পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৩৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब७दकाश, ज्ञष्नाबदली আমি হরমোহন দত্তের মেয়ে, টাকার গদিতে শাইতে চাহিয়াছিলাম—আমি বড় মানষের বাড়ী কাজ করিতে পারিব তা ? আমার চোখে জলও আসিল ; মাখে হাসিও আসিল । তাহা আর কেহ দেখিল না—সম্ভাষিণী দেখিল। গহিণীকে বলিল, “আমি একটা আড়ালে সে সকল কথা ওকে বলি গে। যদি উনি রাজি হন, তবে সঙ্গে করিয়া লইয়া যাইব ।" এই বলিয়া সভাষিণী আমার হাত ধরিয়া টানিয়া একটা ঘরের ভিতর লইয়া গেল। সেখানে কেহ। ছিল না। কেবল ছেলেটি মার সঙেগ সঙেগ দৌড়াইয়া গেল। একখানা তক্তপোষ পাতা ছিল । সভাষিণী তাহাতে বসিল—আমাকে হাত ধরিয়া টানিয়া বসাইল। বলিল, “আমার নাম না জিজ্ঞাসা করিতে বলিয়াছি। তোমার নাম কি ভাই ?” “ভাই!” যদি দাসীপনা করিতে পারি, তবে ইহার কাছে পারি, মনে মনে ইহা ভাবিয়াই উত্তর করিলাম, “আমার দাইটি নাম—একটি চলিত, একটি অপ্রচলিত। যেটি অপ্রচলিত, তাহাই ই-হাদিগকে বলিয়াছি; কাজেই আপনার কাছে এখন তাহাই বলিব । আমার নাম কুমদিনী।” ছেলে বলিল, “কুনডিনী।” সভাষিণী বলিল, “আর নাম এখন নাই শানিলাম, জাতি কায়স্থ বটে টু’’ হাসিয়া বলিলাম, “আমরা কায়সােথ।” সভাষিণী বলিল, “কার মেয়ে, কার বউ, কোথায় বাড়ী, তাহা এখন জিজ্ঞাসা করিব না। এখন যাহা বলিব, তাহা শািন। তুমি বড় মানষের মেয়ে, তাহা আমি জানিতে পারিয়াছি— তোমার হাতে গলায়, গহনার কালি আজিও রহিয়াছে। তোমাকে দাসীপনা করিতে বলিব না— তুমি কিছ কিছ রাঁধতে জান না কি ?” আমি বলিলাম, “জানি। রান্নায় আমি পিত্ৰালয়ে যশস্বিনী ছিলাম।” সভাষিণী বলিল, “আমাদের বাড়ীতে আমরা সকলেই রাঁধি। (মাঝখান থেকে ছেলে বলিল, “মা, আমি দাঁদি”) তব, কলিকাতার রেওয়াজমত একটা পাচিকাও আছে। সে মাগনীটা বাড়ী যাইবে। (ছেলে বলিল, “ত মা বালী দাই”) এখন মাকে বলিয়া তোমাকে তার জায়গায় রাখাইয়া দিব। তোমাকে রাঁধনীর মত রাঁধিতে হইবে না। আমরা সকলেই রধিব, তারই সঙ্গে তুমি দই এক দিন রাঁধবে। কেমন রাজি ?” ছেলে বলিল, “আজি ? ও আজি ?” মা বলিল, “তুই পাজি ।” ছেলে বলিল, “আমি বাব, বাবা পাজি ।” “আমন কথা বলতে নেই বাবা!” এই কথা ছেলেকে বলিয়া আমার মািখ পানে চাহিয়া হাসিয়া সম্ভাষিণী বলিল, “নিত্যই বলে। “ আমি বলিলাম, “আপনার কাছে আমি দাসীপনা করতেও রাজি ।” “আপনি কেন বল ভাই ? বল ত মাকে বলিও। সেই মাকে লইয়া একটি গোল আছে। তিনি একট, খিটখিটে-—তাঁকে বশ করিয়া লইতে হইবে। তা তুমি পাবিবে—আমি মানষে চিনি। কেমন রাজি ?” আমি বলিলাম, “রাজি না হইয়া কি করি ? আমার আর উপায় নাই।” আমার চক্ষতে আবার জল আসিল । সে বলিল, “উপায় নাই কেন ? রিও ভাই, আমি আসল কথা ভুলিয়া গিয়াছি। আমি আসিতেছি। ” সভাষিণী ভোঁ করিযী ছটিয়া মাসীর কাছে গোিল-বলিল, “হাঁ গা, ইনি তোমাদের কে গা ” ঐট কু পয্যন্ত আমি শনিতে পাইলাম। তাঁর মাসী কি বলিলেন, তাহা শনিতে পাইলাম না। বোধ হয়, তিনি যতটকু জানিতেন, তাহাঁই বলিলেন। বলা বাহাল্য, তিনি কিছই জানিতেন না; পরোহিতের কাছে যতটকু শনিয়াছিলেন, ততটকু পয্যন্ত। ছেলেটি এবার মার সঙেগ যায় নাই--আমার হােত লইয়া খেলা করিতেছিল। আমি তাহার সঙ্গে কথা কহিতেছিলাম। সভাষিণী ফিরিয়া আসিল । ছেলে বলিল, “মা, আওগা হাত দেখা।” সভাষিণী হাসিয়া বলিল “আমি তা অনেকক্ষণ দেখিয়াছি।” আমাকে বলিল, “চল, গাড়ি Ꮼ Ꮹ Ꭶ8