পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৪৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

চন্দ্ৰশেখর সাক্ষীদিগের কোন সন্ধান নাই, এবং ফািটরও নিজকায্যের অনেক ফলভোগ করিয়াছে, এই ভাবিয়া তাহাতে বিরত হইলেন। ফন্ডটির তাহা বঝিল না। ফন্টের অত্যন্ত ক্ষ-দ্রাশয়। সে মনে করিল, তাহার লঘােপাপে গােরাদন্ড হইয়াছে। সে ক্ষমাদ্রাশয়, অপরাধী ভূতাদিগের সর্বভাবানসারে পািব্ব প্ৰভুদিগের প্রতি বিশেষ কোপাবিভ্ৰাট হইল। তাহাদিগের বৈবিতাসাধনে কৃতসঙকলপ হইল। ডাইস সম্পর্বর নামে এক জন সাইস বা জাম্মান মীরকাসেমের সেনাদলমধ্যে সৈনিক-কায্যে নিযক্ত ছিল। এই ব্যক্তি সমর নামে বিখ্যাত হইয়াছিল। উদয়নালায় যবন-শিবিরে সমর সৈন্য লইয়া উপস্থিত ছিল। ফন্টর উদয়নালায় তাহার নিকট আসিল। প্রথমে কৌশলে সমর্যর নিকট দতে প্রেরণ করিল। সমর মনে ভাবিল, ইহার দ্বারা ইংরেজ দিগের গপত মন্ত্রণা সকল জানিতে পারিব। সমব, ফন্টরকে গ্রহণ করিল। ফন্টর আপনি নাম গোপন করিয়া, জন ভট্যালকার্ট বলিয়া আপনার পরিচয় দিয়া সমর্যর শিবিরে প্রবেশ করিল। যখন আমীর হোসেন ফল্টরের অন্যসন্ধানে নিযক্ত, তখন লরেন্স ফন্টর সমর্যর তামবতে। আমীর হোসেন, কুল সামকে যথাযোগ্য সন্থানে রাখিয়া, ফস্টরের অন্যসন্ধানে নিগত হইলেন। অনচরবগের নিকট শনিলেন যে, এক আশ্চৰ্য্য কান্ড ঘটিয়াছে, একজন ইংরেজ আসিয়া মসলমান সৈন্যভুক্ত হইয়াছে। সে সমরর শিবিরে আছে। আমীর হোসেন সমরর শিবিরে গেলেন । যখন আমীর হোসেন সমর্যর তাম্পবতে প্রবেশ করিলেন, তখন সমর, ও ফন্টের একত্রে কথাবাত্তা কহিতেছিলেন। আমীর হোসেন আসন গ্ৰহণ করিলে সমর জন ভট্যালকাটা বলিয়া তাঁহার নিকট ফন্সটরের পরিচযা দিলেন। আমীর হোসেন অট্যালকাটের সঙ্গে কথোপকথনে প্রবত্ত হইলেন। আমীর হোসেন, অন্যান্য কথার পর শুট্যালকাটাকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “লরেন্স ফন্টর নামক একজন ইংরেজকে আপনি চিনেন ?” ফভাটরের মািখ রক্তবর্ণ হইয়া গেল। সে মাত্তিকাপানে দাম্পিট করিয়া কিঞ্চিৎ বিকৃতকণ্ঠে কহিল, “লরেন্স ফাস্টর ? কই--না।” আমীর হোসেন, পািনরপি জিজ্ঞাসা করিল, “কখন তাহার নােম শনিয়াছেন ?” ফন্টর কিছ. বিলম্ব করিয়া উত্তর করিল, “নাম—-লরেন্স ফন্টর—-হাঁ-—কই ? না।” আমীর হোসেন আর কিছ: বলিলেন না, অন্যান্য কথা কহিতে লাগিলেন। কিন্তু দেখিলেন, ভট্যালকাটা আর ভাল করিয়া কথা কহিতেছে না। দই এক বার উঠিয়া যাইবার উপক্ৰম করিল। আমীর হোসেন অননুরোধ করিয়া তাহাকে বসাইলেন। আমীর হোসেনের মনে হুইতেছিল যে, এ ফন্ডটরের কথা জানে, কিন্তু বলিতেছে না। ফন্ডটর কিয়ৎক্ষণ পরে আপনার টপি লইয়া মাথায় দিয়া বসিল। আমীর হোসেন জানিতেন। যে, এটি ইংরেজ দিগের নিয়মবহি ভূত কাজ। আরও. যখন ফন্টর টপি মাথায় দিতে যায়, তখন তাহার শিরস্থ কেশশান্য আঘাত-চিহ্নের উপব দটি পড়িল। ভট্যালকার্ট কি আঘাত-চিহ্ন ঢাকিবার জন্য টপি মাথায় দিল ! ". আমীর হোসেন বিদায় হইলেন। আপনি শিবিরে আসিয়া কুলসম্যকে ডাকিলেন; তাহাকে বলিলেন, “আমার সঙ্গে অায়।” কুলসম তাঁহার সঙ্গে গেল । কুলসমকে সঙেগ লইয়া আমীর হোসেন পানববার সমর্যর তামবতে উপস্থিত হইলেন। কুলসম বাহিরে রহিল। ফন্টর তখন সমরর তামবতে বসিয়াছিল। আমীর হোসেন সমরকে বলিলেন, “যদি আপনার অননুমতি হয়, তবে আমার একজন বাদী আসিয়া আপনাকে সেলাম করে। বিশেষ কায্য আছে।” সমর, অনািমতি দিলেন। ফন্টরের হৃৎকম্প হইল—সে গাত্ৰোখান করিল। আমীর হোসেন হাসিয়া হাত ধরিয়া তাহাকে বসাইলেন। কুলসম্যকে ডাকিলেন। কুলসম আসিল। ফন্টরকে দেখিয়া নিসপন্দ হইয়া দাঁড়াইল । কুলসম বলিল, “লরেন্স ফন্টর।” আমীর হোসেন ফল্সটরের হাত ধরিলেন। ফন্টর বলিল, “আমি কি করিয়াছি ?” 8 V (t V) O