झेन्द्भ জীবলিতেছে, তিনি নিজের রপরাশিতে সমস্ত আলো করিয়া আছেন। আমিও শরবিদ্ধ; আনন্দে শরীর আপিলত হইল। যৌবন প্রাপিতর পর আমার এই প্রথম সর্বামিসম্পভাষণ। সে যে কি সখি, তাহা কেমন করিয়া বলিব ? আমি অত্যন্ত মািখরা-কিন্তু যখন প্রথম তাঁহার সঙ্গে কথা কহিতে গেলাম, কিছতেই কথা ফটিল না। কন্ঠরোধ হইয়া আসিতে লাগিল। সব্বাঙ্গ কাঁপিতে লাগিল। হৃদয়মধ্যে দীপ দািপ শব্দ হইতে লাগিল। রসনা শকাইতে লাগিল। কথা আসিল না বলিয়া কাঁদিয়া ফেললাম। সে অশ্রািজল তিনি বঝিতে পারিলেন না। তিনি বলিলেন, “কাঁদিলে কেন ? আমি ত তোমাকে ডাকি নাই—তুমি আপনি আসিয়াছ—তবে কাঁদা কেন ?" এই নিদারণ বাক্যে বড় মৰ্ম্মম পীড়া হইল। তিনি যে আমাকে কুলটা মনে করিতেছেন— ইহাতে চক্ষর প্রবাহ আরও বাড়িল। মনে করিলাম, এখন পরিচয় দিই—এ যন্ত্ৰণা আর সহ্য হয় না, কিন্তু তখনই মনে হইল যে, পরিচয় দিলে যদি ইনি না বিশ্ববাস করেন, যদি মনে করেন যে, “ইহার বাড়ী কালাদীঘি, অবশ্য আমার সত্ৰীহরণের ব্যুত্তান্ত শনিয়াছে, এক্ষণে ঐশবষ্যলোভে আমার সত্ৰী বলিয়া মিথ্যা পরিচয় দিতেছে৷”—তােহা হইলে কি প্রকারে ইহার বিশবাসী জনমাইব ? সতরাং পরিচয় দিলাম না। দীঘ নিশবাস ত্যাগ করিয়া, চক্ষর জল মাছিয়া, তাঁহার সঙ্গে কথোপকথনে প্রবত্ত হইলাম। অন্যান্য কথার পরে তিনি বলিলেন, “কালােদীঘি তোমার বাড়ী শনিয়া আমি আশ্চৰ্য্য হইয়াছি। কালােদীঘিতে যে এমন সন্দেরী জন্মিয়াছে, তাহা আমি সাবপেন ও জানিতাম না।” তাঁর চক্ষের প্রতি আমি লক্ষ্য করিতেছিলাম, তিনি বড় বিসময়ের সহিত আমাকে দেখিতেছিলেন। তাঁর কথার উত্তরে আমি নেকী সাজিয়া বলিলাম, “আমি সন্দরী না বান্দরী। আমাদের দেশের মধ্যে আপনার সন্ত্রীরই সৌন্দয্যের গৌরব।” এই ছলক্ৰমে তাঁহার সন্ত্রীর কথা পাড়িয়াই জিজ্ঞাসা করিলাম, “তাঁহার কি কোন সন্ধান পাওয়া গিয়াছে ?” উত্তর । না।—তুমি কত দিন দেশ হইতে আসিয়াছ ? আমি বলিলাম, “আমি সে সকল ব্যাপারের পরেই দেশ হইতে আসিয়াছি। তবে বোধ হয়, আপনি আবার বিবাহ করিয়াছেন।” উত্তর । না। বড় বড় কথায়, উত্তর দিবার তাঁহার অবসর দেখিলাম না। আমি উপযাচিকা, অভিসারিকা হইয়া আসিয়াছি,-আমাকে আদর করিবারও তাঁর অবসর নাই। তিনি সবিসময়ে আমার প্রতি চাহিয়া রহিলেন। একবারমাত্র বলিলেন, “এমন রােপ ত মানষের দেখি নাই।” সপত্নী হয় নাই, শনিয়া বড় আহাদ হইল। বলিলাম, “আপনারা যেমন বড়লোক, এটি তেমনই বিবেচনার কাজ হইয়াছে। নহিলে যদি এর পর আপনার সন্ত্রীকে পাওয়া যায়, তবে দাই সতীনে ঠেঙগাঠেঙ্গি বাধিবে।” তিনি মদ, হাসিয়া বললেন, “সে ভয় নাই। সে স্ত্রীকে পাইলেও আমি আর গ্রহণ করিব, এমন বোধ হয় না। তাহার। আর জাতি নাই বিবেচনা করিতে হইবে।” আমার মাথায় বজাঘাত হইল। এত আশা ভরসা সব নকেট হইল। তবে আমার পরিচয় পাইলে, আমাকে আপনি সত্ৰী বলিয়া চিনিলেও, আমাকে গ্রহণ করিবেন না! আমার এবারকার নারীজন্ম ব্যথা হইল। সাহস করিয়া জিজ্ঞাসা করিলাম, “যদি এখন তাঁহার দেখা পান, তবে কি করিবেন ?” তিনি অম্লানবদনে বলিলেন, “তাকে ত্যাগ করিব।” কি নিন্দদায়! আমি সতম্ভিত হইয়া রহিলাম। পথিবী আমার চক্ষে ঘরিতে লাগিল। সেই রাত্ৰিতে আমি সবমিশয্যায় বসিয়া তাঁহার অনিন্দিত মোহনমত্তি দেখিতে দেখিতে প্ৰতিজ্ঞা করিলাম, “ইনি আমায় সত্ৰী বলিয়া গ্রহণ করিবেন, নচেৎ আমি প্রাণত্যাগ করিব।” পঞ্চদশ পরিচ্ছেদ ঃ কুলের বাহির তখন সে চিন্তিত ভােব আমার দরি হইল। ইতিপকেবই বঝিতে পারিয়াছিলাম যে, তিনি আমার বশীভুত হইয়াছেন। মনে মনে কহিলাম, যদি গন্ডারের খড়গ-প্রয়োগে পাপ না থাকে, \D Գ Տ