, আহাদ, এই তিনেরই আবিভােব হইল; প্ৰণাম করিয়া ব্যগ্রতার সহিত জিজ্ঞাসা করিলেন, “দশন জন্য যে কত উদ্যোগ পাইয়াছি, কি বলিব। এখানে অবস্থিতি কেন ? অভিরাম স্বামী চক্ষঃ মাছিয়া কহিলেন, “আপাততঃ এইখানেই বাস!” স্বামীর উত্তর শনিতে না শনিতেই রাজপত্র প্রশেনর উপর প্রশন করিতে লাগিলেন। “আমাকে সমরণ করিয়াছেন কি জন্য ? রোদিনই বা কেন ?” অভিরাম সবামী কহিলেন, “যে কারণে রোদন করিতেছি, সেই কারণেই তোমাকে ডাকিয়াছি; তিলোত্তমার মাতুত্যুকাল উপস্থিত।” ধীরে ধীরে, মদ, মদ, তিল তিল করিয়া, যোদ্ধপতি সেইখানে ভূতলে বসিয়া পড়িলেন। তখন আদ্যোপােন্ত সকল কথা একে একে মনে পড়িতে লাগিল; একে একে অন্তঃকরণমধ্যে দারণ তীক্ষা ছরিকাঘাত হইতে লাগিল। দেবালয়ে প্রথম সন্দশন, শৈলেশ্ববর-সাক্ষাৎ প্রতিজ্ঞা, কক্ষমধ্যে প্রথম পরিচয়ে উভয়ের প্রেমোখিত অশ্রািজল, সেই কাল-রাত্রির ঘটনা, তিলোত্তমার মচ্ছাবস্থার মািখ, যবনাগারে তিলোত্তমার পীড়ন, কারাগারমধ্যে নিজ নিন্দয় ব্যবহার, পরে এখনকার এই বনবাসে মাতু, এই সকল একে একে রাজকুমারের হৃদয়ে আসিয়া ঝটিকা-প্রঘাতবৎ লাগিতে লাগিল। পৰবািহতাশন শতগণে প্রচন্ড জবালার সহিত জীবলিয়া উঠিল। রাজপত্র অনেকক্ষণ মৌন হইয়া বসিয়া রহিলেন। অভিরাম স্বামী বলিতে লাগিলেন, S G)S.