পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/১৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब७दकश ज्ञष्न्बव्ी পুলকুণ্ডলা হাত ধরিয়া নবকুমারকে উঠাইলেন—মদ সাবরে কহিলেন, “তুমি ত জিজ্ঞাসা - ट्रे ! যখন এই কথা হইল, তখন উভয়ে একেবারে জলের ধারে আসিয়া দাঁড়াইয়াছিলেন; কপালকুন্ডলা অগ্রে, নদীর দিকে পশ্চাৎ করিয়া ছিলেন, তাঁহার পশ্চাতে এক পদ পরেই জল। এখন জলোচ্ছবাস আরম্ভ হইয়াছিল, কপালকুন্ডলা একটা আড়রির উপর দাঁড়াইয়া ছিলেন। তিনি উত্তর করিলেন, “তুমি ত জিজ্ঞাসা কর নাই!” নবকুমার ক্ষিতের ন্যায় কহিলেন, “চৈতন্য হারাইয়াছি, কি জিজ্ঞাসা করিব-বল—মণময়ি! বল—বল—বল—আমায় রাখা।——গহে চল ।” কপালকুন্ডলা কহিলেন, “যাহা জিজ্ঞাসা করিলে, বলিব। আজি যাহাকে দেখিয়াছ-সে পদ্মাবতী। আমি অবিশবাসিনী নাহি। এ কথা স্বরপ বলিলাম। কিন্তু আর আমি গ'হে যাইব না। ভবানীর চরণে দেহ বিসর্জন করিতে আসিয়াছি-নিশ্চিত তাহা করিব। তুমি গাহে যাও। আমি মরিব । আমার জন্য বোদন করিও না।” “না—মন্ময়ি!—না!——” এই রােপ উচ্চ শব্দ করিয়া নবকুমার কপালকুণডলাকে হৃদয়ে ধারণ করিতে বাহ প্রসারণ করিলেন। কপালকুন্ডলাকে আর পাইলেন না। চৈত্ৰবায়তাড়িত এক বিশাল তরঙ্গ আসিয়া, তীরে যথায় কপালকুণডলা দাঁড়াইয়া, তথায় তাটাধোভাগে প্ৰহত হইল ; অমনি তটমত্তিকাখন্ড কপালকুণডালাসাহিত ঘোর রবে নদীপ্রবাহ মধ্যে ভগন হইয়া পড়িল । নবকুমার তীরভঙ্গের শব্দ শনিলেন, কপালকুণডালা অন্তহিত হইল দেখিলেন। আমনি তৎপশ্চাৎ লক্ষফ দিয়া জলে পড়িলেন। নবকুমার সন্তরণে নিতান্ত অক্ষম ছিলেন না। কিছফক্ষণ সাঁতার দিয়া কপালকুণডলার অন্বেষণ করিতে লাগিলেন। তাঁহাকে পাইলেন না, তিনিও উঠিলেন না। সেই অনন্ত গঙ্গাপ্রবাহমধ্যে, বসন্তবায়বিক্ষিপত বীচিমালায় আন্দোলিত হইতে হইতে কপালকন্ডলা ও নবকুমার কোথায় গেল ?