পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৩৯৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

যািগলাঙগরীয় হিরন্ময়ী পড়িতে জানিতেন। তাহতে প্রথমেই নিজের নাম দেখিতে পাইয়া কোঁত, হলবিটি হইলেন। পড়িয়া দেখিলেন যে, যে অদ্ধাংশ আছে, তাহাতে কোন অৰ্থবোধ হয় না। কে কাহাকে লিখিয়াছিল, তাহাও কিছই বােঝা গেল না। কিন্তু তথাপি তাহা পড়িয়া হিরন্ময়ীর মহাভীতিসঞ্চার হইল। ছিন্ন পত্রখন্ড এইরােপ। জ্যোতিষী গণনা করিয়া দেখিলা হিরণ্যময়ী তুল্য সোণার পত্তলি।। বাহ হইলে ভয়ানক বিপদ । সর মাখ পরস্পরে। হইতে পারে হিরন্মযী কোন অজ্ঞাতু বিপদৰ আশঙ্কা করিয়া অত্যন্ত ভীতা হইলেন। কাহাকে কিছু না বলিয়া পত্রখন্ড তুলিয়া রাখিলেন। ङ्ङठौझ °ज्ञि८ष्छ् দই বৎসরের পর আরও এক বৎসর গেল। তথাপি পােরন্দরের সিংহল হইতে আসার কোন সংবাদ পাওয়া গেল না। কিন্তু হিরণ্যময়ীর হৃদয়ে তাঁহার মাত্তি পৰিববিৎ উত্তজবল ছিল। তিনি মনে মনে বঝিলেন যে, পােরন্দরও তাঁহাকে ভুলিতে পারেন নাই—নচেৎ এত দিন ফিরিতেন। এইরনুপে দাই আর একে তিন বৎসর গেলে, অকস্মাৎ এক দিন। ধনদাস বলিলেন যে, “চল, সপরিবারে কাশী যাইব । গাের দেবের নিকট হইতে তাঁহার শিষ্য আসিয়াছেন। গরদেব সেইখানে যাইতে অননুমতি করিয়াছেন। তথায় হিরণ্যময়ীর বিবাহ হইবে। সেইখানে তিনি পাত্র সিথর করিয়াছেন।” ধনদাস, পত্নী ও কন্যাকে লইয়া কাশী যাত্ৰা করিলেন। উপযক্ত কালে কাশীতে উপনীত হইলে পর, ধনদাসের গর, আনন্দস্বামী আসিয়া সাক্ষাৎ করিলেন। এবং বিবাহের দিন স্থির করিয়া যথাশাস্ত্র উদ্যোগ করিতে বলিয়া গেলেন। বিবাহের যথাশাস্ত্র উদ্যোগ হইল, কিন্তু ঘটা কিছই হইল না। ধনদাসের পরিবারস্থ ব্যক্তি ভিন্ন কেহই জানিতে পারিল না যে, বিবাহ উপস্থিত। কেবল শাস্ত্রীয় আচারসকল রক্ষা করা হইল মাত্র। বিবাহের দিন সন্ধ্যা উত্তীণ হইল——এক প্রহর রাত্রে লগ্ন, তথাপি গ'হে যাহারা সচরাচর থাকে, \g ভিন্ন আর কেহ নাই। প্রতিবাসীরাও কেহ উপস্থিত নাই। এ পয্যন্ত ধনদাস ভিন্ন গহস্থ কেহও জানে না যে, কে পাত্ৰ— কোথাকার পাত্র। তবে সকলেই জানিত যে, যেখানে আনন্দস্বামী বিবাহের সম্পবিন্ধ করিয়াছেন, সেখানে কখন আপাত্র স্থির করেন নাই। তিনি যে কেন পাত্রের পরিচয় ব্যক্ত করিলেন না, তাহা তিনিই জানেন—তাঁহার মনের কথা বঝিবে কে ? একটি গহে পারোহিত সম্প্রদানের উদ্যোগাদি করিয়া একাকী বসিয়া আছেন। বাহিরে ধনদাস একাকী বরের প্রতীক্ষা করিতেছেন। অন্তঃপরে কন্যাসজা করিয়া হিরণ্যময়ী বসিয়া আছেন—আর কোথাও কেহ নাই। হিরণ্যময়ী মনে মনে ভাবিতেছেন—“এ কি রহস্য! কিন্তু পােরন্দরের সঙ্গে যদি বিবাহ না হইল—তবে যে হয় তাহার সঙ্গে বিবাহ হউক।-—সে আমার স্বামী হইবে না।” এমন সময় ধনদাস কন্যাকে ডাকিতে আসলেন। কিন্তু তাঁহাকে সম্প্রদানের স্থানে লইয়া যাইবার পক্বে বস্ত্রের দ্বারা তাঁহার দই চক্ষঃ দঢ়তর বাঁধিলেন। হিরন্ময়ী কহিলেন, “ও কি পিতা ??? ধনদাস কহিলেন, “গর দেবের আজ্ঞা । তুমিও আমার আজ্ঞামত কায্য কর। মন্ত্ৰগলি মনে মনে বলিও।” শনিয়া হিরন্ময়ী কোন কথা কহিলেন না। ধনদাস দ্যুষ্টিহীনা কন্যার হস্ত ধরিয়া সম্প্রদানের সন্থানে লইয়া গেলেন। হিরন্ময়ী তথায় উপনীত হইয়া যদি কিছ দেখিতে পাইতেন, তাহা হইলে দেখিতেন যে, পােত্রও তাঁহার ন্যায় আবর্তনয়ন। এইরপ বিবাহ হইল। সেই স্থানে গর, পরোহিত এবং কন্যাকত্তা ভিন্ন আর কেহ ছিল না। বর কন্যা কেহ কাহাকে দেখিলেন না। শভদন্ডিট হইল না। هجه (ا