পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৪৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब्राक्षाद्भावी হাঁ গা, এমন করিয়া কি কথা কহা যায় গা ? যাহার গলা ধরিয়া কাঁদিতে ইচ্ছা করিতেছে ; প্ৰাণেশ্ববর! দঃখিনীর সব সব! চিরবাঞ্ছিত! বলিয়া যাহাকে ডাকিতে ইচ্ছা করিতেছে; আবার যাকে সেই সঙ্গে “হাঁ গা, সেই রাধারাণী পোড়ারমখী তোমার কে হয় গা” বলিয়া তামাসা করিতে ইচ্ছা করিতেছে—তার সঙ্গে আপনি, মশাই, দশন দিয়াছেন, এই সকল কথা নিয়ে কি কথা কহা যায় গা ? তোমরা পাঁচ জন রসিকা, প্রেমিকা, বাকচতুরা, বয়োধিকা ইত্যাদি ইত্যাদি আছ, তোমায়া পাঁচ জন বল দেখি, ছেলেমানষে রাধারাণী কেমন করে এমন করে কথা কয় গা ? রাধারাণী মনে মনে একটা পরিতাপ করিল ; কেন না, কথাটা একটা ভৎসিনার মত হইল। রব্বিাণীকুমার একটি অপ্রতিভ হইয়া বলিলেন, —“তাই বলিতেছিলাম। আমি সেই রাধারাণীকে চিনিতাম—রাধারাণীকে মনে পড়িল, একট—এতটকু—অন্ধকার রাত্রে জোনাকির ন্যায়-একটা আশা হইল যে, যদি এই রাধারাণী আমার সেই রাধারাণী হয়!” “তোমার রাধারাণী।” রাধারাণী ছল ধরিয়া চুপি চুপি এই কথাটি বলিয়া, মািখ নত করিয়া পুঃ সুখ, হাসিল। হাঁ গা, না হেসে কি থাকা যায় গা ? তোমরা আমার রাধারণীর নিন্দা কTরও না । রক্ষ্মিণীকুমারও মনে মনে ছল ধরিল-এ তুমি বলে কেন ? কে এ ? প্রকাশ্যে বলিল, “আমারই রাধারাণী । আমি একরান্ত্রি মাত্র তাহাকে দেখিয়া—দেখিয়াছিই বা কেমন করিয়া বলি —এই আট বৎসরেও তাহাকে ভুলি নাই। আমারই রাধারাণী।” রাধারাণী বলিল, “হোক আপনারই রাধারাণী ।” রকিঙ্কণী বলিতে লাগিলেন, “সেই ক্ষদ্র আশায় আমি কামাখ্যা বাবার জ্যোিঠ পত্রকে জিজ্ঞাসা করিলাম, রাধারাণী কে ? কামাখ্যা বাবর পত্ৰ সবিস্তারে পরিচয দিতে বোধ হয় অনিচ্ছক ছিলেন ; কেবল বলিলেন, “আমাদিগের কোন আত্মীয়ার কন্যা।” যেখানে তাঁহাকে অনিচ্ছক দেখিলাম, সেখানে আর অধিক পীড়াপীড়ি করিলাম না, কেবল জিজ্ঞাসা করিলাম, রাধারাণী কেন রক্সিণীকুমারের সন্ধান করিয়াছিলেন, শনিতে পাই কি ? যদি প্রয়োজন হয় তা বোধ করি, আমি কিছর সন্ধান দিতে পারি। আমি এই কথা বলিলে, তিনি বলিলেন, ‘কেন। রাধারাণী রক্সিাণীকুমারকে খাজিয়াছিলেন, তাহা আমি সবিশেষ জানি না; আমার পিতৃ ঠাকুর জানিতেন; বোধ করি, আমার ভগিনীও জানিতে পারেন। যেখানে আপনি সন্ধান দিতে পারেন বলিতেছেন, সেখানে আমার ভগিনীকে জিজ্ঞাসা করিয়া আসিতে হইতেছে।” এই বলিয়া তিনি উঠিলেন। প্রত্যাগমন করিয়া তিনি আমাকে যে পত্র দিলেন, সে পত্র আপনাকে দিয়াছি। তিনি আমাকে সেই পত্ৰ দিয়া বলিলেন, আমার ভগিনী সবিশেষ কিছ ভাঙিগয়া চুরিয়া বলিলেন না, কেবল এই পত্র দিলেন, আর বলিলেন যে, এই পত্ৰ লইযা তাঁহাকে স্বয়ং রাজপরে যাইতে বলনে। রাজপরে যিনি অন্নসত্ৰ দিয়াছেন, তাঁহার সঙেগ সাক্ষাৎ করিতে বলিবেন । আমি সেই পত্ৰ লইয়া আপনার কাছে আসিয়াছি। কোন অপরাধ করিয়াছি কি ?” রাধারাণী বলিল, “জানি না। বোধ হয় যে, আপনি মহাভ্ৰমে পতিত হইয়া এখানে আসিয়াছেন। আপনার রাধারাণী কে, তাহা আমি চিনি না, বলিতে পারিতেছি না। সে কথা কি, শনিলে বলিতে পারি, আমা হইতে তাহার কোন সন্ধান পাওয়া যাইবে ক না । ” রব্বিাণী সেই রথের কথা সবিস্তারে বলিলেন, কেবল নিজদত্ত অৰ্থ বস্ত্রের কথা কিছ বলিলেন না। রাধারাণী বলিলেন—“সপটে কথা মাজজনা করিবেন। আপনাকে রাধারাণীর কোন কথা বলিতে সাহস হয় না; কেন না, আপনাকে দয়াল লোক বোধ হইতেছে না। যদি আপনি সেরােপ দয়ােদ্র চিত্ত হইতেন, তাহা হইলে আপনি যে ভিখারী বালিকার কথা বলিলেন, তাহাকে আমন দাদা শাপন্ন দেখিয়া অবশ্য তার কিছ, আনকল্যা করিতেন। কই, আনকল্য করার কথা ত কিছ বলিলেন না। ?” রক্ষ্মিণীকুমার বলিলেন, “আনকল্য বিশেষ কিছই করিতে পারি নাই। আমি সে দিন নৌকাপথে রথ দেখিতে আসিয়াছিলাম—-পাছে কেহ জানিতে পারে, এই জন্য ছদ্মবেশে রব্বিাণীকুমার রায় পরিচয়ে ল্যুকাইয়া আসিয়াছিলাম—অপরাহে ঝড় বন্ডিট হওয়ায় বোটে থাকিতে সাহস না করিয়া একা তটে উঠিয়া আসিয়াছিলাম। সঙ্গে যাহা অলপ ছিল, তাহা রাধারাণীকেই দিয়াছিলাম; কিন্তু সে অতি সামান্য। পরদিন প্রাতে আসিয়া উহাদিগের বিশেষ সংবাদ লাইব 8 fÓ