পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৩৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

I ইন্দিরা সভাষিণীর মেয়েও বাড়ীকে জবালাইল, বলিল, “বাড়ী পিসী—সাজ সাজালে কে ?” “যম বলেছে, সোণার চাঁদ এস আমার ঘরে । তাই ঘাটের সজা সাজিয়ে দিলে সিদরে গোবরে।” একদিন একটা বিড়াল হাঁড়ি হইতে মাছ খাইয়াছিল, তাহার মাখে কালি-ঝিলি লাগিয়াছিল ; সভাষিণীর ছেলে তােহা দেখিয়াছিল। সে বাড়ীকে দেখিয়া বলিল, “মা ! বলী পিচী হালি কেয়েসে।” অথচ বামন ঠাকুরাণীর কাছে, আমার ইঙিগতমত, কথাটা কেহ ভাঙ্গিল না। তিনি অকাতরে সেই বানরমাডিজর্ডারবিমিশ্র কান্তি সকলের সম্মখে বিকশিত করিতে লাগিলেন। হাসি দেখিয়া তিনি সকলকে জিজ্ঞাসা করিতে লাগিলেন, “তোমরা কেন হাসাচ গা ?” সকলেই আমার ইতিগতমত বলিল, “ঐ ছেলে কি বলচে শনচো না ? বলে, বলী পিচী হলি কেয়েসে। কাল রাতে কে তোমার হাঁড়িশালে হাড়ি খেয়ে গিয়েছে, তাই সবাই বলাবলি করচে, বলি সোণার মা কি বড়ো বয়সে এমন কাজ করবে ?” বাড়ী তখন গালির ছড়া আরম্ভ করিল—“সব্বনাশীরা! শতেকক্ষোয়ারীরা! আবাগীরা!” —ইত্যাদি ইত্যাদি মন্ত্ৰোচ্চারণপাকবািক তাহাদিগকে এবং তাহাদিগের স্বামী-পত্ৰকে গ্রহণ করিবার জন্য যমকে অনেক বার তিনি আমন্ত্ৰণ করিলেন-কিন্তু যমরাজ সে বিষয়ে আপাততঃ কোন আগ্রহ প্রকাশ করিলেন না। ঠাকুরাণীর চেহারাখানা সেই রকম রহিল। তিনি সেই অবস্থায় রমণ বাবকে অন্ন দিতে গেলেন। রমণ বাব দেখিয়া হাসি চাপিতে গিয়া বিষম খাইলেন, আর তাঁহার খাওয়া হইল না। শনিলাম, রামরাম দত্তকে অন্ন দিতে গেলে, কত্তা মহাশয় তাঁহাকে দর দরে করিয়া তাড়াইয়া দিয়াছিলেন। শেষে দয়া করিয়া সভাষিণী বাড়ীকে বলিয়া দিল, “আমার ঘরে বড় আয়না আছে। মািখ দেখা গিয়া ।” বাড়ী গিয়া মািখ দেখিল। তখন সে উচ্চৈঃস্বরে কাঁদিতে লাগিল এবং আমাকে গালি পাড়িতে লাগিল। আমি বঝাইতে চেন্টা করিলাম যে, আমি চুলে মাখাইতে বলিয়াছিলাম, মাখে। মাখাইতে বলি নাই। বাড়ী তাহা বঝিল না। আমার মডেভোজনের জন্য যম পন্যঃ পানঃ নিমন্ত্রিত হইতে লাগিলেন। শনিয়া সভাষিণীর মেয়ে শেলাক পড়িল— “যে ডাকে যমে | তার পরমাই কমে। তার মাখে পড়কে ছাই । বাড়ী মরে যা না ভাই।” শেষে আমার সেই তিন বৎসর বয়সের জামাতা, একখানি রাঁধিবার চেলা কাঠ লইয়া গিয়া বাড়ীর পিঠে বসাইয়া দিল। বলিল, “আমাল চাচুলী।” তখন বাড়ী আছাড়িয়া পড়িয়া উচ্চৈঃস্বরে কাঁদিতে লাগিল। সে যত কাঁদে, আমার জামাই তাত হাততালি দিয়া নাচে, আর বলে, “আমাল চাচুলী, আমাল চাচুলী!” আমি গিয়া তাকে কোলে নিয়া, তার মািখচুম্বন করিলে তবে থামিল । দশম পরিচ্ছেদ ঃ আশোর প্রদীপ সেই দিন বৈকালে সভাষিণী আমার হাত ধরিয়া টানিয়া লইয়া গিয়া নিভৃতে বসাইল। বলিল, “বেহান! তুমি সেই কালােদীঘির ডাকাতির গলপটি বলিবে বলিয়াছিলে—আজিও বল नाई। उभाडा दल ना-*नि ।।” আমি অনেকক্ষণ ভাবিলাম। শেষে বলিলাম, “সে আমারই হতভাগ্যের কথা। আমার বাপ বড় মানষ, এ কথা বলিয়াছি। তোমার শবশরিও বড় মানষ—কিন্তু তাঁহার তুলনায় কিছই নহেন। আমার বাপ আজিও আছেন—তাঁহার সেই অতুল ঐশবষয্য এখনও আছে, আজিও তাঁহার W)Wり >