পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৪৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

व७का ब्रा5नादब्ली খেলনার দোকান ছিল। সে কায়স্থ—আমরাও কায়স্থ—এজন্য একটা আত্মীয়তা হইয়াছিল। কালীবসর একটি চারি বৎসরের শিশপত্র ছিল। তাহার নাম বামাচরণ। বামাচরণ সৰ্ব্ববাদা আমাদের বাড়ীতে আসিত। একদিন একটা বর বাজনা বাজাইয়া মন্দগামী ঝড়ের মত আমাদিগের বাড়ীর সম্পমখ দিয়া যায়। দেখিয়া বামাচরণ জিজ্ঞাসা করিল, “ও কেও ?” আমি বলিলাম, ‘ও বর।” বামাচরণ তখন কান্নয়া আরম্ভ করিল—“আমি বল হব।” তাহাকে কিছতেই থামাইতে না পারিয়া বলিলাম, কাদিস না—“তুই আমার বর।” এই বলিয়া একটা সন্দেশ তাহার হাতে দিয়া জিজ্ঞাসা করিলাম, “কেমন, তুই আমার বর হবি ?” শিশ, সন্দেশ হাতে পাইয়া, রোদন সম্পবরণ করিয়া বলিল, “হ’ব ।” সন্দেশ সমাপত হইলে, বালক ক্ষণেককাল পরে কহিল, “হাঁ গা, বলে কি কলে গা ?” বোধ হয়, তাহার ধ্রুব বিশ্ববাস জন্মিয়াছিল যে, বরে বঝি কেবল সন্দেশই খায়। যদি তা হয়, তবে সে আর একটা আরম্ভ করিতে প্রস্তুত। ভােব বঝিয়া আমি বলিলাম, “বরে ফলগলি গছিয়ে দেয়।” বামাচরণ সবামীর কত্ত ব্যাকত্তব্য বঝিয়া লইয়া, ফালগলি আমার হাতে গছাইয়া তুলিয়া দিতে লাগিল। সেই অবধি আমি তাহাকে বর বলি-—সে আমাকে ফল গছাইয়া দেয়। আমার এই দই বিবাহ—এখন এ কালের জটিলা কুটিলাদিগকে আমার জিজ্ঞাস্য-আমি সতী বলাইতে পারি কি ? দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ বড়বাড়ীতে ফল যোগান বড় দায়। সে কালের মালিনী মাসী রাজবাটীতে ফল যোগাইয়া মশানে গিয়াছিল। ফলের মধ্য খেলে বিদ্যাসন্দর, কিল খেলে হীরা মালিনী—কেন না, সে বড়বাড়ীতে ফল যোগাইত। সন্দবের সেই রামরাজ্য হইল—কিন্তু মালিনীর কিল আর ফিরিল না। বাবা তা “বেলফল” হাকিয়া, রসিক মহলে ফল বেচিতেন, মা দই একটা অরসিক মহলে ফল নিত্য যোগাইতেন। তাহার মধ্যে রামসদয় মিত্রের বাড়ীই প্রধান । রামসদয় মিত্রের সাড়ে চারিটা ঘোড়া ছিল।--(নাতিদের একটা পণি, আর আদিত চারিটা) সাড়ে চারিটা ঘোড়াআর দেড়খানা গাঁহিণী। একজন আদিত—একজন চিররগনা এবং প্রাচীনা। তাঁহার নাম ভুবনেশবরী—কিন্তু তাঁর গলার সাঁই সাঁই শবদ শনিয়া রামমণি ভিন্ন অন্য নাম আমার মনে उआञ्निऊँ •ा । আর যিনি পরা একখানি গহিণী, তাঁহাব নাম লবঙ্গলতা। লবঙ্গলতা লোকে বলিত, কিন্তু তাঁহার পিতা নাম রাখিয়াছিলেন ললিতলবঙ্গলতা, এবং রামসদয় বাব আদর করিয়া বলিতেন-ললিত-লবঙ্গলতা-পরিশীলন-কোমল-মালয়-সামীরে। রামসদয় বােব প্রাচীন, বয়ঃক্রম ৬৩ বৎসর। ললিত লবঙ্গলতা নবীনা, বয়স ১৯ বৎসর, দিবতীয় পক্ষের সত্ৰী-আদরের আদরিণী, গৌরবের গৌরবিণী, মানের মানিনী, নয়নের মণি, ষোল আনা গহিণী। তিনি রামসদায়ের সিন্দকের চাবি, বিছানার চাদর, পানের চণ, গোলাসের জল। তিনি রামসদায়ের জন্বরে কুইনাইন, কাসিতে ইপিকা, বাতে ফ্ল্যানেল এবং আরোগ্যে সরয়া। নয়ন নাই—ললিতলবঙ্গলতাকে কখন দেখতে পাইলাম না—কিন্তু শনিয়াছি, তিনি রাপসী । রােপ যাউক, গণ শনিয়াছি। লবঙ্গ বাস্তবিক গণিবতী। গহকায্যে নিপণা, দানে মক্তহস্তা, হৃদয়ে সরলা, কেবল বাক্যে বিষময়ী। লবঙ্গলতার অশেষ গণের মধ্যে, একটি এই যে তিনি বাস্তবিক পিতামহের তুল্য সেই সবামীকে ভালবাসিতেন—কোন নবীনা নবীন স্বামীকে সেরাপ ভালবাসেন কি না সন্দেহ। ভালবাসিতেন বলিয়া, তাঁহাকে নবীন সাজাইতেন—সে সজার রস কাহাকে বলি ? আপনি হস্তে নিত্য শত্ৰ কেশে কলপ মাখাইয়া কেশগলি রঞ্জিত করিতেন। যদি রামসদয় লজার অন্যুরোধে কোন দিন মলমলের ধতি পরিত, স্বহস্তে তাহা ত্যাগ করাইয়া কোকিলপেড়ে, ফিতে পেড়ে, কলকাপোড়ে পরাইয়া দিতেন—মলমলের ধতিখানি তৎক্ষণাৎ বিধবা দরিদ্রদিগকে বিতরণ করিতেন। রামসদয় প্রাচীন বয়সে, আতরের শিশি দেখিলে ভয়ে পলাইত—লবঙগলতা, তাহার নিদ্রিতাবস্থায় সর্ববৰ্ণাণ্ডেগ আন্তর মাখাইয়া দিতেন। রামসদায়ের চশমাগলি লবঙ্গ প্রায় চুরি করিয়া ভাঙ্গিয়া ফেলিত, সোণাটকু লইয়া, যাহার কন্যার বিবাহের 8为良