পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙকমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় দেশের এবং দশের কল্যাণ কামনা ও কল্যাণ সাধন বঙ্কিমচন্দ্রের জীবনাদশ । এই আদশে স্থির থাকিয়া তিনি সাহিত্য সন্টি করিয়া গিয়াছেন। তাঁহার ভাষায়, “সাহিত্যও ধৰ্ম্ম ছাড়া নহে। কেন না, সাহিত্য সত্যমলক । যাহা সত্য, তাহা ধৰ্ম্মম। যদি এমন কুসাহিত্য থাকে যে, তাহা অসত্যমলেক ও অধৰ্ম্মময়, তবে তাহার পাঠে দারাত্মা বা বিকৃতরাচি পাঠক ভিন্ন কেহ সখী হয় না। কিন্তু সাহিত্যে যে সত্য০ও ফ্রে, ধৰ্ম্মম , সমস্ত ধৰ্ম্মেমর তাহা এক অংশ মাত্র।. মৃত্যু ত্যাগ করিও না, কিন্তু সাহিত্যকে নিম্পন সোপান করিয়া ধৰ্ম্মের মঞ্চে আরোহণ কর।” (હ, હો, જl.3 sઈ ર) রাষ্ট্ৰ-সংস্থা ও রাষ্ট্ৰীয় চিন্তা : উনবিংশ শতাব্দীর মধ্যভাগ পৰ্যন্ত সরকারী কম্পমীরা রাষ্ট্ৰীয় প্রতিস্ঠানে যোগ দিয়া নানারপ আন্দোলন পরিচালনা করিতে পারিতেন। সিপাহী যন্ধের পর সরকার ক্ৰমশঃ তাঁহাদের এ অধিকার হরণ করেন। তবে ষস্ঠ দশকেও কম্পমীরা রাজনৈতিক প্রতিস্ঠােনাদির সভ্য বা সদস্য হইতে পারিতেন। ইহাতে সরকার বাধা দিতেন না। ঐ সময় কলিকাতায় ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান এসোসিয়েশন বা ‘ভারতবষীয় সভা’ ভারতবাসীর মািখপাত্র সাবরােপ আইনানাগভাবে রাষ্ট্ৰীয় আন্দোলন পরিচালনা করিতেছিলেন। সরকার তখন শাসন ব্যবস্থার সব্ব বিভাগেরই সংস্কার সাধন করিয়া নিজ ক্ষমতা সম্প্রতিষ্ঠিত করিতে প্ৰয়াসী হইলে বিলাতের পালামেণ্টারী 'Opposition’ বা বিরোধীদলের মত এই সভা প্রত্যেকটি বিষয়ের পাণ্ডখানাপাওখ আলোচনা করিয়া দোষত্রটি প্রদর্শন করিতেন এবং সঙ্গে সঙ্গে সংশোধনেরও ইঙ্গিত দিতেন। তখনকার দিনের গণী মানী সরকারী বেসরকারী বহন ব্যক্তি এই সভার সভ্যশ্রেণীভুক্ত হইয়াছিলেন। বঙ্কিমচন্দ্র তখন খলনার ডেপটি ম্যাজিস্ট্রেট ও ডেপটি কলেক্টর। সেখান হইতে ১৮৮৩ খ্রীস্টাব্দে তিনি ভারতবষীয় সভার সভ্যশ্রেণীভুক্ত হন। খলনায় অত্যাচারীদের দমনে বিশেষ তৎপর হইবার পর হইতেই তাঁহার মনে প্রকৃতপক্ষে দেশপ্রীতির উদ্রেক হয়। ভারতবষীয় সভার সঙেগ সরকারের ঘোরতর বিরোধ উপস্থিত হয় ১৮৬৯-৭০ খ্রীস্টাব্দে । তখন উচ্চশিক্ষার সঙেকাচ সাধন করিয়া উদ্বত্ত অর্থ দবারা নিম্পনতন শিক্ষার আয়োজনের কথা - হয়। পরে এজন্য পাথকরাদির প্রবত্তন দবারা অর্থসংগ্রহেরও প্রস্তাব চলে। ভারতবষীয় সভার সদস্য অধিকাংশই জমিদার ও উচ্চশিক্ষাপ্ৰাপত বাঙালীগণ। তাঁহারা একযোগে সরকারী ব্যবস্থার প্রতিবাদ করিতে লাগিলেন। স্যার এডওয়াড গ্রে উচ্চশিক্ষার সপক্ষ ছিলেন। একারণ তাঁহার সময়ে উদ্ধবন্তম কর্তৃপক্ষের প্রস্তাব কাৰ্যকরী হইতে পারে নাই। তাঁহার পরে বঙ্গের ছোটলাট হইয়া আসে জবরদস্ত সিবিলিয়ান স্যার জন্ডজ ক্যামবেল। তাঁহার আমলেই উক্ত বিষয়সমােহ কতকটা কায্যে পরাণিত হয়। বঙিকমচন্দ্র জনসাধারণকে ব্যাপকভাবে প্রাথমিক শিক্ষাদানের পক্ষপাতী ছিলেন। ভারতবষীয় সভার বিরোধী মত পোষণ করিয়া, পর্ক্সেবকার 'filtration theory’ বা উচ্চশিক্ষাপ্রাপতদের দ্বারা ক্ৰমশঃ নিম্পনতন সতরে ও সাধারণ লোকের মধ্যে শিক্ষা প্রসারের সংযোগ—এই মতবাদেরও বিরোধী হইয়াছিলেন। তিনি ‘স্যার এডওয়ার্ড গ্রে ও স্যার জডজ ক্যামবেল” (পরে নাম বদলাইয়া ‘শাসনযন্ত্রের কল”) প্রবন্ধে ইহার সন্দর ব্যাখ্যা করিলেন । তখনকার দিনের বাংলা সংবাদপত্রে সরকার অন্যাসত উচ্চশিক্ষা সঙ্কোচ এবং আয়কর পথকরাদি লইয়া তীব্র সমালোচনা হয়। ইহাকে সরকারের বিরদ্ধে বিদ্বেষ প্রচার বলিয়া বিভিন্ন স্থানের কর্তৃপক্ষ অভিমত প্রকাশ করিলেন। বঙ্কিমচন্দ্রও তখন এইরাপ মত প্রকাশ করিতে ক্ষান্ত হন নাই। ইতিপ ব্বেই তিনি সশাসক এবং সলেখক বলিয়া বাংলার বিদগধ সমাজের শ্রদ্ধা-প্রীতি অজ্ঞজন করিয়াছিলেন। তৎকালীন বাংলা সংবাদপত্র সম্পকে তাঁহার ঐরাপ অভিমত প্রকাশ সে সময়ে কঠোর সমালোচনার হেতু হইয়াছিল। সরকারী কম্পমচারী হইয়াও বঙ্কিমচন্দ্র সাধারণের হিতকামী ছিলেন এবং যে পন্থায় বঙ্গের অধিকাংশ জনসমাজের সকবাবিধ কল্যাণ সাধিত হইতে পারে তাহার সমর্থক ছিলেন। ১৮৭২ এপ্রিল মাসে ‘বঙগদশন” প্রকাশের কাল হইতে তিনি শ্রেণী-সম্প্রদায়-নিবিবশেষে সমগ্র জাতির কল্যাণ কামনায়ই লেখনী ধারণ করিয়াছেন দেখিতে পাই। একদিকে তিনি তাহদের রস পরিবেশন করিতেছেন। অন্যদিকে তাহদের মধ্যে সংগঠনশক্তি জাগ্ৰত করিতে প্ৰয়াসী হইয়াছেন। রাস্ট্রীয় উন্নতিতে বিজ্ঞান সহায়। প্ৰভু ইংরেজ যে বিজ্ঞানের সাহায়ে ভারতবর্ষকে করায়ত্ত &S