পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/২৭৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিণ্ডিকম রচনাবলী করিত। এবং অন ক্ষণ নানা প্রকার চীৎকার, হাস্য পরিহাস, কলহ, কুতক, গলপ, পরনিন্দা, বালকের হােড়াহাড়ি, বালিকার রোদন, “জল আন”, “কাপড় দে”, “ভাত রাঁধলে না”, “ছেলে খায় নাই”, “দধ কই" ইত্যাদি শব্দে সংক্ষািবধ সাগরব্যুৎ শবিদত হইত। তাহার পাশে ঠাকুরবাড়ীর পশ্চাতে রন্ধনশালা। সেখানে আরো জাঁক । কোথাও কোন পাচিক ভাতের হাঁড়িতে জব্বাল দিয়া পা গোট করিয়া, প্রতিবাসিনীর সঙ্গে তাঁহার ছেলের বিবাহের ঘটার গলপ করিতেছেন। কোন পাচিকা বা কাঁচা কাঠে ফ দিতে দিতে ধয়ায় বিগলিতাশ্রলোচনা হইয়া, বাড়ীর গোমস্তার নিন্দা করিতেছেন, এবং সে যে টাকা চুরি করিবার মানসেই ভিজা কাঠ কাটাইয়াছে, তদিবষযে বহবিধ প্রমাণ প্রয়োগ করিতেছেন। কোন সন্দরী তপত তৈলে মাছ দিয়া চক্ষ মন্দিয়া, দশনাবলী বিকট করিয়া, মখভঙিগ করিয়া আছেন, কেন না, তপত তৈল ছিটকাইয়া তাঁহার গায়ে লাগিয়াছে, কেহ।। বা স্নানকালে বহতৈলাক্ত, অসংযমিত কেশরাশি চড়ার আকারে সীমান্তদেশে বধিয়া ডালে কাটি দিতেছেন—যেন রাখাল, পাঁচনীহস্তে গোর ঠেঙ্গাইতেছে। কোথাও বা বড় বটি পাতিয়া বামনী, ক্ষেমণী, গোপালের মা, নেপালের মা, লাউ, কুমড়া, বাত্তাকু, পটল, শাক কুটিতেছে; তাতে ঘস ঘস, কচ, কচ শব্দ হইতেছে, মাখে পাড়ার নিন্দা, মানিবের নিন্দা, পরস্পরকে গালাগালি করিতেছে। এবং গোলাপী অলপ বয়সে বিধবা হইল, চাঁদির স্বামী বড় মাতাল, কৈলাসীর জামাইয়ের বড় চাকরি হইয়াছে—সে দারোগার মহারী; গোপালে উড়ের যাত্রার মত পথিবীতে এমন আর কিছই নাই, পাৰ্ব্ববতীর ছেলের মত দন্ডটি ছেলে আর বিশ্ববাঙ্গালায় নাই, ইংরেজেরা না কি রাবণের বংশ, ভগীরথ গঙ্গা এনেছেন, ভাট চাৰ্য্যিদের মেয়ের উপপতি শ্যাম বিশ্বাস, এই রােপ নানা বিষয়ের সমালোচনা হইতেছে। কোন কৃষ্ণবর্ণা সােথ লাঙ্গী, প্রাঙ্গণে এক মহাসত্রর পী বটি ছাইয়ের উপর সংস্থাপিত করিয়া, মৎস্যজাতির সদ্যঃপ্রাণসংহার করিতেছেন, চিলেরা বিপােলাঙ্গীর শরীরগৌরব এবং হসন্তলাঘব দেখিযা ভয়ে আগ হইতেছে না, কিন্তু দাই একবার ছোঁ মারিতেও ছাড়িতেছে না! কোন পক্ককেশা জল আনিতেছে, কোন ভীমদশনা বাটনা