পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/২৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

www.\\ মণিালিনী করিয়া তপত ইন্টক সকল শীতল করিলেন, এবং বহকচেটি তন্মধ্য হইতে অস্টভুজার অন্যসন্ধান করিতে লাগিলেন। ইন্টকরাশি সস্থানান্তরিত হইলে তন্মধ্য হইতে দেবীর প্রতিমা আবিস্কৃত হইল। কিন্তু প্ৰতিমার পাদমলে—এ কি ? সভয়ে পিতাপত্রে নিরীক্ষণ করিলেন যে, মনষ্যের মতদেহ রহিয়াছে! তখন উভয়ে মতদেহ উত্তোলন করিয়া দেখিলেন যে, পশপতির দেহ। বিস্ময়সচক বাক্যের পর দরগাদাস কহিলেন, “যে প্রকারেই প্রভুর এ দশা হইয়া থাকুক, ব্রাহ্মণের এবণ8 প্রতিপালিতের কায্য আমাদিগের অবশ্য কত্তব্য । গঙগাতীরে এই দেহ লইয়া আমরা প্রভুর সৎকার করি চল ।” এই বলিয়া দই জনে প্রভুর দেহ বহন করিয়া গঙ্গাতীরে লইয়া গেলেন। তথায় পত্রকে শবরক্ষায় নিযক্ত করিয়া দ গাদাস নগরে কাঠাদি সৎকারেব উপযোগী সামগ্রীর অন্যসন্ধানে গমন করিলেন। এবং যথাসাধ্য সংগন্ধি কাঠ ও অন্যান্য সামগ্রী সংগ্ৰহ করিয়া গঙ্গাতীরে প্রত্যাগমন করিলেন । তখন দ গাদাস পত্রের আনকল্যে যথাশাস্ত্র দাহের পকেবর্গগামী ক্লিয়া সকল সমাপন করিয়া সগন্ধি কাঠে চিন্তা রচনা করিলেন। এবং তদ্যুপরি পাশপতির মতদেহ সন্থাপন করিয়া অগিনপ্রদান করিতে গেলেন। কিন্তু অকস্মাৎ শামশানভূমিতে এ কাহার আবির্ভাব হইল ? ব্রাহ্মণদ্বয় বিসিমতলোচনে দেখিলেন যে, এক মলিনবাসনা, রক্ষকেশী, আলীলায়িতকুন্তলা, ভস্মধালিসংসগে বিবর্ণা, উন্মাদিনী আসিয়া শামশানভূমিতে অবতরণ করিতেছে। রমণী ব্রাহ্মণদিগের নিকটবত্তি নী হইলেন দরগাদাস সভয়চিত্তে জিজ্ঞাসা করিলেন, “আপনি কে ?” রমণী কহিলেন, “তোমরা কাহার সৎকার করিতেছ?” দরগাদাস কহিলেন, “মত ধৰ্ম্মমর্বাধিকার পশপতির।” রমণী কহিলেন, “পশাপতির কি প্রকারে মাতু্য হইল ?” দরগাদাস কহিলেন, “প্রাতে নগরে জনরব শনিয়াছিলাম যে, তিনি যবনিকর্তৃক কারারদ্ধ হইয়া কোন সংযোগে রাত্রিকালে পলায়ন করিয়াছিলেন। আদ্য তাঁহার আটালিকা ভস্মসাৎ হইয়াছে দেখিয়া, ভস্মমধ্য হইতে অস্টভূজার প্রতিমা উদ্ধারমানসে গিয়াছিলাম। তথায় গিয়া প্রভুর মতদেহ পাইলাম।” রমণী কোন উত্তর করিলেন না। গঙ্গাতীরে, সৈ তার উপর উপবেশন করিলেন। বহ ক্ষণ নীরবে থাকিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “তোমরা কে ? দরগাদাস কহিলেন, “আমরা ব্ৰাহ্মণ ; ধৰ্ম্মমর্বাধিকারের অন্নে প্রতিপালিত হইয়াছিলাম। আপনি কে ?” তরণী কহিলেন, “আমি তাঁহার পত্নী।” দরগাদাস কহিলেন, “তাঁহার পত্নী বহনকাল নিরদিন্টা। আপনি কি প্রকারে তাঁহার পত্নী ?” যাবতী কহিলেন, “আমি সেই নিরদিন্দৰেটা কেশবকন্যা। অনািমরণভয়ে পিতা আমাকে এতকােল লক্কায়িত রাখিয়াছিলেন। আমি আজ কালপণে বিধিলিপি পরাইবার জন্য আসিয়াছি।” শনিয়া পিতাপত্রে শিহরিয়া উঠিলেন। তাঁহাদিগকে নিরািত্তর দেখিয়া বিধবা বলিতে লাগিলেন, “এখন সত্ৰীজাতির কৰ্ত্তব্য কাজ করিব । তোমরা উদ্যোগ কর।” দরগাদাস তরণীর অভিপ্রায় বঝিলেন; পত্রের মািখ চাহিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “কি বল ?” পত্র কিছ উত্তর করিল না। দরগাদাস তখন তরণীকে কহিলেন, “মা, তুমি বালিকা—— এ কঠিন কায্যে কেন প্ৰস্তুত হইতেছ?” তরণী ভ্ৰভঙগী করিয়া কহিলেন, “ব্রাহ্মণ হইয়া অধৰ্ম্মেম প্রবত্তি দিতেছ। কেন ?—ইহার উদ্যোগ কর।”. তখন ব্রাহ্মণ আয়োজন জন্য নগরে পনেকবার চলিলেন। গমনকালে বিধবা দােগাদাসকে কহিলেন, “তুমি নগরে যাইতেছ। নগরপ্রান্তে রাজার উপবনবাটিকায় হেমচন্দ্র নামে বিদেশী রাজপত্র বাস করেন। তাঁহাকে বলিও, মনোরমা গঙ্গাতীরে চিন্তারোহণ করিতেছে—তিনি আয়ুষ্কার তাহার সািহত সাক্ষাৎ করিয়া যাউন, তাহার নিকটে ইহলোকে মনােরমার এই মাত্র ভক্ষা ।” ՀG Գ SCA