পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/২৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙিকম রচনাবলী দেখে ভালবাসেন, রােপ না গণ ? রপে—দেখি ?” (এই কহিয়া কালামখী স্বচ্ছ সরোবরে আপনার প্রতিবিম্ব দেখিতে গেল, কিন্তু কিছই দেখিতে না পাইয়া আবার পািব্বস্থানে আসিয়া বলিল ) “দর হউক, যা নয় তা ভাবি কেন ? আমার চেয়ে সােয্যমখী সন্দের ; আমার চেয়ে হরমণি সন্দের ; বিশ সন্দের ; মন্ত সন্দের ; চন্দ্র সন্দর ; প্রসন্ন সন্দর ; বামা সন্দর ; প্রমদা সন্দর ; আমার চেয়ে হীরা দাসীও সন্দিরী। হীরাও আমার চেয়ে সন্দোর ? হাঁ ; শ্যামবণ হলে কি হয়——মািখ আমার চেয়ে সন্দর। তা রােপ ত গোল্লাই গেলা—গণ কি ? আচ্ছা দেখি, দেখি ভেবে —কই, মনে তা হয় না। কে জানে ! কিন্তু মরা হবে না, ঐ কথা ভাবি। মিছে কথা! তা মিছে কথাই ভাবি । মিছে কথাকে সত্য বলিয়া ভাবিব । কিন্তু কলিকাতায় যেতে হবে যে, তা ত যেতে পারিব না; দেখিতে পাব না যে । আমি যেতে পারব না—পারব না—পারব না। তা না গিয়াই বা কি করি ? যদি কমলের কথা সত্য হয়, তবে ত যারা আমার জন্য এত করেছে, তাহাদের ত সৰ্ব্ববর্তনাশ করিতেছি। সােয্যমখীর মনে কিছদ হয়েছে, বঝিতে পারি। সত্যই হউক, মিথ্যাই হউক, কাজে কাজেই আমায় যেতে হবে । তা পারিব না। তাই ডুবে মারি । মরিবই। মরিব । বাবা গো! তুমি কি আমাকে ডুবিয়া মরিবার জন্য রাখিয়া গিয়াছিলে:-” কুন্দ তখন দলই চক্ষে হাত দিয়া কাঁদিতে লাগিল। সহসা অন্ধকার গহে প্ৰদীপ জবালার ন্যায়, কুন্দের সেই স্বপ্ন-বত্তান্ত সন্সেপস্ট মনে পড়িল। কুন্দ তখন বিদ্যুৎস্পষটার ন্যায় গাত্ৰোত্থান করিল। “আমি সকল ভুলিয়া গিয়াছি—আমি কেন ভুলিলাম ? মা! আমাকে দেখা দিয়াছিলেন—- মা আমার কপালের লিখন জানিতে পারিয়া আমায় ঐ নক্ষত্ৰলোকে যাইতে বলিয়াছিলেন—আমি কেন তাঁর কথা শনলেম না—আমি কেন গেলাম না।!--আমি কেন মলেম না । আমি এখনও বিলম্ব করিতেছি কেন ? আমি এখনও মরিতেছি না কেন ? আমি এখনই মরিব ?” এই ভাবিয়া কুন্দ ধীরে ধীরে সেই সরোবরসোপান অবতরণ আরম্ভ করিল। কুন্দ নিতান্ত অবলা— নিতান্ত ভীর স্বভাবসম্পন্না-প্রতি পদাপণে ভয় পাইতেছিল—প্রতি পদাপণে তাহার অঙ্গ শিহরিতেছিল। তথাপি অসংখলিতসঙকলেপ সে মাতার আজ্ঞা পালনাথ ধীরে ধীরে যাইতেছিল। এমত সময় পশ্চাৎ হইতে কে অতি ধীরে ধীরে তাহার পক্ৰেষ্ঠ অঙগালিস পাশ করিল। বলিল, “কুন্দ!” কুন্দ দেখিল-সে অন্ধকারে দেখিবামাত্র চিনিল-নগেন্দ্র। কুন্দের সে দিন। আর মরা হলো না । আর নগেন্দ্ৰ ! এই কি তোমার এত কালের সচরিত্র ? এই কি তোমার এত কালের শিক্ষা ? এই কি সহেযািমখীর প্রাণপণ প্রণয়ের প্রতিফল ! ছি:৷ ছি! দেখ, তুমি চোর ! চোরের অপেক্ষাও হীন। চোর সােয্যমখনীর কি করিত ? তাহার গহনা চুরি করিত, অর্থহানি করিত, কিন্তু তুমি তাহার প্রাণহানি করিতে আসিয়াছ । চোরকে সৰ্য্যেমখী কখন কিছ দেয নাই ; তব সে চুরি করিলে চোর হয়। আর সােয্যমখনী তোমাকে সব বসব দিয়াছে—তব, তুমি চোরের অধিক চুরি করিতে আসিয়াছ! নগেন্দ্ৰ তুমি মরিলেই ভাল হয়। যদি সাহস থাকে, তবে তুমি গিয়া ডুবিয়া মর। তার ছি! ছি:! কুন্দনন্দিনি! তুমি চোরের সপশে কাঁপিলে কেন ? ছিঃ! ছি:! কুন্দনন্দিনি! --চোরের কথা শনিয়া তোমার গায়ে কাঁটা দিল কেন ? কুন্দনন্দিনী!—দেখা পঙ্করিণীর জল পরিস্কার, সরশীতল, সবাসিত—বায়ার হিল্লোলে তাহার নীচে তারা কাঁপিতেছে। ডুবিবে ? ডুবিয়া মাির না ? কুন্দনন্দিনী মরিতে চাহে না। চোর বলিল, “কুন্দা! কলিকাতায় যাইবে ?” কুন্দ কথা কহিল না-চক্ষ মাছিল—কথা কহিল না। চোর বলিল, “কুন্দ! ইচ্ছাপাকবািক যাইতেছ?” ইচ্ছাপাকবািক ! হরি! হরি! কুন্দ আবার চক্ষ মাছিল—কথা কহিল না। “কুন্দ—কাঁদিতেছ। কেন?” কুন্দ এবার কাঁদিয়া ফেলিল। তখন নগেন্দ্ৰ বলিতে লাগিলেন, “শন কুন্দা! আমি বহন কন্টে এত দিন সহ্য করিয়াছিলাম, কিন্তু আর পরিলাম না। কি কম্পেট যে বাঁচিয়া আছি, তাহা বলিতে পারি না। আপনার সঙ্গে যাদ্ধ করিয়া আপনি ক্ষত-বিক্ষত হইয়াছি। ইতর হইয়াছি, মদ খাই। আর পারি না। তোমাকে ছাড়িয়া দিতে পারি না। শনি, 蠶 काँ বিধবাবিবাহ চলিত হইতেছে—আমি তোমাকে বিবাহ করিব। তুমি বলিলেই ববাহ কার্য ।” ミピbた