পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৩৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

উপন্যাস-প্রসঙ্গ লেখা হয়েছিল। কিন্তু সেগলি ছিল কাহিনী। ইংরেজীতে যাকে বলে রোম্যান্স। আমাদের প্রতি দিনের জীবনযাত্রা থেকে দরে এদের ভূমিকা। সেই দীরত্বই এদের মােখ্য উপকরণ।... "বিষবক্ষে’ কাহিনী এসে পৌছল। আখ্যানে। যে পরিচয় নিয়ে সে এল তা আছে আমাদের অভিজ্ঞতার মধ্যে।”—“প্রবাসী’, আশির্বন ১৩৩৮, পঃ ৮ o৬-৭ । সে-যাগের বিখ্যাত ‘কলিকাতা রিভিয়াতে” (vol. LVII. 1873) 'বিষবক্ষের যে সমালোচনা বাহির হইয়াছিল। তাহাও এখানে উল্লেখযোগ্য। এই পত্রিকায় সমালোচক লেখেন : "This novel whose name appears at the head of this notice, now reprinted from the Bangadarsana, was to be found in the baitakhana of cvery Bengali Babu throughout the whole of last year. It is quite of a different character from its predecessors. While the others were all historical, men and women as they are, and life as it is, is the motto of the present one.' একথা হয়ত অনেকের নিকট অজ্ঞাত যে, "বিষবক্ষে’ বঙিকমচন্দ্রের জীবনের একটা ছবি প্রতিফলিত হইয়াছে। শ্ৰীশচন্দ্র মজমিদার এ বিষয়ে বঙিকমচন্দ্রকে জিজ্ঞাসা করেন, “শনেছি, বিষবক্ষে আপনার নিজের জীবনের একটা ছবি আছে, ইহা কি সত্য কথা ?” উত্তরে বঙিকমচন্দ্র বলেন, “কতক সত্য বই কি, তবে আসলের উপর অনেক রং ফলাইতে হইয়াছে।” (বঙ্কিম প্রসঙ্গ, পঃ ১৯৫)। কবিবর নবীনচন্দ্র সেনের উক্তিও এই কথা কতকটা সপ্রমাণ করিতেছে। উপরি আলাপের কয়েক বৎসর পকেব। ১৮৭৭ সনে কাঁটালপাড়ায় বঙ্কিমচন্দ্রের সঙ্গে প্রথম সাক্ষাৎ করিতে গিয়া নবীনচন্দ্র তাঁহাকে কিছ পাঠ করিতে বলেন। নবীনচন্দ্র লিখিয়াছেন : “তিনি কি পড়িবেন আমাকে জিজ্ঞাসা করিলেন। অক্ষয়বাব [ অক্ষয়চন্দ্র সরকার । আমাকে আগেই শিখাইযা রাখিয়াছিলেন। আমি বলিলাম——“বষবক্ষ’ । তিনি—“কোন স্থান পড়িব ?? আমি—“যে সস্থান আপনার অভিরুচি।” তিনি ‘বিষবক্ষ’ খলিয়া যেখানে কমলমণির কাছে সৰ্য্যেমখী তাঁহার পতিপ্ৰাণতা দেখাইয়া পত্র লিখিয়াছেন সে স্থান পড়িতে লাগিলেন। কিছফক্ষণ পড়িয়া কাঁদিয়া ফেলিলেন, এবং বলিলেন—“বিষবােক্ষ আমি পড়িতে পারি না। তুমি অন্য কিছ শনিতে চাও ত পড়ি।” আমাকে অক্ষয়বাব সত্যই বলিয়াছিলেন যে বঙ্কিমবাবার স্ত্রীর চরিত্রই তাঁহাকে ‘নভেলিম্পট' করিয়াছে। তিনিই সােয্যমখী।” (আমার জীবন, ২য় ভাগ, পঃ ৩৬৬) বঙিকমচন্দ্র স্বয়ং বিষবক্ষে’র কোন কোন চরিত্র সম্পবন্ধে বিভিন্ন সময়ে নিজ মত ব্যক্তি করিয়াছেন। বঙ্কিমচন্দ্ৰ শ্ৰীশচন্দ্র মজমিদারকে বলিয়াছিলেন, “কুন্দনন্দিনীর বিষ খাওয়াটা যে নীতিবিরদ্ধে তাহা আমি স্বীকার করি” (বঙ্কিম-প্রসঙ্গ, পঃ ১৭৯) । অন্য কোন কোন কবিমনীষীও এই মত পোষণ করিতেন। ১৮৯৩ সনে বণ্ডিকমচন্দ্রের সহিত কবিবর নবীনচন্দ্র সেনের একবার সাক্ষাৎ হয়। নবীনচন্দ্র তখন এই অভিযোগ করেন যে, প্রেমের অবাধ প্রচারের দবারা তিনি দেশের অহিত করিয়াছেন। নবীনচন্দ্র লিখিয়াছেন, বঙিকমচন্দ্র প্রাচীরগাত্রে বিলম্বিত তাঁহার কনিষ্ঠা কন্যার অয়েল-পেন্টিঙের দিকে চাহিয়াছিলেন এবং তাঁহার চক্ষ অশ্র-সজল হইয়াছিল। “এই কন্যাটিও কুন্দনন্দিনীর হতভাগ্য অন্যাকরণ করিয়াছিল।” (আমার জীবন, ৪র্থ ভাগ, পঃ ২৭৭) O তথাপি কুন্দনন্দিনী চরিত্রে বঙ্কিমচন্দ্রের যে নাট্য-সজন-শক্তি বিকাশলাভ করিয়াছে একথা শ্ৰীশচন্দ্র মজমিদার ‘প্রতিনিধি” সংবাদপত্রে বিষবক্ষের সমালোচনা প্রসঙ্গে উল্লেখ করেন। এ বঙ্কিমচন্দ্রের সঙ্গে তাঁহার যে কথোপকথন হইয়াছিল শ্ৰীশবাব তাহা এইরপ २शा6ष्ठ्न्म : “প্রতিনিধি” নামক সংবাদপত্রে আমি ‘কুন্দনন্দিনী’ চরিত্রের সমালোচনা করিয়াছিলাম। বঙ্কিমবাব পড়িয়া বলিয়াছিলেন, সামান্য চরিত্র, তার অন্ত বিশেলষণের দরকার ছিল না। আমি বলিলাম, “এক বিষয়ে চরিত্রটি আমার কাছে অসামান্য বলিয়া বোধ হয়—উহার নিশেচন্ট সরলতা, আর কোথাও আমন চিত্ৰ দেখি নাই।” বঙ্কিমবাবা বলিলেন, “আমি তিলোত্তমার চরিত্রেও একটা তাহা দেখাইয়াছি।’ আমি বলিলাম, ‘কুন্দে তাহার বিকাশ অনেক বেশী।” আমি বলিলাম, “আমার বোধ হয় যেন আপনার Ꮼ Ꮼ O