পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বণ্ডিকাল্পচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় নতন আলোকে উদ্ভাসিত হইয়া নািতন পথে অগ্রসর হইতে প্ৰতিজ্ঞাবদ্ধ হইলেন। রবীন্দ্রনাথ ळ्निाँ२[शाÇछ्न् : “তখন বঙ্গসাহিত্যের যেমন প্ৰাতঃসন্ধ্যা উপস্থিত আমাদের সেইরােপ বয়ঃসন্ধিকাল। বঙ্কিম বঙ্গসাহিত্যে প্রভাতের সায্যোদয় বিকাশ করিলেন, আমাদের হৃদপদ্ম সেই প্রথম উদ্ঘাটিত হইল। “পব্বে কি ছিল এবং পরে কি পাইলাম তাহাদই কালের সন্ধিস্থলে দাঁড়াইয়া আমরা এক মহত্তে অনানুভব করিতে পারিলাম। কোথায় গেল। সেই অন্ধকার, সেই একাকার, সেই সাপিত, কোথায় গেল সেই বিষয়বস্তু, সেই গোলেবকাওলি, সেই বালক ভুলানো কথা—কোথা হইতে আসিল এত আলো, এত আশা, এত সঙ্গীত, এত বৈচিত্ৰ্য। বঙ্গদর্শন যেন তখন আষাঢ়ের প্রথম বিষার মত ‘সমাগতো রাজবদান্নতধবনিঃ”। এবং মনুষলধারে ভাববষণে বঙ্গসাহিত্যের পববাহিনী পশ্চিমবাহিনী সমস্ত নদী নিঝরিণী অকস্মাৎ পরিপণতা প্ৰাপত হইয়া যৌবনের আসন্নবেগে ধাবিত হইতে লাগিল। কত কাব্য নাটক উপন্যাস কত প্ৰবন্ধ কত সমালোচনা কত মাসিক পত্ৰ কত সংবাদপত্র বঙ্গভূমিকে জাগ্ৰত প্ৰভাত কলরবে মােখরিত করিয়া তুলিল। বঙ্গভাষা সহসা বাল্যকাল হইতে যৌবনে উপনীত হইল।” (বঙ্কিমপ্রসঙ্গ-(বঙ্কিমচন্দ্ৰ', পঃ ২-৩) বঙিকমচন্দ্র ছিলেন সব্যসাচী । বিভিন্ন বিষয়ে লিখিতে বিভিন্ন লেখককে তিনি উৎসাহিত করিতেন। তাঁহাদের রচনা সংশোধনান্তর গৌড়জনের নিকট পরিবেশনোপযোগী করিয়া পত্ৰসন্থ করিতেন। পরবত্তীকালের বহর নামজাদা লেখকের রচনাও প্রথমে তাঁহাকে আমল পরিবত্তান বা সংশোধন করিয়া প্রকাশ করিতে হইত। ইহার ফলে সাহিত্যের মান উন্নত হইল, ভাষাও সঠি রােপ পরিগ্রহ করিল। বঙ্কিম সম্বয়ং কিন্তু জ্ঞান বিজ্ঞান ইতিহাস প্রভৃতি নানা বিষয়ে রচনা সর করিয়া একটি আদশ স্থাপন করিলেন ‘বঙ্গদর্শনের মাধ্যমে। রসসাহিত্য ও মনন সাহিত্য দই-ই তাঁহার মধর লেখনী সপশে রসপািলত হইয়া উঠিল। এমনটি পদ্ব্বে কখন হয় নাই। তিনি এক হস্তে সাহিত্যে সন্দর রােপ ও মান প্রবতন করিতে লাগিলেন, অন্য হস্তে কঠোর মুলুল্ল দ্বারা সাহিত্যের আবর্জনা সাফ করতে লাগিয়া গেলেন। রবীন্দ্রনাথের ভাষায়, . (ट् अ३ “সব্যসাচী বণ্ডিকম এক হসন্ত নিবারণ কায্যে নিযক্ত রাখিয়াছিলেন। একদিকে অগিন জবালাইয়া রাখিতেছিলেন। আর একদিকে ধর্ম এবং ভস্মরাশি দােমর করিবার ভার নিজেই লইয়াছিলেন। রচনা এবং সমালোচনা এই উভয় কায্যের ভার বণ্ডিকম একাকী গ্রহণ করাতেই বঙগাসাহিত্য এত সত্বর এমন দ্রুত পরিণতি লাভ করিতে সক্ষম হইয়াছিল। // ...