পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৩০২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বিষবক্ষ সিক্ত-কমলতুল্য ক্লিন্ট মাখমন্ডল উন্নত করিয়া, সৰ্ব্ববাদঃখাপহারী সর্বামিম খপ্রতি চাহিয়া বলিলেন, “কি বলিব তোমায় ? আমি যে দদুঃখ পাইয়াছি, তাহা কি তোমায় বলিতে পারি ? মরিলে পাছে তোমার দঃখ বাড়ে, এই জন্য মারি নাই। নাহিলে যখন জানিয়াছিলাম, অন্যা তোমার হৃদয়ভাগিনী —আমি তখন মরিতে চাহিয়াছিলাম। মাখের মরা নহে-যেমন সকলে মরিতে চাহে, তেমন মরা নহে; আমি যথার্থ আন্তরিক অকপটে মরিতে চাহিয়াছিলাম। আমার অপরাধ লইও না।” নগেন্দ্র অনেকক্ষণ সিথরভাবে থাকিয়া, শেষ দীঘ নিশবাস ত্যাগ করিয়া বলিলেন, “সৰ্য্যমখী! অপরাধ সকলই আমার। তোমার অপরাধ কিছই নাই। আমি যথাৰ্থ তোমার নিকট নতা। যথার্থই আমি তোমাকে ভুলিয়া কুন্দনন্দিনীতে—কি বলিব ? আমি যে যন্ত্রণা পাইয়াছি, যে যন্ত্রণা পাইতেছি, তাহা তোমাকে কি বলিব ? তুমি মনে করিয়াছ, আমি চিত্ত দমনের চেস্টা করি নাই ; এমন ভাবিও না। আমি যত আমাকে তিরস্কার করিয়াছি, তুমি কখনও তত তিরস্কার করিবে না। আমি পাপাত্মা-আমার চিত্ত বশ্য হইল না ।” সহেযািমখী আর সহ্য করিতে পারিলেন না, যোড়হাত করিয়া কাতরস্বরে বলিলেন, “যাহা তোমার মনে থাকে, থাক।---আমার কাছে আর বলিও না। তোমার প্রতি কথায় আমার বকে শেল বিধিতেছে —আমার আদলেট যাহা ছিল, তাহা ঘটিয়াছে—আর শনিতে চাহি না। এ সকল আমার আশ্রাব্য ।” * “মা। তা নয়, সহেযািমখী! আরও শনিতে হইবে। যদি কথা পাড়িলে, তবে মনের কথা ব্যক্তি করিয়া বলি—কেন না, অনেক দিন হইতে বলি বলি করিতেছি। আমি এ সংসার ত্যাগ করিব । মরিব না –কিন্তু দেশান্তরে যাইব । বাড়ী ঘর সংসারে আর সখি নাই। তোমাতে আমার আর সখি নাই। আমি তোমার অযোগ্য স্বামী। আমি আর কাছে থাকিয়া তোমাকে ক্লেশ দিব না। কুন্দনন্দিনীকে সন্ধান করিয়া আমি দেশ-দেশান্তরে ফিরিব। তুমি এ গহে। গহিণী থােক। মনে মনে ভাবিও তুমি বিধবা। -- যাহার স্বামী এরপ পামর, সে বিধবা নয় ত কি ? কিন্তু আমি পামর হই। আর যাই হই, তোমাকে প্রবণ8না করিব না। আমি অন্যাগতপ্ৰাণ হইয়াছি —সে কথা তোমাকে সপটি বলিব ; এখন আমি দেশত্যাগ করিয়া চলিলাম। যদি কুন্দনন্দিনীকে ভুলিতে পারি, তবে আবার আসিব! নচেৎ তোমার সঙ্গে এই সাক্ষাৎ ” এই শেলসম কথা শনিয়া সংযম খাঁ কি বলিবেন ? কয়েক মহত্ত প্রস্তরময়ী মাত্তি বৎ পথিবীপানে চাহিয়া রহিলেন। পরে সেই ভূতলে অধোমখে শইয়া পড়িলেন। মাটিতে মািখ লকাইয়া সােয্যমখী--কদিলেন কি ? হত্যাকারী ব্যাঘ্র যেরপে হত জীবের যন্ত্রণা দেখে, নগেন্দ্র সেইরােপ সিথরভাবে দাঁড়াইয়া দেখিতেছিলেন। মনে মনে বলিতেছিলেন, “সেই ত মরিতে হইবে।--তার আজ কাল কি ? জগদীশবারের ইচ্ছা,-আমি কি করব ? আমি কি মনে করিলে ইহার প্রতীকার করিতে পারি? আমি মরিতে পারি, কিন্তু তাহাতে সহেযািমদুখী বাঁচিবে ?” না; নগেন্দ্র! তুমি মরিলে সােয্যমখী বাঁচিবে না, কিন্তু তোমার মরাই ভাল ছিল। দণ্ডেক পরে সােয্যমখী উঠিয়া বসিলেন। আবার স্বামীর পায়ে ধরিয়া বলিলেন, “এক उठभा ।" ন। কি ? স। আব্ব এক মাস মাত্র গহে থােক। ইতিমধ্যে যদি কুন্দনন্দিনীকে না পাওয়া যায়, তবে তুমি দেশত্যাগ করিও । আমি মানা করিব না। নগেন্দ্ৰ মৌনভাবে বাহির হইয়া গেলেন। মনে মনে আর এক মাস থাকিতে স্বীকার করিলেন। সত্যািমখীও তােহা বঝিলেন। তিনি গমনশীল নগেন্দ্রের মাত্তি প্রতি চাহিয়াছিলেন। সৰ্যমখী মনে মনে বলিতেছিলেন, “আমার সাকৰ স্ব ধন্য! তোমার পায়ের কাঁটাটি তুলিবার জন্য প্রাণ দিতে পারি। তুমি পাপ সৰ্য্যেমখীর জন্য দেশত্যাগী হইবে ? তুমি বড়, না। আমি বড় ?” দ্বাবিংশ পরিচ্ছেদ ঃ চোরের উপর বাটপাড়ি হীরা দাসীর চাকরী গেল, কিন্তু দত্তবাড়ীর সঙ্গে সম্প্ৰবন্ধ ঘাঁচিল না। সে বাড়ীর সংবাদের জন্য হীরা সববিদ্যা ব্যস্ত। সেখানকার লোক পাইলে ধরিয়া বসাইয়া গলপ ফাঁদে। কথার ছলে সযমেখীর প্রতি নগেন্দ্রের কি ভাব, তাহা জানিয়া লয়। যে দিন কাহারও সাক্ষাৎ না পায়, રે જે તે