পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

द७दeष्ड् চট্টোপাধ্যায় দেখিব-দিগম্ভুজা, নানা প্রহরণপ্ৰহারিণী, শত্র মন্দিনী, বীরেন্দ্ৰপাঠবিহারিণী*-দক্ষিণে লক্ষয়ী ভাগ্যরপিণী, বামে বাণী বিদ্যাবিজ্ঞানমত্তিময়ী, সঙ্গে বলরােপী কাত্তিকেয়, কাৰ্য্যসিদ্ধির পী গণেশ, আমি সেই কালস্রোত মধ্যে দেখিলাম, এই সবর্ণময়ী বঙ্গপ্রতিমা৷... “এস, ভাই সকল! আমরা এই অন্ধকার কালস্রোতে ঝাঁপ দিই। এস, আমরা দ্বাদশ কোটি ভুজে ঐ প্রতিমা তুলিয়া, ছয় কোটি মাথায় বহিয়া, ঘরে আনি।।” (কমলাকান্তের দপতর, পঃ ৪৮-৯, পরিষৎ-সংস্করণ, ২য় মাদ্রণ) o oo প্রতীতি হয়, ইহার পরেই। “বন্দে মাতরম’-এর সন্টি। বঙ্কিমচন্দ্রের অনজ পৰ্ণচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় এবং দীনবন্ধ মিত্রের পত্র ললিতচন্দ্র উভয়েই সাক্ষ্য রাখিয়া গিয়াছেন যে, “আনন্দমঠ’ প্রকাশের বহর পকেবা “বঙগদশন” সম্পাদন-কালে ১৮৭৫ সন নাগাদ বণ্ডিকমচন্দ্র এই সঙ্গীতটি রচনা করেন। কাগজ ছাপিবার কালের অনেক সময় matter কম পড়িলে পাতা পরণের জন্য বঙ্কিমচন্দ্রকে উপস্থিতমত কিছ লিখিয়া দিতে হইত। তিনি একদা একখানি কাগজে “বন্দে মাতরম' সঙ্গীতটি লিখিয়া টেবিলের উপর রাখিয়া দিয়াছিলেন। পর্ণচন্দ্র বলেন, ছাপাখানার পন্ডিত মহাশয় পাতা পরণের জন্য, এটি দেখিয়া মন্দ নয় বলিয়া কহিলেন, “সম্পাদক বঙ্কিমচন্দ্র বিরক্ত হইয়া কাগজখানি টেবিলের দেরাজের ভিতর রাখিয়া বলিলেন, “উহা ভাল কি “মন্দ, এখন তুমি বঝিতে পরিবে না, কিছকাল পরে বঝিবে-আমি তখন জীবিত না থাকিবারই সম্ভব, তুমি থাকিতে পাের।” এই গীতটির একটা সাের বসাইয়া উহার গাওনা হইত। একজন গায়ক প্রথমে উহা গাহিয়াছিলেন।” (বঙ্কিম-প্রসঙ্গ, পঃ ৫৩) মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী “বন্দে মাতরম' সঙ্গীত সম্পকে লিখিয়াছেন : “বঙ্কিমবাব যাহা কিছ: করিয়াছেন...সব গিয়া এক পথে দাঁড়াইয়াছে। সে পথ জন্মভূমির উপাসনা -জন্মভূমিকে মা বলা—জন্মভূমিকে ভালবাসা—জন্মভূমিকে ভক্তি করা। তিনি এই যে কাৰ্য্য করিয়াছেন, ইহা ভারতবর্ষের আর কেহ করে নাই। সতরাং তিনি আমাদের পাজ্য, তিনি আমাদের নমস্য, তিনি আমাদের আচাৰ্য্য, তিনি আমাদের ঋষি, তিনি আমাদের মন্ত্রকৃৎ, তিনি আমাদের মন্ত্রদ্রস্টা। সে মন্ত্র —বন্দে মাতরম।” (বঙ্কিম-প্রসঙ্গ, পঃ ১৭৩) সপতদশ দশকের মধ্যভাগে কলিকাতায় ও মফস্বলে রাজনৈতিক প্রতিস্ঠানসমােহ গড়িয়া উঠিতেছিল। সরকারী কমচারীদের তখন রাজনৈতিক প্রতিস্ঠানে যোগদান প্রায় নিষিদ্ধ হইয়া • পড়িয়াছে। ১৮৭৬, ২৬শে জলাই (১২ই ভাদ্র, ১২৮৩) কলিকাতায় যখন Indian Association বা ‘ভারত সভা’ প্ৰতিস্ঠিত হয় তখন বঙ্কিমচন্দ্র ইহাতে উপস্থিত ছিলেন না বটে, কিন্তু সভার প্রতি বিলক্ষণ সহানভূতি দেখাইয়া একখানি পত্র লিখিয়াছিলেন। “বঙগদশনে’র লেখক ব্রাহ্মনেতা নগেন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় সভায় এই পত্ৰখানি পাঠ করেন। পত্রের শেষে এই কথা কয়টি ছিল : “ভরসা করি এতদিন পরে এরপে একটি সভা প্রতিষ্ঠিত হইবে, যাহা উপযন্তরীপে দেশীয় জনসাধারণের প্রতিনিধিত্ব করিতে সমর্থ হইবে।” (“সাধারণী’, ১৬ই শ্রাবণ, ১২৮৩) ভারত সভার উদ্দেশ্যের প্রতি বঙিকমচন্দ্র বিশেষ সহানভূতিশীল ছিলেন। ১৮৭৯ সনে বিলাতে ভারতবাসীর সপক্ষে রাভিট্ৰীয় আন্দোলন পরিচালনার জন্য প্রতিনিধি প্রেরণ আবশ্যক হয়। এজন্য তখন অর্থের সংস্থান করাও প্রয়োজন হইয়া পড়ে। এই সময় বণ্ডিকমচন্দ্র পত্রের wবারা মহারাণী সবৰ্ণময়ীকে প্রয়োজনীয় অর্থদানে অন্যুরোধ জানাইলে তিনি ভারত সভাকে কয়েক সহস্র টাকা দিয়াছিলেন। বঙ্কিমচন্দ্রের পত্ৰ লইয়া দেশপজ্য নেতা সরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ও দাবারকানাথ গঙ্গোপাধ্যায় বহরমপরে সবণময়ীর নিকট গমন করেন। ‘আনন্দ মঠ”, “দেবী চৌধরাণী’, ও ‘সীতারামে’ বঙ্কিমচন্দ্র শােধ দেশ-ভত্তির পরাকাঠিা দেখান নাই, কিরােপ অনশীলন দ্বারা সবদেশের মক্তিসাধন সম্ভব তাহার সন্ধান দেশবাসীকে তিনি এগলির মাধ্যমে দিয়া গিয়াছেন। এ তিনেরই উদ্দেশ্য বিশেলষণ করিয়া পাঁচকড়ি বন্দ্যোপাধ্যায় লিখিয়াছেন : “এই তিনখানি উপন্যাসে, বাঙগালীর প্রকৃতির আধারে বঙ্কিমচন্দ্র সমন্টি, ব্যটি এবং সমন্বয়ের অনশীলন পদ্ধতি পরিসফট করিয়াছেন। আনন্দমঠে সমন্টি বা সমাজের ব্রুিয়া দেখাইতে চেষ্টা করিয়াছেন, দেবী চৌধরাণীতে ব্যক্তিগত সাধনার উন্মেষ-প্রকরণ বঝাইবার প্রয়াস পাইয়াছেন; R O