পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৪৪৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

वर्ग७का ब्रष्नाबव्ी লাগিল, পতিগন্ধ বাড়িতে লাগিল—অকস্মাৎ সজ্ঞানমতা শৈবলিনী দরে নরক দেখিতে পাইল। তাহার পরেই তাহার চক্ষ অন্ধ, কণ বধির হইল, তখন সে মনে মনে চন্দ্রশেখরের ধ্যান করিতে লাগিল, মনে মনে ডাকিতে লাগিল,--“কোথায় তুমি, স্বামী ! কোথায় প্ৰভু! সত্ৰীজাতির জীবনসহায় আরাধনার দেবতা, সব্বে সৰ্ব্ববর্তমঙ্গল! কোথায় তুমি চন্দ্রশেখর ! তোমার চরণারবিনোদ সহস্ৰ, সহস্ৰ, সহস্ৰ, সহস্র প্রণাম । আমায় রক্ষা করা। তোমার নিকটে অপরাধ করিয়া, আমি এই নরককুন্ডে পতিত হইতেছি—তুমি রক্ষা না করিলে কোন দেবতায় আমায় রক্ষা করিতে পারে না—আমায় রক্ষা করা। তুমি আমায় রক্ষা কর, প্রসন্ন হও, এইখানে আসিয়া চরণযগল আমার মস্তকে তুলিয়া দাও, তাহা হইলেই আমি নরক হইতে উদ্ধার পাইব ।” তখন, অন্ধ, বধির, মতা শৈবলিনীর বোধ হইতে লাগিল যে, কে তাহাকে কোলে করিয়া বসাইল—তাঁহার অঙ্গের সৌরভে দিক পরিল। সেই দািরন্ত নরক-রব সহসা অন্তহিত হইল, পতিগন্ধের পরিবত্তে কুসমগন্ধ ছটিল। সহসা শৈবলিনীর বধিরতা, ঘচিল—চক্ষ আবার দশ নক্ষম হইল-সহসা শৈবলিনীর বোধ হইল-–এ মাতৃত্যু নহে, জীবন ; এ স্বপন নহে, প্রকৃত । শৈবলিনী চেতনাপ্রাপিত হইল । চক্ষরন্মীলন করিয়া দেখিল, গহামধ্যে অলপ আলোক প্রবেশ করিয়াছে; বাহিরে পক্ষীর প্রভাতকজন শানা যাইতেছে--কিন্তু এ কি এ ? কাহার অঙ্কে তাঁহার মাথা রহিয়াছে।--কাহার মাখমন্ডল, তাঁহার মস্তকোপারে, গগনোদিত পণচন্দ্রবৎ এ প্রভাতান্ধিকারকে আলোক বিকীর্ণ কবিতেছে ? শৈবলিনী চিনিলেন, চন্দ্রশেখর-ব্রহ্মচারী-বেশে চন্দ্রশেখর ! bङ्थ °झिठष्छ्न 8 6न्मोंका फुदिब्न চন্দ্রশেখর বলিলেন, “শৈবলিনী!” শৈবলিনী উঠিয়া বসিল, চন্দ্রশেখরের মািখপানে চাহিল; মাথা ঘরিল ; শৈবলিনী পড়িয়া গেল ; মািখ চন্দ্রশেখরের চরণে ঘাষিত হইল। চন্দ্রশেখর তাহাকে ধরিয়া তুলিলেন। তুলিয়া আপন শরীরের উপর ভর করিয়া শৈবলিনীকে বসাইলেন। শৈবলিনী কাঁদিতে লাগিল, উচ্চৈঃস্বরে কাঁদিতে কাঁদিতে, চন্দ্রশেখরের চরণে পািনঃ পতিত হইয়া বলিল, “এখন আমার দশা কি হইবে!” চন্দ্রশেখর বলিলেন, “তুমি আমাকে দেখিতে চাহিয়াছিলে কেন ?” শৈবলিনী চক্ষ মাছিল, রোদন সম্পবরণ করিল—স্থির হইয়া বলিতে লাগিল, “বোধ হয়। আমি আর অতি অলপ দিন বাঁচিব।” শৈবলিনী শিহরিল—স্বপনদন্ডটি ব্যাপার মনে পড়িল-ক্ষণেক কপালে হাত দিয়া, নীরব থাকিয়া আবার বলিতে লাগিল, “অলপ দিন বাঁচিব—মরিবার আগে তোমাকে একবার দেখিতে সাধ হইয়াছিল। এ কথায় কে বিশ্ববাস করিবে ? কেন বিশদ্বাস করিবে ? যে ভ্ৰমেটা হইয়া সবামী ত্যাগ করিয়া আসিয়াছে, তাহার। আবার স্বামী দেখিতে সাধ কি ?” শৈবলিনী কাতরতার বিকট হাসি হাসিল । চন্দ্ৰ। তোমার কথায় অবিশ্ববাস নাই——আমি জানি যে, তোমাকে বলপক্বক ধরিয়া আনিয়াছিল। X শৈ। সে মিথ্যা কথা। আমি ইচ্ছাপবিবেক ফন্টরের সঙ্গে চলিয়া আসিয়াছিলাম। ডাকাইতির পকেব ফন্টর আমার নিকট লোক প্রেরণ করিয়াছিল। চন্দ্রশেখর অধোবাদন হইলেন। ধীরে ধীরে শৈবলিনীকে পনেরপি, শায়াইলেন ; ধীরে ধীরে গাত্ৰোথান করিলেন, গমনোন্মখ হইয়া, মদ-মধর স্বরে বলিলেন, “শৈবলিনী, দাবাদশ বৎসর প্রায়শিচত্ত কর। উভয়ে বাঁচিয়া থাকি, তবে প্রায়শিচত্তান্তে আবার সাক্ষাৎ হইবে। এক্ষণে এই পষ্যানত৷ ৷ ” শৈবলিনী হাতযোড় করিল;—বলিল, “আর একবার বসো ! বোধ হয়, প্ৰায়শ্চিত্ত আমার আদলেট নাই।” আবার সেই স্বপন মনে পড়িল—“বসো-তোমায় ক্ষণেক দেখি।” । চন্দ্রশেখর বসিলেন। শৈবলিনী জিজ্ঞাসা করিল, “আত্মহত্যায় পাপ আছে কি ?” শৈবলিনী স্থিরদমোট চন্দ্রশেখরের প্রতি চাহিয়াছিল, তাঁহার প্রফাল্ল নয়নপদ্ম জলে ভাসিতেছিল। 88bf