পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/২৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিষবক্ষ কুন্দ তখন কহিল, “আকাশ থেকে কাল মা আসিয়াছিলেন। তিনি আমাকে ডাকিলেন, “আমার সঙ্গে আয়।” আমার কেমন দািব্ব দিব্ধ হইল, আমি ভয় পাইলাম, মার সঙ্গে গেলাম না। এখন ভাবিতেছি, কেন গেলাম না। এখন আর যদি তিনি আসেন, আমি যাই। তাই ঘন ঘন।।* আকাশপানে চাহিয়া দেখিতেছি।” চাঁপা কহিল, “হাঁ! মরা মানষ নাকি আবার আসিয়া থাকে ?” তখন কুন্দ স্বপন্নবাত্তান্ত সকল বলিল। শনিয়া চাঁপা বিস্মিতা হইয়া কহিল, “সেই আকাশের গায়ে যে পরষ। আর মেয়ে মানষে দেখিয়াছিলে, তাহদের চেন ?” কুন্দ। না; তাহদের আর কখন দেখি নাই। সেই পরিষের মত সন্দর পরিষ যেন কোথাও নাই। এমন রােপ। কখনও দেখি নাই। এদিকে নগেন্দ্র প্রভাতে গাত্ৰোথান করিয়া গ্রামস্থ সকলকে ডাকিয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “এই মত ব্যক্তির কন্যার কি হইবে ? সে কোথায় থাকিবে ? তাহার কে আছে?” ইহাতে সকলেই উত্তর করিল যে, “উহার থাকিবার সােথান নাই, উহার কেহ নাই ।” তখন নগেন্দ্ৰ কহিলেন, “তবে তোমরা কেহ উহাকে গ্ৰহণ করা। উহার বিবাহ দিও। তাহার ব্যয় আমি দিব। আর যতদিন ধ্ৰু ভূমুক্তির বাটত থাকিবে, ততদিন আমি তাহার ভরণপােষণের ব্যয়ের জন্য মাসিক কিছু, O নগেন্দ্ৰ যদি নগদ টাকা ফেলিয়া দিতেন, তাহা হইলে অনেকে তাঁহার কথায় স্বীকৃত হইতে পারিত। পরে নগেন্দ্ৰ চলিয়া গেলে কুন্দকে বিদায় করিয়া দিত, অথবা দাসীবত্তিতে নিযন্ত করিত। কিন্তু নগেন্দ্র সেরাপ মািঢ়তার কায্য করিলেন না। সতরাং নগদ টাকা না দেখিয়া কেহই তাঁহার কথায় বিশদ্বাস করিল না। তখন নগেন্দ্রকে নিরাপায় দেখিয়া একজন বলিল, “শ্যামবাজারে ইহার এক মাসীর বাড়ী আছে। বিনোদ ঘোষ ইহার মেসো। আপনি কলিকাতায় যাইতেছেন, যদি ইহাকে সঙেগ করিয়া লইয়া গিয়া সেইখানে রাখিয়া আসেন, তবেই এই কায়সথকন্যার উপায় হয়, এবং আপনারও স্বজাতির কাজ করা হয়। “ অগত্যা নগেন্দ্র এই কথায় স্বীকৃত হইলেন। এবং কুন্দকে এই কথা বলিবার জন্য তাহাকে ডাকিতে পাঠাইলেন। চাঁপা কুন্দকে সঙেগ করিয়া লইয়া আসিল । আসিতে আসিতে দরি হইতে নগেন্দ্রকে দেখিয়া, কুন্দ অকস্মাৎ সস্তম্ভিতের ন্যায় দাঁড়াইল । তাহার পর আর সরিল না। সে বিস্ময়োৎফদুল্লালোচনে বিমাঢ়ার ন্যায়। নগেন্দ্রের প্রতি চাহিয়া রহিল। চাঁপা কহিল, “ও কি, দাঁড়ালি যে ”” কুন্দ অণ্ডগলিনিন্দোশের দরবারা দেখাইয়া কহিল, “এই সেই ৷” চাঁপা কহিল, “এই কে ?” কুন্দ কহিল, “যাহাকে মা কাল রাত্রে আকাশের গায়ে দেখাইয়াছিলেন।” তখন চাঁপাও বিসিক্ষমতা ও শঙ্কিত হইয়া দাঁড়াইল। বালিকারা অগ্রসর হইতে হইতে সঙ্কুচিতা হইল দেখিয়া, নগেন্দ্র তাহাদিগের নিকট আসিলেন এবং কুন্দকে সকল কথা বঝাইয়া বলিলেন। কুন্দ কোন উত্তর করিতে পারিল না; কেবল বিস্ময়বিসফারিতলোচনে নগেন্দ্রের প্রতি চাহিয়া রহিল। পঞ্চম পরিচ্ছেদ ঃ অনেক প্রকারের কথা অগত্যা নগেন্দ্রনাথ কুন্দকে কলিকাতায় আত্মসমভিব্যাহারে লইয়া আসিলেন। প্রথমে তাহার মেসো বিনোদ ঘোষের অনেক সন্ধান করিলেন। শ্যামবাজারে বিনোদ ঘোষ নামে কাহাকেও পাওয়া গেল না। এক বিনোদ দাস পাওয়া গেল—সে সম্পবন্ধ অস্বীকার করিল। সতরাং কুন্দ নগেন্দ্রের গলায় পড়িল । নগেন্দ্রের এক সহোদরা ভগিনী ছিলেন। তিনি নগেন্দ্রের অনজা। তাঁহার নাম কমলমণি । তাঁহার শব্বশরালয় কলিকাতায়। শ্ৰীশচন্দ্র মিত্র তাঁহার স্বামী। শ্ৰীশ বাব পালন্ডর ফেয়ারলির বাড়ীর মৎস্যাদি। হোেস বড় ভারি।--শ্ৰীশচন্দ্র বড় ধনবান। নগেন্দ্রের সঙ্গে তাঁহার বিশেষ NR V Gt