পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৪৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब७दकब ब्रष्न्बव्ी নবাব। কে খন করিয়াছে শনিয়াছ ? গর। প্ৰতাপ রায় নামক এক ব্যক্তি। নবাব । আচ্ছা করিয়াছে। তাহার দেখা পাইলে খেলোয়াৎ দিব। প্রতাপ রায় কোথায় ? গর। তাহাদিগের সকলকে বাঁধিয়া সঙ্গে করিয়া লইয়া গিয়াছে। সঙ্গে লইয়া গিয়াছে কি আজিমাবাদ পাঠাইয়াছে, ঠিক শনি নাই। নবাব। এতক্ষণ আমাকে এ সকল সম্পবাদ দাও নাই কেন ? গর। আমি এই মাত্র শানিলাম। এ কথাটি মিথ্যা। গরগণ খাঁ আদ্যোপােন্ত সকল জানিতেন, তাঁহার অনভিমতে আমিয়ট কদাপি মঙ্গের ত্যাগ করিতে পারিতেন না। কিন্তু গরগণ খাঁর দাইটি উদ্দেশ্য ছিল—প্রথম, দলনী মঙ্গেরের বাহির হইলেই ভাল; দ্বিতীয়, আমিয়ট একটা হস্তগত থাকা ভাল, ভবিষ্যতে তাহার দবারা উপকার ঘটিতে পরিবে । নবাব, গরগণ খাঁকে বিদায় দিলেন। গরগণ খাঁ যখন যান, নবাব তাঁহার প্রতি বক্র দটি নিক্ষেপ করিলেন। সে দক্ষিটর অর্থ এই, “যত দিন না যন্ধ সমাপত হয়, তত দিন তোমায় কিছ বলিব না--যাদ্ধকালে তুমি আমার প্রধান অস্ত্র। তার পর দলনী বেগমের ঋণ তোমার শোণিতে পরিশোধ করিব।” নবাব তাহার পর মীর মন্সীকে ডাকিয়া আদেশ প্রচার করিলেন যে, মরশিদাবাদে মহম্মদ তকি খাঁর নামে পরওয়ানা পাঠাও যে, যখন আমিয়টের নৌকা মরশিদাবাদে উপনীত হইবে, তখন তাহাকে ধরিয়া আবদ্ধ করে, এবং তাহার সঙ্গের বন্দিগণকে মন্ত করিয়া, হজারে প্রেরণ করে। সপস্ট যাদ্ধ না করিয়া কলে কৌশলে ধরিতে হইবে, ইহাও লিখিয়া দিও। পরওয়ানা তটপথে বাহকের হাতে যাউক—অগ্ৰে পহিছিবে। নবাব অন্তঃপরে প্রত্যাগমন করিয়া আবার শৈবলিনীকে ডাকাইলেন। বলিলেন, “এক্ষণে তোমার স্বামীকে মক্ত করা হইল না। ইংরেজেরা তাহাদিগকে লইয়া কলিকাতায় যাত্ৰা করিয়াছে। মরশিদাবাদে হাকুম পাঠাইলাম, সেখানে তাহাদিগকে ধরিবে। তুমি এখন—” শৈবলিনী হাত যোড় করিয়া কহিল, “বাচাল সত্ৰীলোককে মাতজনা করুন—এখন লোক পাঠাইলে ধরা যায় না কি ?” নবাব। ইংরেজাদিগকে ধরা অলপ লোকের কম নহে। অধিক লোক সশস্ত্ৰে পাঠাইতে হইলে, বড় নৌকা চাই। ধরিতে ধরিতে তাহারা মরাশিদাবাদ পৌছিবে। বিশেষ যন্ধের উদ্যোগ দেখিয়া, কি জানি যদি ইংরাজেরা আগে বন্দী দিগকে মারিয়া ফেলে। মরশিদাবাদে সচিত্র কমচারীসকল আছে, তাহারা কলে কৌশলে ধরিবে । শৈবালনী বঝিল যে, তাঁহার সন্দের মখখানিতে অনেক উপকার হইয়াছে। নবাব তাঁহার সন্দর মখখানি দৈখিয়া, তাঁহার সকল কথা বিশ্ববাস করিয়াছেন, এবং তাঁহার প্রতি বিশেষ দয়া প্রকাশ করিতেছেন। নহিলে এত কথা বঝাইয়া বলিবেন কেন ? শৈবলিনী সাহস পাইয়া আবার হাত যোড় করিল। বলিল, “যদি এ অনাথাকে এত দয়া করিয়াছেন, তবে আর একটি ভিক্ষা মাতজনা করবেন। আমার স্বামীর উদ্ধার অতি সহজ-তিনি স্বয়ং বীরপরিষ। তাঁহার হাতে অস্ত্ৰ থাকিলে তাঁহাকে ইংরেজ কয়েদ করিতে পারিত না—তিনি যদি এখন হাতিয়ার পান, তবে তাঁহাকে কেহ কয়েদ রাখিতে পরিবে না। যদি কেহ তাঁহাকে অস্ত্ৰ দিয়া আসিতে পারে, তবে তিনি স্বয়ং মন্ত হইতে পারিবেন, সঙগী দিগকে মন্ত করিতে পরিবেন।” নবাব হাসিলেন, বলিলেন, “তুমি বালিকা, ইংরেজ কি, তাহা জান না। কে তাঁহাকে সে ইংরেজের নৌকায় উঠিয়া অস্ত্ৰ দিয়া আসিবো ?” শৈবলিনী মািখ নত করিয়া, অসফটস্বরে বলিলেন, “যদি হকুম হয়, যদি নৌকা পাই, তবে আমিই যাইব ।” নবাব উচ্চহাস্য করিলেন। হাসি শনিয়া শৈবলিনী ভ্ৰ, কুণ্ডিত করিল, বলিল, “প্ৰভু! না। পারি। আমি মরিব—তাহাতে কাহারও ক্ষতি নাই। কিন্তু যদি পারি, তবে আমারও কাৰ্য্যসিদিধ হইবে, আপনারও কাৰ্য্যসিদ্ধি হইবে।” নবাব শৈবলিনীর কুণ্ডিত ভ্ৰশোভিত মখমন্ডল দেখিয়া বঝিলেন, এ সামান্যা সন্ত্রীলোক 8Ꮼ Ꮪ>