বঙ্কিম সাহিত্যে কৰ্ম্মযোগী ছিলেন। তাঁহার প্রতিভা আপনাতে আপনি স্থিরভাবে পৰ্য্যাপ্তত ঈনুল না। সাহিত্যের যেখানে যাহা কিছ অভাব ছিল সৰ্ব্বত্রই তিনি আপনার বিপােল বল এবং আনন্দ লইয়া ধাবমান হইতেন। কি কাব্য কি বিজ্ঞান কি ইতিহাস কি ধৰ্ম্মমগ্রন্থ যেখানে যখনই তাঁহাকে আবশ্যক হইত। সেখানে তখনই তিনি সম্পপণ্য প্রস্তুত হইয়া দেখা দিতেন। নবীন বঙ্গসাহিত্যের মধ্যে সকল বিষয়েই আদশ সস্থাপন করিয়া যাওয়া তাঁহার উদ্দেশ্য ছিল। বিপন্ন বঙ্গভাষা যেখানেই তাঁহাকে আৰ্ত্ত স্বরে আহবান করিয়াছে সেখানেই তিনি প্রসন্ন চতুভূজ মাত্তিতে দেখা দিয়াছেন।” (বঙ্কিমপ্রসঙ্গ পঃ ৮-১০) “বঙ্গদর্শনে’ বণ্ডিকমচন্দ্রের লঘ ব্যঙ্গাত্মক ও গারতের ভাবব্যঞ্জক প্রবন্ধ-সাহিত্য, সমালোচনসাহিত্য এবং উপন্যাসাদি ক্ৰমশঃ বাহির হইতে থাকে। তখনকার বাঙালী সমাজে দাইটি বহত্তম সমস্যা-বিধবাবিবাহ এবং বহবিবাহ। ইহা লইয়াই বঙ্কিমচন্দ্র উপন্যাস রচনা করিতে বসিলেন। বাঙালীর দৈনন্দিন জীবন ও সমস্যা লইয়া যে সখপাঠ্য উপন্যাস রচনা করা যায় তাহার পথ দেখাইলেন তিনি। প্রথম সংখ্যা হইতেই ‘বঙ্গদর্শনে’। তাঁহার বিষবক্ষ, ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত হইতে থাকে। ইহাতে পার পর বিষবক্ষ, ইন্দিরা, যােগালাঙ্গরীয়, চন্দ্রশেখর, রাধারাণী বাহির হইল। সঞ্জীবচন্দ্রের সম্পাদনাকালে প্রকাশিত হয়—রজনী, কৃষ্ণকান্তের উইল, রাজসিংহ ও আনন্দমঠ। এগলি অবিলম্বেব পািস্তকাকারে প্রকাশিত হয়। বঙ্গদৃশ্যনে লোকরহস্য ও বিজ্ঞানবিষয়ক বহ রচনা বাহির হইতে থাকে। এগলিও তিনি ‘কমলাকান্ত’, ‘লোকরহস্য” ও “বিজ্ঞােনরহস্য” নাম দিয়া পােস্তকাকারে মাদ্রিত ও প্রকাশিত করেন। সমাজের আভ্যন্তরীণ দোষত্ৰটি, গলদ ও অহমিকা দরে করিয়া ইহাকে শচিশদ্ধ করিবার উদ্দেশ্যেই তিনি লেখনী ধারণ করিয়াছিলেন। রবীন্দ্রনাথ বলেন : “তিনি যে কেবল অভয় দিতেন, সান্ত্বনা দিতেন, অভাব পণ করিতেন, তাহা নহে, তিনি দপহারীও Տ Ե*