পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/১৯৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

. अनाविनी ম। অসখি কেন সখি-তিনি আমার স্বামী। তিনি ভিন্ন অন্য কেহ কখন আমার স্বামী হইবে না। ম। কিন্তু এ পয্যন্ত ত তিনি সবামী হয়েন নাই। রাগ করিও না। সখি ! তোমাকে ভগিনীর ন্যায়। ভালবাসি ; এই জন্য বলিতেছি। মণিালিনী অধোবদনে রহিলেন। ক্ষণেক পরে চক্ষর জল মছিলেন। কহিলেন, “মণিমালিনী ! এ বিদেশে আমার আত্মীয় কেহ নাই। আমাকে ভাল কথা বলে, এমন কেহ নাই । যাহারা আমাকে ভালবাসিত, তাহাদিগের সহিত যে আর কখনও সাক্ষাৎ হইবে, সে ভরসাও করি না। কেবলমাত্ৰ তুমি আমার সখী—তুমি আমাকে ভাল না বাসিালে কে আর ভালবাসিবে ?” ম। আমি তোমাকে ভালবাসিব, বাসিয়াও থাকি, কিন্তু যখন ঐ কথাটি মনে পড়ে, তখন মনে করি।-- মণিালিনী পানশাচ নীরবে রোদন করিলেন। কহিলেন, “”সখি, তোমার মাখে। এ কথা আমার সহ্য হয় না। যদি তুমি আমার নিকটে শপথ করা যে, যাহা বলিব, তাহা এ সংসারের কাহারও নিকটে ব্যক্ত করিবে না, তবে তোমার নিকট সকল কথা প্রকাশ করিয়া বলিতে পারি। তাহা হইলে তুমি আমাকে ভালবাসিবে।” ম। আমি শপথ করিতেছি। ম। তোমার চুলে দেবতার ফল আছে। তাহT ছয়ে শপথ কর । মণিমালিনী তাই করিলেন। তখন মণিালিনী মণিমালিনীর কাণে যাহা কহিলেন, তাহার এক্ষণে বিস্তারিত ব্যাখ্যার প্রয়োজন নাই। শ্রবণে মণিমালিনী পরম প্রীতি প্রকাশ করিলেন। গোপন কথা সমাপত হইল । মণিমালিনী কহিলেন, “তাহার পর, মাধবাচায্যের সঙ্গে তুমি কি প্রকারে তা সিলে ? সে বত্তান্ত বলিতেছিলে—বল।” মণিালিনী কহিলেন, “আমি হেমচন্দ্রের আঙ্গটি দেখিয়া তাঁকে দেখিবার ভরসায় বাগানে আসিলে দন্তী কহিল যে, রাজপত্র নৌকায় আছেন, নৌকা তীরে লাগিয়া রহি যাছে। আমি অনেক দিন রাজপত্রকে দেখি নাই। বড় ব্যগ্র হইয়াছিলাম, তাই বিবেচনাশন্য হইলাম। তীরে আসিয়া দেখিলাম যে, যথার্থই একখানি নৌকা লাগিয়া রহিয়াছে। তাহার বাহিরে এক জন পর।যা দাঁড়াইয়া রহিয়াছে, মনে করিলাম যে, রাজপত্র দাঁড়াইয়া রহিয়াছেন। আমি নৌকার নিকট আসিলাম । নৌকার উপর যিনি দাঁড়াইয়া ছিলেন, তিনি আমার হাত ধরিয়া নৌকায় উঠাইলেন। আমনি নাবিকেরা নৌকা খলিয়া দিল। কিন্তু আমি সপশেই বঝিলাম যে, এ ব্যক্তি হেমচন্দ্র নহে ।” মণি। আর অমনি তুমি চীৎকার করিলে ? ম। চীৎকার করি নাই। একবার ইচ্ছা করিয়াছিল বটে, কিন্তু চীৎকার আসিল না। মণি । আমি হইলে জলে ঝাঁপ দিতাম । ম। হেমচন্দ্ৰকে না দেখিয়া কেন মরিব ? মণি । তার পর কি হইল ? ম। প্রথমেই সে ব্যক্তি আমাকে “মা”। বলিয়া বলিল, “আমি তোমাকে মাতৃ-সম্বোধন করিতেছি—আমি তোমার পত্র, কোন আশঙ্কা করিও না। আমার নাম মাধবাচায্য, আমি হেমচন্দ্রের গাের । কেবল হেমচন্দ্রের গর, এমত নাহি ; ভারতবর্ষের রাজগণুের মধ্যে অনেকের সহিত আমার সেই সৰ্ম্মবন্ধ। আমি এখন কোন দৈবকায্যে নিযক্ত আছি, তাহাতে হেমচন্দ্র আমার প্রধান সহায় ; তুমি তাহাব প্রধান বিঘা।” আমি বলিলাম, “আমি বিঘা ?” মাধবাচায্য কহিলেন, “তুমিই বিঘা। যবনদিগের জয় করা, হিন্দ রাজ্যের পািনরদ্ধার করা, সীসাধ্য কৰ্ম্ম নহে; হেমচন্দ্ৰ ব্যতীত কাহারও সাধ্য নহে; হেমচন্দ্রও অনন্যমানা না হইলে তাঁর দবারাও এ কাজ সিন্ধ হইবে না। যত দিন তোমার সাক্ষাৎলাভ সালভ থাকিবে, তত দিন হেমচন্দ্রের তুমি ভিন্ন অন্য ব্রত নাই—সিতরাং যবন মারে কে ?” আমি কহিলাম, “বঝিলাম, প্রথমে আমাকে না মারিলে যবন মারা হইবে না। আপনার শিষ্য কি আপনার দবারা আওগটি পাঠাইয়া দিয়া আমাকে মারিতে আজ্ঞা করিয়াছেন ?” মণি। এত কথা বড়োকে বলিলে কি প্রকারে ? SN లి S O