বাটিতেছে। কোথাও বা ভান্ডারমধ্যে, দাসী, পাচিকা এবং ভান্ডারের রক্ষাকারিণী এই তিন জনে তুমলে সংগ্রাম উপস্থিত। ভান্ডারকত্রী তাক করিতেছেন যে, যে ঘত দিয়াছি, তাহাঁই ন্যায্য খরচ—পাচিকা তক করিতেছে যে, ন্যায্য খরচে কুলাইবে কি প্রকারে ? দাসী তক করিতেছে যে, যদি ভান্ডারের চাবি খোলা থাকে, তাহা হইলে আমরা কোনরপে কুলাইয়া দিতে পারি। ভাতের উমেদারীতে অনেকগলি ছেলে মেয়ে, কাঙ্গালী, কুক্কর বসিয়া আছে। বিড়ালেরা উমেদারী কবে না।--তাহারা অবকাশমতে “দোেষভাবে পরগনুহে প্রবেশ” করত বিনা অনািমতিতেই খাদ্য লইয়! যাইতেছে। কোথাও অনধিকারপ্রবিভটা কোন গাভী লাউয়ের খোলা, বেগনের ও পটলের বোঁটা এবং কলার পাত আমন্তবোধে চক্ষ বজিয়া চক্ৰবাণ করিতেছে। এই তিন মহল অন্দরমহলের পর, পক্ষেপাদ্যান। পক্ষেপাদ্যান পরে, নীলমেঘখণডতুল্য প্রশস্ত দীঘিকা । দীঘিকা প্রাচীরবেষিষ্টত। ভিতর বাটীর তিন মহল ও পক্ষেপাদ্যানের মধ্যে খিড়কীর পথ। তাহার দই মাখে দাই দবার। সেই দাই খিড়িকী। এই পথ দিয়া অন্দরের তিন মহলেই প্রবেশ করা যায়। 'ಳ' বাহিরে আস্তাবল, হাতিশালা, কুকুরের ঘর, গোেশালা, চিড়িয়াখানা ইত্যাদি সস্থান কুন্দনন্দিনী, বিসিমতনেত্রে নগেন্দ্রের অপরিমিত ঐশ্বব্যয্য দেখিতে দেখিতে, শিবিকারোহণে অন্তঃপারে প্রবেশ করিল। সে সৰ্য্যেমখীর নিকটে আনীত হইয়া, তাঁহাকে প্ৰণাম করল। সৰ্য্যেমখী আশীৰ্ববাদ করিলেন। নগেন্দ্রসঙ্গে, সর্বপ্নদাম্পট পরিষেরাপের সাদশ্য অনভূত করিয়া, কুন্দনন্দিনীর মনে মনে এমত সন্দেহ জন্মিয়াছিল যে, তাঁহার পত্নী অবশ্য তৎপরদহটা সত্ৰীমত্তির সদািশরপা হইবেন; কিন্তু সােয্যমখীকে দেখিয়া সে সন্দেহ দরি হইল। কুন্দ দেখিল যে, সােয্যমখী আকাশপটে দন্ডটা নারীর ন্যায় শ্যামাণ্ডগী নহে। সত্যািমখণী পৰ্ণচন্দ্রতুল্য তপস্তকা"gনবর্ণা। তাঁহার চক্ষ সন্দর বটে, কিন্তু কুন্দ যে প্রকৃতির চক্ষ স্বপ্নে দেখিয়াছিল, এ সে চক্ষ, নহে। সৰ্য্যেমখনীর চক্ষ সাদীঘ', অলকসপেশী ভ্ৰযগসমাশ্রিত, কমনীয় বণ্ডিকমপল্লবরেখার মধ্যস্থ, স্থািলকৃষ্ণতারাসনাথ, মন্ডলাংশের আকারে ঈষৎ স্ফীত, উক্তজবল অথচ মন্দগতিবিশিষট। স্বপনদন্ডটা শ্যামাণ্ডগীর চক্ষর। এরপ অলৌকিক মনোহারিত্বে ছিল না। সৰ্য্যেমখীর অবয়বও সেরাপ নহে। স্বপনদন্ডটা খঝবাকৃতি, NRCA O