পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৩০৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब७कभ ब्रा5नाबब्ली দেবেন্দ্র হীরার মাখে এই তিন প্রকার কথা শানিলেন। তাহার চিত্তের অবস্থা বঝিলেন। মনে মনে ভাবিলেন, “আমি তোমাকে চিনিলাম, এখন কলে নাচাইতে পারিব। যেদিন মনে করিব, সেই দিন তোমার দবারা কায্যোদ্ধার করিব।” এই ভাবিয়া চলিয়া গেলেন। দেবেন্দ্র হীরার সম্পপণ্য পরিচয় পান নাই। পঞ্চবিংশ পরিচ্ছেদ ঃ খোস, খবর বেলা দই প্রহর। শ্ৰীশবাব আপিসে বাহির হইয়াছেন। বাটীর লোকজন সব আহারান্তে নিদ্রা যাইতেছে। বৈঠকখানার চাবি বন্ধ। একটা দোআসিলা গোছ টেরিয়র বৈঠকখানার বাহিরে, পাপোসের উপর, পায়ের ভিতর মাথা রাখিয়া ঘামাইতেছে। অবকাশ পাইয়া কোন প্ৰেমময়ী চাকরাণী কোন রসিক চাকরের নিকট বসিয়া গোপনে তামাকু খাইতেছে, আর ফিস ফিস করিয়া বকিতেছে। কমলমণি শয্যাগহে বসিয়া পা ছড়াইয়া সচেী-হস্তে কাপেট তুলিতেছেন—কেশ বেশ একটা একটা আল, থাল—কোথায় কেহ নাই, কেবল কাছে সতীশ বাবা বসিয়া মাখে। অনেক প্রকার শব্দ করিতেছেন, এবং ব্যুকে লাল ফেলিতেছেন। সতীশ বাবা প্রথমে মাতার নিকট হইতে উলগলি অপহরণ করিবার যত্ন করিয়াছিলেন, কিন্তু পাহারা বড় কড়াকড়ি দেখিয়া, একটা মন্ময় ব্যান্ত্রের মন্ডলেহনে প্রবত্ত হইয়াছিলেন। দরে একটা বিড়াল, থাবা পাতিয়া বসিয়া, উভয়কে পৰ্য্যবেক্ষণ করিতেছিল। তাহার ভাব অতি গম্ভীর; মাখে বিশেষ বিজ্ঞতার লক্ষণ; এবং চিত্ত চাঞ্চল্যাশন্য। বোধ হয় বিড়াল ভাবিতেছিল, “মানষের দশা অতি ভয়ানক, সব্বদা কাপেট তোলা, পতুল-খেলা প্রভৃতি তুচ্ছ কাজে ইহাদের মন নিবিচাট, ধৰ্ম্ম-কম্পেম মতি নাই, বিড়ালজাতির আহার যোগাইবার মন নাই, অতএব ইহাদের পরকালে কি হইবে ?” অন্যত্র একটা টিকটিকি প্রাচীরাবলম্বন করিয়া উদ্ধাবমখে একটি মক্ষিকার প্রতি দণ্ডিটপাত করিতেছিল। সেও মাক্ষিকাজাতির দশচরিত্রের কথা মনে মনে আন্দোলন করিতেছিল, সন্দেহ নাই। একটি প্রজাপতি উড়িয়া বেড়াইতেছিল, সতীশ বাব যেখানে বসিয়া সন্দেশ ভোজন করিতেছিলেন, ঝাঁকে ঝাঁকে সেখানে মাছি বসিতেছিল—পিপীলিকারাও সার দিতে আরম্ভ করিয়াছিল। ক্ষণকাল পরে, টিকটিকি মক্ষিককে হস্তগত করিতে না পারিয়া অন্য দিকে সরিয়া গেল। বিড়ালও মনষ্যেচরিত্র পরিবত্তানের কোন লক্ষণ সম্প্রতি উপস্থিত না দেখিয়া, হাই তুলিয়া, ধীরে ধীরে অন্যত্ৰ চলিয়া গেল। প্রজাপতি উড়িয়া বাহির হইয়া গেল। কমলমণিও বিরক্ত হইয়া কাপোিট রাখিলেন এবং সত্যু বাবার সঙ্গে আলাপে প্রবত্ত হইলেন। কমলমণি বলিলেন, “অ, সত্যু বাবা, মানষে আপিসে যায় কেন বলিতে পাের ?” সন্তু বাব বলিলেন, “ইলি—লি—ব্লি।” ক। সন্তু বােব, কখনও আপিসে যেও না। সতু বলিল, “হাম!” কমলমণি বলিলেন, “তোমার হাম করার ভাবনা কি ? তোমার হাম করার জন্য আপিসে যেতে হবে না। আপিসে যে ও না—আপিসে গেলে বৌ দপারবেলা বসে বসে কাঁদবে।” সতু বােব বৌ কথাটা বঝিলেন ; কেন না, কমলমণি সববােদা তাঁহাকে ভয় দেখাইতেন যে, বৌ আসিয়া মারিবে। সন্তু বােব এবার উত্তর করিলেন, “বেী—মাবে!” কমল বলিলেন, “মনে থাকে যেন আপিসে গেলে বৌ মারিাবে।” এইরুপ কথোপকথন কতক্ষণ চলিতে পারিত, তাহা বলা যায় না; কেন না, এই সময়ে একজন দাসী ঘমে চোখ মছিতে মাছিতে আসিয়া একখানি পত্ৰ আনিয়া কমলের হাতে দিল। কমল দেখিলেন, সৰ্য্যেমখীর পত্র। খলিয়া পড়িলেন। পড়িয়া আবার পড়িলেন। আবার পীড়য়া বিষন্ন মনে মৌনী হইয়া বসিলেন। পত্র এইরুপ;— “প্রিয়তমা! তুমি কলিকাতায় গিয়া পৰ্য্যন্ত আমাদের ভুলিয়া গিয়াছ--নিহিলে একখানি বই পত্র লিখিলে না কেন ? তোমার সংবাদের জন্য আমি সদ্ধবন্দা ব্যস্ত থাকি, জানি না ? “তুমি কুন্দনন্দিনীর কথা জিজ্ঞাসা করিয়াছিলে। তাহাকে পাওয়া গিয়াছে—শনিয়া সখী হইবে-ষষ্পাঠীদেবতার পজা দিও। তাহা ছাড়া আরও একটা খোসা খবর আছে—কুন্দের সঙ্গে আমার স্বামীর বিবাহ হইবে। এ বিবাহে আমিই ঘটক। বিধবাবিবাহ শাস্ত্ৰে আছে—তবে দোষ Ꮼ Ꭴ 8