পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৪৭২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

b८ নবাব তাক খাঁর প্রতি দক্ষিটপাত না করিয়া বলিলেন, “কুলসম! বল, তুমি মঙ্গের হইতে কি প্রকারে কলিকাতায় গিয়াছিলে ?” তুমি কুলসম, আন পঝিবাক সকল বলিল। দলনী বেগমের বক্তান্ত সকল বলিল। বলিয়া যোড়হসেত, সজলনয়নে, উচ্চৈঃস্বরে বলিতে লাগিল, “জহিপনা! আমি এই আমি দরবারে, এই পাপিষ্ঠ, সত্ৰীঘাতক মহম্মদ তাঁকির নামে নালিশ করিতেছি, গ্রহণ করােন! সে আমার প্রভুপত্নীর নামে মিথ্যা অপবাদ দিয়া, আমার প্রভুকে মিথ্যা প্রবণ8না করিয়া, সংসারের সন্ত্রীরত্নসার দলনী বেগমকে পিপীলিকাবৎ অকাতরে হত্যা করিয়াছে—জাঁহাপনা ! পিপীলিকাবৎ এই নিরাধমকে অকাতরে হত্যা করনি।” মহম্মদ তাকি রন্ধকণ্ঠে বলিল, “মিথ্যা কথা—তোমার সাক্ষী কে ?” কুলসম, বিসফারিতলোচনে, গজন করিয়া বলিল, “আমার সাক্ষী! উপরে চাহিয়া দেখ —আমার সাক্ষী জগদীশবর! আপনার বকের উপর হাত দে—আমার সাক্ষী তুই।—যদি আর কাহারও কথার প্রয়োজন থাকে, এই ফিরিওগনীকে জিজ্ঞাসা কর।” ন। কেমন, ফিরিঙগী, এই বাঁদী যাহা যাহা বলিতেছে, তাহা কি সত্য ? তুমিও ত অমিয়টের সঙেগী ছিলে—ইংরেজ সত্য ভিন্ন বলে না। ফন্টর যাহা জানিত, সাবরােপ বলিল। তাহাতে সকলেই বঝিল, দলনী অনিন্দনীয়া। তাঁকে অধোবাদন হইয়া রহিল। তখন, চন্দ্রশেখর কিঞ্চিৎ অগ্রসর হইয়া বলিলেন, ‘ধৰ্ম্মমােবতার! বাঁদীর কথা যে সত্য, আমিও তাহার একজন সাক্ষী। আমি সেই ব্ৰহ্মচারী।” কুলসম, তখন চিনিল। বলিল, “ইনিই বটে।” তখন চন্দ্রশেখর বলিতে লাগিলেন, “রাজন, যদি এই ফিরিঙগী সত্যবাদী হয়, তবে উহাকে আর দই একটা প্রশন করুন।” নবাব বঝিলেন, —বলিলেন, “তুমিই প্রশন কর।--দিবভাষীতে বৰ্ব্বাইয়া দিবে।” চন্দ্রশেখর জিজ্ঞাসা করিলেন, “তুমি বলিয়াছ চন্দ্রশেখর নাম শানিয়াছ—আমি সেই চন্দ্রশেখর। তুমি তাহার-” চন্দ্রশেখরের কথা সমাপত হইতে না হইতে ফন্টের বলিল, “আপনি কািট পাইবেন না। আমি স্বাধীন—মরণ ভয় করি না। এখানে কোন প্রশেনর উত্তর দেওয়া না দেওয়া আমার ইচ্ছা। আমি আপনার কোন প্রশেনর উত্তর দিব না।” নবাব অনািমতি করিলেন, “তবে শৈবলিনীকে আনি।” , শৈবলিনী আনীত হইল। ফন্টর প্রথমে শৈবলিনীকে চিনিতে পারিল না—শৈবলিনী রগনা, শীর্ণ, মলিনা- জীণ সঙ্কীর্ণ বাসপরিহিতা- অরঞ্জিতকুন্তলা—ধলিধসরা। গায়ে খড়ি— মাথায় ধলি,—চুল আলাথাল,—মখে পাগলের হাসি-চক্ষে পাগলের জিজ্ঞাসাব্যঞ্জক দটি। ফন্টর শিহরিল। নবাব জিজ্ঞাসা করিলেন, “ইহাকে চেন ?” ফ। চিনি। 不 l a びー ? ফ। শৈবলিনী,-চন্দ্রশেখরের পত্নী । ন। তুমি চিনিলে কি প্রকারে ? ফ। আপনার অভিপ্ৰায়ে যে দন্ড থাকে-অন-মতি করন -আমি উত্তর দিব না। ন। আমার অভিপ্রায়, কুক্কােরদংশনে তোমার মাতৃত্যু হইবে। ফক্সটরের মািখ বিশক্ষক হইল—হস্ত পদ কাঁপিতে লাগিল। কিছফক্ষণে ধৈৰ্য্য প্রাপ্তত হইল —বলিল, “আমার মাতুই যদি আপনার অভিপ্রেত হয়—অন্য প্রকার মাতৃ আজ্ঞা করনি।” ন। না। এ দেশে একটি প্রাচীন দন্ডের কিম্বদন্তী আছে। অপরাধীকে কটি পয্যন্ত মাত্তিকামধ্যে প্রোথিত করে—তাহার পরে তাহাকে দংশনাথ শিক্ষিত কুক্কর নিযক্ত করে। কুক্কারে দংশন করিলে, ক্ষতমখে লবণ বান্টি করে। কুক্করেরা মাংসভোজনে পরিতৃপ্তত হইলে চলিয়া যায়, অন্ধভক্ষিত অপরাধী আদর্ধমত্ত হইয়া প্রোথিত থাকে-কুক্কারদিগের ক্ষধা হইলে ܠ dܘ 8