বঙিকম রচনাবলী এই বলিয়া মহিষী রাজার অধৌত হস্ত ধারণ করিয়া খিড়কীদুৰ্বারপথে সাবর্ণগ্রাম যাত্রা করিলেন। সেই রাজকুলকলগুক, অসমৰ্থ রাজার সঙ্গে গৌড়রাজ্যের রাজলক্ষয়ীও যাত্ৰা করিলেন। ষোড়শ সহচর লইয়া মকটাকার বখতিয়ার খিলিজি গৌড়েশ্বরের রাজপরী অধিকার করিল। ষক্ৰিট বৎসর পরে যবন-ইতিহাসবেত্তা মিনহাজউদ্দীন এইরােপ লিখিয়াছিলেন। ইহার কতদর সত্য, কতদার মিথ্যা, তাহা কে জানে ? যখন মনষ্যের লিখিত চিত্রে সিংহ পরাজিত, মনষ্যে সিংহের অপমানকৰ্ত্তা স্বরােপ চিত্রিত হইয়াছিল, তখন সিংহের হস্তে চিত্রফলক দিলে কিরােপ চিত্র লিখিত হইত ? মনষ্যে মষিকতুল্য প্রতীয়মান হইত সন্দেহ নাই। মন্দভাগিনী বঙ্গভূমি সহজেই দকবলা, আবার তাহাতে শত্ৰহস্তে চিত্রফলক ! পঞ্চম পরিচ্ছেদ ঃ জাল ছিড়িল গৌড়েশবরপরে অধিস্ঠিত হইয়াই বখতিয়ার খিলিজি ধৰ্ম্মমর্বাধিকারের নিকট দতে প্রেরণ করিলেন। ধৰ্ম্মমর্বাধিকারের সহিত সাক্ষাতের অভিলাষ জানাইলেন । তাঁহার সহিত যবনের সন্ধিনিবন্ধন হইয়াছিল, তাহার ফলোৎপাদনের সময় উপসিথত ! পশপতি ইস্টদেবীকে প্ৰণাম করিয়া, কুপিতা মনোরমার নিকট বিদায় লইয়া, কদাচিৎ উল্লসিত —কদাচিৎ শঙ্কিত চিত্তে যবনাসমীপে উপস্থিত হইলেন। বখতিয়ার খিলিজি গাত্ৰোখান করিয়া সাদরে তাঁহার অভিবাদন করিলেন এবং কুশল জিজ্ঞাসা করিলেন। পাশপতি রাজভৃত্যবগের রক্তনদীতে চরণ প্রক্ষালন করিয়া আসিয়াছেন, সহসা কোন উত্তর দিতে পারিলেন না। বখতিয়ার খিলিজি তাঁহার চিত্তের ভাব বঝিতে পারিয়া কহিলেন, “পণ্ডিতবর!!! রাজসিংহাসন আরোহণের পথ কুসমাবত নহে। এ পথে চলিতে গেলে, বন্ধবেগের অস্থিমন্ড সব্বদা পদে বিদ্ধ হয়।” পশতুপতি কহিলেন, “সত্য। কিন্তু যাহারা বিরোধী, তাহাদিগেরই বধ আবশ্যক। ইহারা নিবিবরোধী ।” বখতিযার কহিলেন, “আপনি কি শোণিতপ্রবাহ দেখিয়া, নিজ অঙ্গীকার সমরণে অসখী হইতেছেন ?” পশপতি কহিলেন, “যাহা স্বীকার করিয়াছি, তাহা অবশ্য করিব। মহাশয়ও যে তদ্রপ করিবেন, তাহাতে আমার কোন সংশয় নাই । বখ। কিছমাত্ৰ সংশয় নাই। কেবলমাত্র আমাদিগের এক যােষ্ট্রঞা আছে। প। আজ্ঞা করবেন। ব। কুতবে উদ্দীন গৌড়-শাসনভার আপনার প্রতি আপণ করিলেন। আজ হইতে আপনি বঙ্গে রাজপ্রতিনিধি হইলেন। কিন্তু যবন-সম্রাটের সঙ্কলপ। এই যে, ইসলামধৰ্ম্মাবলম্বী ব্যতীত နှီး তাঁহার রাজকায্যে সংলিপ্তত হইতে পারিবে না। আপনাকে ইসলামধৰ্ম্ম অবলম্বন করিতে পশপতির মােখ শকাইল। তিনি কহিলেন, “সন্ধির সময়ে এরােপ কোন কথা হয় নাই।” ব। যদি না হইয়া থাকে, তবে সেটা ভ্ৰান্তিমাত্র । আর এ কথা উত্থাপিত না হইলেও আপনার ন্যায়। বদ্ধিমান ব্যক্তি দবারা অনায়াসেই অনমিত হইয়া থাকিবে। কেন না, এমন কখনও সম্পভাবে না যে, মসলমানেরা বাঙ্গালা জয় করিয়াই আবার হিন্দকে রাজ্য দিবে। প। আমি ৰদ্ধিমান বলিয়া আপনার নিকট পরিচিত হইতে পারিলাম না। ব। না বঝিয়া থাকেন, এখন বঝিলেন ; আপনি যবনধৰ্ম্মম অবলম্বনে স্থির সঙ্কলপ হাউন। প। (সদপে) আমি সিথরস ওকলাপ হইয়াছি যে, যবন-সম্রাটের সাম্রাজ্যের জন্যও সনাতন ধৰ্ম্মম ছাড়িয়া নরকগামী হইব না। ব। ইহা আপনার ভ্রম। যাহাকে সনাতন ধৰ্ম্মম বলিতেছেন, সে ভূতের পজা মাত্র। কোরাণউক্ত ধৰ্ম্মই সত্য ধৰ্ম্ম। মহম্মদ ভজিয়া ইহকাল পরকালের মণ্ডগলসাধন করবেন। পশপতি যবনের শঠতা বঝিলেন। তাহার অভিপ্রায় এই মাত্র যে, কাৰ্য্যসিদ্ধি করিয়া নিবন্ধ সন্ধি ছলক্ৰমে ভঙ্গ করিবে। আরও বঝিলেন, ছলক্রমে না পারিলে, বলক্লমে কাঁরবে। অতএব কপিটের সহিত কাপট্য অবলম্বন না করিয়া দপ করিয়া ভাল করেন নাই। তিনি ক্ষণেক চিন্তা করিয়া কহিলেন, “যে আজ্ঞা। আমি আজ্ঞানবেত্তীর্ণ হইব।” R88
