পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৩২৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब७कश द्वा5नाववी আমার সােয্যমখী—কাহার এমন ছিল ? সংসারে সহায়, গহে লক্ষয়ী, হৃদয়ে ধৰ্ম্মম, কণ্ঠে অলঙ্কার! আমার নয়নের তারা, হৃদয়ের শোণিত, দেহের জীবন, জীবনের সকবসব! আমার প্রমোদে হৰ্ষ, বিষাদে শান্তি, চিন্তায় বন্ধি, কায্যে উৎসাহ ! আর এমন সংসারে কি আছে ? আমার দর্শনে আলোক, শ্রবণে সঙগীত, নিশবাসে বায়, সপশে জগৎ। আমার বাৰ্ত্তমানের সখি, অতীতের সন্মতি, ভবিষ্যতের আশা, পরলোকের পণ্য ! আমি শংকর, রত্ন চিনিব কেন ? হঠাৎ তাঁহার সমরণ হইল যে, তিনি সখে শিবিকারোহণে যাইতেছেন, সােয্যমখী পথ হাঁটিয়া হাঁটিয়া পীড়িতা হইয়াছিলেন। অমনি নগেন্দ্র শিবিকা হইতে অবতরণ করিয়া পদব্রজে চলিলেন। বাহকেরা শান্য শিবিকা পশ্চাৎ পশ্চাৎ আনিতে লাগিল। প্রাতে যে বাজারে আসিলেন, সেইখানে শিবিকা ত্যাগ করিয়া বাহকদিগকে বিদায় দিলেন। অবশিস্ট পথ পদব্রজে অতিবাহিত করবেন। তখন মনে করিলেন, “এ জীবন এই সােয্যমখীর বধের প্রায়শ্চিত্তে উৎসগা করিব। কি প্রায়শ্চিত্ত ? সােয্যমখী গািহত্যাগ করিয়া যে সকল সমুখে বঞ্চিতা হইয়াছিলেন—আমি সে সকল সখভোগ ত্যাগ করিব। ঐশবষ্য, সম্পদ, দাসদাসী, বন্ধ বান্ধবের আর কোন সংস্রব রাখিব না। সােয্যমখী গািহত্যাগ করিয়া অবধি যে সকল ক্লেশ ভোগ করিয়াছিলেন, আমি সেই সকল ক্লেশ৷ ভোগ করিব। যে দিন গোবিন্দপাের হইতে যাত্ৰা করিব, সেই দিন হইতে ঔআমার গমন পদব্রজে, ভোজন কদন্ন, শয়ন বােক্ষতলে বা পণ কুটীরে। আর কি প্রায়শ্চিত্ত ? যেখানে যেখানে অনাথা সত্ৰীলোক দেখিব, সেইখানে প্রাণ দিয়া তাহার উপকার করিব। যে অর্থ নিজ ব্যয়াথ রাখিলাম, সেই অৰ্থে আপনার প্রাণধারণ মাত্র করিয়া অবশিস্ট সহায়হীনা সত্ৰীলোকদিগের সেবাৰ্থে ব্যয় করিব । যে সম্পত্তি সর্বত্ব ত্যাগ করিয়া সতীশকে দিব, তাহারও অদ্ধাংশ আমার যাবজজীবন সতীশ সহায়হীনা সত্ৰীলোকদিগের সাহায্যাৰ্থ ব্যয় করিবে, ইহাও দানপত্রে লিখিয়া দিব । প্ৰায়শিচত্ত ! পাপেরই প্ৰায়শ্চিত্ত হয়। দঃখের ত প্ৰায়শ্চিত্ত নাই। দঃখের প্রায়শ্চিত্ত কেবল মাতৃত্যু। মরিলেই দঃখ যায়। সে প্রায়শ্চিত্ত না করি কেন ?” তখন চক্ষ হস্তে আব্বত করিয়া, জগদীশবরের নাম সমরণ করিয়া নগেন্দ্রনাথ মাতৃত্যু আকাঙক্ষা করিলেন। উনচত্বারিংশত্তম পরিচ্ছেদ ঃ সব ফরাইল, যন্ত্রণা ফারায় না। রাত্রি প্রহরেকের সময়ে শ্ৰীশচন্দ্ৰ একাকী বৈঠকখানায় বসিয়া আছেন, এমত সময়—পদব্রজে নগেন্দ্র সেইখানে উপস্থিত হইয়া, সবহস্তবাহিত কানবাস ব্যাগ দরে নিক্ষিপত করিলেন। ব্যাগ রাখিয়া নীরবে একখানা চেয়ারের উপর বসিলেন। শ্ৰীশচন্দ্র তাঁহার ক্লিন্ডন্ট, মলিন মািখকান্তি দেখিয়া ভীত হইলেন; কি জিজ্ঞাসা করিবেন, কিছ: বঝিতে পারিলেন না। শ্ৰীশচন্দ্র জানিতেন যে, কাশীতে নগেন্দ্ৰ ব্ৰহ্মচারীর পত্ৰ পাইয়াছিলেন এবং পত্ৰ পাইয়া, মধ্যপাের যাত্রা করিয়াছিলেন। এ সকল কথা শ্ৰীশচন্দ্রকে লিখিয়া নগেন্দ্র কাশী হইতে যাত্ৰা করিয়াছিলেন। এখন নগেন্দ্র আপনা হইতে কোন কথা বলিলেন না দেখিয়া, শ্ৰীশচন্দ্ৰ নগেন্দ্রের নিকট গিয়া বসিলেন এবং তাঁহার হসন্ত ধারণ করিয়া কহিলেন, “ভাই নগেন্দ্ৰ, তোমাকে নীরব দেখিয়া আমি বড় ব্যস্ত হইয়াছি। তুমি মধপর যাও নাই ?” নগেন্দ্র এই মাত্র বললেন, “গিয়াছিলাম !” শ্ৰীশচন্দ্র ভীত হইয়া জিজ্ঞাসা করিলেন, “ব্ৰহ্মচারীর সাক্ষাৎ পাও নাই ?” •*?ं । वा ॥ শ্ৰীশ। সােয্যমখীর কোন সংবাদ পাইলে ? কোথায় তিনি ? নগেন্দ্র উদ্ধেবা অঙগালিনিন্দেশ করিয়া বলিলেন, “সবগে !” শ্ৰীশচন্দ্র নীরব হইলেন। নগেন্দ্রও নীরব হইয়া মখাবনত করিয়া রহিলেন। ক্ষণেক পরে মািখ তুলিয়া বলিলেন, “তুমি সবগ মান না—আমি মানি।” শ্ৰীশচন্দ্র জানিতেন, পর্বে নগেন্দ্র স্বৰ্গ মানিতেন না; বঝিলেন যে, এখন মুনেন। বঝিলেন যে, এ সবগ প্রেম ও বাসনার সন্টি। “সৰ্য্যমখী কোথাও নাই” এ কথা সহ্য হয় না। —“সােয্যমখী সবগে আছেন”—এ চিন্তায় অনেক সখি। 馨 উভয়ে নীরব হইয়া বসিয়া রহিলেন। শ্ৰীশচন্দ্র জানিতেন যে, সান্ত্বনার কথার সময় এ নয়। Ꮼ Ꮈ8