পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/২৫১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙিকম রচনাবলী নামে মিছা কলঙক রটাইলাম। পিতা তাহাকে বিনাদোষে তাড়াইয়া দিলেন। রাক্ষসী-রাক্ষসী আমাদের ছেড়ে গেল। হে। তবে তুমি তাহাকে গালি দিতেছ। কেন ? ব্রা। কেন ?—কেন ? গালি-গালি দিই? মণালিনী আমাকে ফিরিয়া দেখিত না—আমি —-আমি তাহাকে দেখিয়া জীবন-জীবন ধারণ করিতাম। সে চলিয়া আসিল, সেই--সেই অবধি আমার সর্বস্ব ত্যাগ, তাহার জন্য কোন দেশে——কোন দেশে না গিয়াছি—কোথায় পিশাচীর সন্ধান না করিয়াছি ? গিরিজায়া-ভিখারীর মোয়ে-—তার আয়ি বলিযা দিল-নবদ্বীপে আসিয়াছে—নবদ্বীপে আসিলাম, সন্ধান নাই। যবন—যবন-হস্তে মরিলাম, রাক্ষসীর জন্য মরিলাম—দেখা হইলে বলিও—আমার পাপের ফল ফলিল । আর ব্যোমকেশের কথা সরিল না। সে পরিশ্রমে একেবারে নিজীবি হইযা পড়িল । নিববৰ্ণাণোন্মািখ দীপ নিবিল " ক্ষণপাবে বিকট মনুখভঙ্গী করিয়া ব্যোমকেশ প্রাণত্যাগ করিল। হেমচন্দ্র আর দাঁড়াইলেন না। আর যবন বধ করিলেন না- কোন মতে পথ করিয়া গাহাভিমখে চলিলেন। অস্টম পরিচ্ছেদ ঃ মন্ণালিনীর সখ কি ? যেখানে হেমচন্দ্র তাঁহাকে সোপানপ্রস্তরাঘাতে ব্যথিত করিয়া রাখিযা গিয়াছিলেন।---মণিালিনী এখনও সেইখানে। পথিবীতে যাইবার আর সস্থান ছিল না--সৰ্ববত্র সমান হইয়াছিল। নিশা প্রভাত হইল, গিরিজায়া যত কিছ: বলিলেন—মণালিনী কোন উত্তর দিলেন না, অধোবদনে বসিয়া রহিলেন। সনানাহারের সময় উপস্থিত হইল-গিরিজায়া তাঁহাকে জলে নামাইয়া সনান করাইল । স্নান করিষা মন্ণালিনী আদ্র বসনে সেই সস্থানে বসিয়া রহিলেন। গিবিজযা স্বয়ং ক্ষ ধাতুরা হইল—কিন্তু গিরিজায়া মণিালিনীকে উঠাইতে পারিল না--সাহস করিয়া বার বার বলিতেও পারিল না। সতরাং নিকটস্থ বন হইতে কিঞিং ফলমল সংগ্ৰহ করিয়া ভোজনজনা ম,ণালিনীকে দিল। মণিালিনী তাহা সপশ করিলেন মাত্র। প্রসাদ গিরিজায়৷ ভোজন করিলক্ষধার অনবোধে মািণালিনীকে ত্যাগ করিল না। এইরনুপে পৰ্ব্বাচলের সাহায্য মধ্যাকাশে, মধ্যাকাশের সৰ্য্যে পশ্চিমে গেলেন। সন্ধ্যা হইল। গিরিজায়া দেখিলেন যে, তখন ও মণিালিনী গহে প্রত্যাগমন করিবার লক্ষণ প্রকাশ করিতেছেন না। গিরিজায়া বিশেষ চ৭8লা হইলেন। পরবরাত্রে জাগরণ গিয়াছে—-এ রাত্রেও জাগরণের আকার। গিরিজায়া কিছ: বলিল না—বক্ষপল্লব সংগ্ৰহ করিষা সোপানোপরি আপনি শয্যা রচনা করিল। মণিালিনী তাহার অভিপ্রায় বঝিয়া কহিলেন, “তুমি ঘরে গিয়া শোও।” গিরিজায়া মণিালিনীর কথা শনিয়া আনন্দিত হইল। বলিল, “একত্র যাইব ।” মণিালিনী বলিলেন, “আমি যাইতেছি।” গি। আমি ততক্ষণ অপেক্ষা করিব। ভিখারিণী দাই দন্ড পাতা পাতিয়া শাইলে ক্ষতি কি ? কিন্তু সাহস পাই ত বলি—রাজপত্রের সহিত এ জন্মের মত সম্পবিন্ধ ঘচিল— তবে আর কাত্তিকের হিমে আমরা কম্পট পাই কেন ? ম। গিরিজায়া—হেমচন্দ্রের সহিত এ জন্মে। আমার সম্মবন্ধ ঘাঁচবে না। আমি কালিও হেমচন্দের দাসী ছিলাম—-আজিও তাঁহার দাসী । গিরিজায়ার বড় রাগ হইল-সে উঠিয়া বসিল। বলিল, “কি ঠাকুরাণী ! তুমি এখনও বল —তুমি সেই পাষন্ডের দাসী! তুমি যদি তাঁহার দাসী-—তবে আমি চলিলাম—আমার এখানে আর প্রয়োজন নাই ।” ম। গিরিজায়া—যদি হেমচন্দ্ৰ তোমাকে পীড়ন করিয়া থাকেন, তুমি স্থানান্তরে তাঁর নিন্দা করিও । হেমচন্দ্ৰ আমার প্রতি কোন অত্যাচার করেন নাই – আমি কেন তাঁহার নিন্দা সহিব ? তিনি রাজপত্ৰ—আমার স্বামী; তাঁহাকে পাযণািড় বলিও না। গিরিজায়া আরও রাগ করিল। বহযত্নরচিত পণশয্যা ছিন্ন ভিন্ন করিয়া ফেলিয়া দিতে লাগিল। কহিল, “পাষণড বলিব না ?—একবার বলিব ?” (বলিয়াই কতকগলি শয্যাবিন্যাসের পল্লব সদপো জলে ফেলিয়া দিল) “একবার বলিব ?—দশবার বলিব|” (আবার পল্লব নিক্ষেপ)— R 8 b'