পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৩৬৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

बऽिकञ\ ज्ञानाबव्नौ মখে কাপড় গজিয়া হাসিতে হাসিতে সদর-বাড়ী চলিয়া গেল। সেখানে “কি ঝি ? কি ঝি ?” এই রকম একটা গোলযোগ হইলে, সে আবার ভিতর বাড়ীতে আসিয়া, মাখে কাপড় গজিতে গজিতে ছাদের উপর চলিয়া গেল। সেখানে সোণার মা চুল শকাইতেছিল; সে জিজ্ঞাসা করিল, “কি হয়েছে ?” হারাণী হাসির জবালায় কথা কহিতে পারিল না; কেবল হাত দিয়া মাথা দেখাইতে লাগিল। সোণার মা কিছ, বঝিতে না পারিয়া, নীচে আসিয়া দেখিল যে, গহিণীর মাথার চুল সব কালো—সে ফকুরিয়া কাঁদিয়া উঠিল। বলিল, “ও মা ! এ কি হলো গো! তোমার মাথার সব চুল কালো হয়ে গেছে গো! ওমা কে না জানি তোমায় ওষধ করিল!” এমন সময় সভাষিণী আসিয়া আমাকে পাকড়াইল—হাসিতে হাসিতে বলিল, “পোড়ারমখী, ও করেছ কি, মার চুলে কলপ দিয়াছ ?” আমি। হন। সভা। তোমার মাখে আগবন! কি কান্ডাখানা হয় দেখ! আমি। তুমি নিশিচন্ত থােক। এমন সময়ে গহিণী স্বয়ং আমাকে তলব করিলেন। বলিলেন, “হাঁ গো কুমো! তুমি কি আমার মাথায় কলপ দিয়াছ ?” দেখিলাম, গহিণীর মখখানা বেশ প্রসন্ন। আমি বলিলাম, “আমন কথা কে বল্লে মা!” গ। এই যে সোণার মা বলছে! আমি। সোণার মারা কি ? ও কলপ নয়। মা, আমার ওষধি। গ। তা বেশ ওষধ বাছা। আরসি একখানা আন দেখি। একখানা আরসি আনিয়া দিলাম। দেখিয়া গাঁহিণী বলিলেন, “ও মা সব চুল কালো হয়ে গেছে! আঃ, আবাগের বেটী, লোকে এখনই বলবে কলপ দিয়েছে।” গহিণীর মাখে হাসি ধরে না। সে দিন সন্ধ্যার পর আমার রান্নার সংখ্যাতি করিয়া আমার বেতন বাড়াইয়া দিলেন। আর বলিলেন, “বাছা! কেবল কাচের চুড়ি হাতে দিয়া বেড়াও, দেখিয়া কম্পট হয়।” এই বলিয়া তিনি নিজের বহনকালপরিত্যক্ত এক জোড়া সোণার বালা আমায় বখশিস করিলেন। লাইতে, আমার মাথা কাটা গেল—চোখের জল সামলাইতে পারিলাম না। কাজেই “লেইব না” কথাটা বলিবার অবসর পাইলাম না। মুকুন্টু অবসর পাইয়া বড়ো বামন ঠাকুরাণী আমাকে ধরিল। বলিল, “ভাই, আর সে ওষধ

    • ק আমি। কোন ওষধ ? বামনীকে তার স্বামী বশ করিবার জন্যে যা দিয়েছিলেম ? বামনী। দীর হা! একেই বলে ছেলে-বন্ধি। আমার কি সে সামগ্ৰী আছে ? আমি । নেই ? সে কি গো ? একটাও না ? বামনী। তোদের বঝি পাঁচটা ক'রে থাকে ? আমি । তা নইলে আর আমন রধি ? দ্ৰৌপদী না হলে ভাল। রাঁধা যায়! গোটা পাঁচেক যোেটাও না, রান্না খেয়ে লোকে অজ্ঞান হবে।

বামনী দীঘ নিশবাস ফেলিল। বলিল, “একটাই যোটে না, ভাই—তার আবার পাঁচটা! মসলমানের হয়, যত দোষ হিন্দরে মেয়ের। আর হবেই বা কিসে? এই ত শোণের নড়ী চুল ! তাই বলছিলাম, বলি সে ওষধটা আর আছে, যাতে চুল কালো হয় ?” আমি । তাই বল! আছে বৈ কি । আমি তখন কলাপের শিশি বামন ঠাকুরাণীকে দিয়া গেলাম। ব্রাহ্মণ ঠাকুরাণী, রাত্রিতে জলযোগান্তে শয়নকালে, অন্ধকারে, তাহা চুলে মাখাইয়াছিলেন ; কতক চুলে লাগিয়াছিল, কতক চুলে লাগে নাই, কতক বা ম্যুখে-চোখে লাগিয়াছিল। সকাল বেলা যখন তিনি দশন দিলেন, তখন চুলগােলা পাঁচরঙগা বেড়ালের লোমের মত, কিছ সাদা, কিছ রাঙ্গা, কিছর কালো; আর মখখানি কতক মািখপোড়া বন্দিরের মত, কতক মেনি বেড়ালের মত। দেখিবামাত্র” পৌরবগাঁ উচ্চৈঃস্বরে হাসিয়া উঠিল। সে হাসি আর থামে না। যে যখন পাচিকাকে দেখে, সে তখনই হাসিয়া উঠে। হারাণী হাসিতে হাসিতে বেদম হইয়া সভাষিণীর পায়ে আছড়াইয়া পড়িয়া হাঁপাইতে হাঁপাইতে বলিল, “বোঁ ঠাকুরাণী, আমাকে জবাব দাও, আমি এমন হাসির বাড়ীতে থাকিতে পারিব না-কোেনা দিন দম বন্ধ হইয়া মরিয়া যাইব ।” O \9 Ο