পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৪৯৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙ্কিম রচনাবলী কাণা চোখে শব্দভেদী বাণ মারিলাম। ছোট বাবর মনের মত হইল না। তিনি আমার দাড়ি ধরিয়া, মািখ ফিরাইলেন। ডাক্তারির কপালে আগন জেবুলে দিই। সেই চিবকিস্পশোঁ আমি মরিলাম! সেই সপশ পশুপময়। সেই সপশোঁ যথেী, জাতি, মল্লিকা, শেফালিকা, কামিনী, গোলাপ, সেউতি—-সব ফলের ঘােণ পাইলাম। বোধ হইল, আমার আশে পাশে ফলে, আমার মাথায় ফল. আমার পায়ে ফল, আমার পরণে ফল, আমার বকের ভিতরে ফলের রাশি। আ মরি মরি! কোন বিধাতা এ কুসমময় সপশ গড়িয়াছিল! বলিয়াছি ত কাণার সখ দঃখ তোমরা বঝিবে না। আ মারি মরি-সে নবনীত-সংকুমার—পক্ষপগন্ধময় বীণাধানিবৎ সপশ ! বীণাধৰনিত্যুবৎ সপশ, যার চোখ আছে, সে বঝিবে কি প্রকারে ? আমার সখ দঃখ আমাতেই থাকুক। যখন সেই সপশ মনে পড়িত, তখন কত বীণাধৰনি কৰ্ণে শনিতাম, তাহা তুমি, বিলোলকাটােক্ষ কুশলিনি ! কি বঝিবে ? ছোট বােব বলিলেন, “না, এ কাণা সারিবার নয়।” আমার ত সেই জন্য ঘািম হইতেছিল না। লবঙ্গ বলিল, “তা না। সারক, টাকা খরচ করিলে কাণার কি বিয়ে হয় না ?” ছোট বাবা। কেন, এর কি বিবাহ হয় নাই ? লবঙগ । না। টাকা খরচ করিলে হয় ? ছোট বাবা। আপনি কি ইহার বিবাহ জন্য টাকা দিবেন ? লবঙগ রাগিল। বলিল, “এমন ছেলেও দেখি নাই! আমার কি টাকা রাখিবার জায়গা নাই ? বিয়ে কি হয়, তাই জিজ্ঞাসা করিতেছি। মেযে মানষে, সকল কথা তা জানি না। বিবাহ কি হয় ?” ছুটি বাব, ছােট মাকে চিনতেন। হাসিয়া বলিলেন, “তা মা, তুমি টাকা রেখা, আমি সম্প্ৰবন্ধ কারব ।” মনে মনে ললিতলবঙগলতাব মন্ডপাত করিতে করিতে আমি সে সথান হইতে পলাইলাম। তাই বলিতেছিলাম, বড় মানষের বাড়ী ফােল যোগান বড় দায়। বহমাত্তি ময়ি বসন্ধারে! তুমি দেখিতে কেমন ? তুমি যে অসংখ্য, অচিন্তনীয় শক্তি ধর, অনন্ত বৈচিত্র্যবিশিস্ট জড় পদাৰ্থ সকল হৃদয়ে ধারণ করা, সে সব দেখিতে কেমন ? যাকে যাকে লোকে সন্দর বলে, সে সব দেখিতে কেমন ? তোমার হৃদয়ে যে অসংখ্য বহপ্রকৃতিবিশিষ্ট জন্তুগণ বিচরণ করে, তারা সব দেখিতে কেমন ? বল মা, তোমার হৃদয়ের সারভূত, পরিষ জাতি দেখিতে কেমন ? দেখাও মা, তাহার মধ্যে, যাহার করস্পশে এত সখি, সে দেখিতে কেমন ? দেখা মা, দেখিতে কেমন দেখায্য ? দেখা কি ? দেখা কেমন? দেখিলে কিরােপ সখি হয় ? এক মহত্ত জন্য এই সখময় সপশা দেখিতে পাই না ? দেখা মা ! বাহিরের চক্ষ নিমীলিত থাকে থাকুক মা! আমার হৃদর্যের মধ্যে চক্ষ ফটাইয়া দে, আমি একবার অন্তরের ভিতর অন্তর লকোইয়া, মনের সাধে রােপ দেখে, নারীজন্ম সাৰ্থক করি। সবাই দেখে-আমি দেখিব না কেন ? বঝি কীট-পতঙ্গ অবধি দেখে—আমি কি অপরাধে দেখিতে পাই না ? শােধ দেখা —কাবও ক্ষতি নাই, কারও কম্পট নাই, কারও পাপ নাই, সবাই অবহেলে দেখে——কি দোষে আমি কখনও দেখিব না ? না! না! আদর্ভেট নাই। হৃদয়মধ্যে খাঁ জিলাম। শািন্ধ শব্দ সপশ গন্ধ। আর কিভু, পাইলাম না। আমার অন্তর বিদীর্ণ করিষা ধবনি উঠিতে লাগিল, কে দেখাবি দেখা গো—আমায় রােপ দেখা ! বঝিল না! কেহই আন্ধের দঃখ বঝিল না। তৃতীয় পরিচ্ছেদ সেই অবধি আমি প্রায় প্রত্যহ রামসদয় মিত্রের বাড়ী ফল বেচিতে যাইতাম। কিন্তু কেন, তাহা জানি না। যাহার নয়ন নাই, তাহার এ যত্ন কেন ? সে দেখিতে পাইবে না—কেবল কথার শবদ শনিবার ভরসা মাত্র। কেন শচীন্দ্ৰ বােব আমার কাছে আসিয়া কথা কহিবেন ? তিনি 88