পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৫১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब७का ब्रा5नावव्ली অমর। রাজচন্দ্রের পালিত কন্যা মাত্র। আমি। তবে সে কাহার কন্যা ? কোথায় বিষয় পাইল ? এ কথা আমরা এত দিন শনিলাম না কেন ? অমর। আপনারা যে সম্পপত্তি ভোগ করিতেছেন, ইহাই রজনীর। রজনী মনোহর দাসের ভ্রাতুষ্পকন্যা। একবার, প্রথমে চমকিয়া উঠিলাম। তার পর বঝিলাম যে, কোন জালসাজ জয়াচোরের হাতে পড়িয়াছি। প্রকাশ্যে উচ্চৈঃহাস্য করিয়া বলিলাম, “মহাশয়কে নিৰ্ভকৰ্ম্মমা লোক বলিয়া বোধ হইতেছে। আমার অনেক কম আছে। এক্ষণে আপনার সঙেগ রহস্যের আমার অবসর নাই। আপনি গহে গমন করন।” অমরনাথ বলিল, “তবে উকীলের মখে সম্পবাদ শনিবেন।” চতুর্থ পরিচ্ছেদ এদিকে বিষ্ণরাম বােব সম্পবাদ পঠাইয়া দিলেন যে, মনোহর দাসের উত্তরাধিকারী উপস্থিত হইয়াছে—বিষয় ছাড়িয়া দিতে হইবে। অমরনাথ। তবে জয়াচোর জালালাজ নাহে ? কে উত্তরাধিকারী, তাহা বিষ্ণরাম বাবা প্রথমে কিছর বলেন নাই। কিন্তু অমরনাথের কথা সমরণ হইল। বঝি রজনীই উত্তরাধিকারিণী। যে ব্যক্তি দাবিদার, সে যে মনোহর দাসের যথাৰ্থ উত্তরাধিকারী, তদিবষয়ে নিশ্চয়তা আছে কি না, ইহা জানিবার জন্য বিষ্ণরাম বাবর কাছে গেলাম। আমি বলিলাম, “মহাশয়, পকেবা বলিয়াছিলেন যে, মনোহর দাস সপরিবারে মুলতুবিয়া মরিয়াছে। তাহার প্রমাণও আছে। তবে তাহার আবার ওয়ারিশ আসিল কােথা ठ ?” বিষ্ণরাম বােব বলিলেন, “হরেকৃষ্ণ দাস নামে তাহার এক ভাই ছিল, জানেন বোধ হয়।” আমি। তা ত জানি। কিন্তু সেও তা মরিয়াছে। বিষ্ণ। বটে, কিন্তু মনোহরের পর মরিয়াছে। সতরাং সে বিষয়ের অধিকারী হইয়া মরিয়াছে। আমি। তা হৌক, কিন্তু হরেকৃষ্ণেরও ত এক্ষণে কেহ নাই ? বিষ্ণ। পর্ক্সেব তাহাই মনে করিয়া আপনাদিগকে বিষয় ছাড়িয়া দিয়াছিলাম। কিন্তু এক্ষণে জানিতেছি যে, তাহার এক কন্যা আছে। আমি। তবে এত দিন সে কন্যার কোন প্রসঙ্গ উত্থাপিত হয় নাই কেন ? বিষ্ণ। হরেকৃষ্ণের সত্ৰী তাহার পকেব। মরে; স্ত্রীর মাতৃত্যুর পরে শিশৱকন্যাকে পালন করিতে অক্ষম হইয়া হরেকৃষ্ণ কন্যাটিকে তাহার শ্যালীকে দান করে। তাহার শ্যালী ঐ কন্যাটিকে আত্মকন্যাবৎ প্রতিপালন করে, এবং আপনার বলিয়া পরিচয় দেয়। হরেকৃষ্ণের মাতুত্যুর পর তাহার সম্পত্তি লাওয়ারেশ বলিয়া ম্যাজিস্ট্রেট সাহেবকত্ত্বক গহীত হওয়ার প্রমাণ পাইয়া আমি হরেকৃষ্ণকে লাওয়ারেশ মনে করিয়াছিলাম। কিন্তু এক্ষণে হরেকৃষ্ণের একজন প্রতিবাসী আমার নিকট উপস্থিত হইয়া, তাহার কন্যার কথা প্রকাশ করিয়াছে। আমি তাহার প্রদত্ত সন্ধানের অনসরণ করিয়া জানিয়াছি যে, তাহার কন্যা আছে বটে। আমি বলিলাম, “যে হয় একটা মেয়ে ধরিয়া হরেকৃষ্ণ দাসের কন্যা বলিয়া ধত্তি লোক উপস্থিত করিতে পারে। কিন্তু সে যে যথার্থ হরেকৃষ্ণ দাসের কন্যা, তাহার কিছর প্রমাণ আছে কি ?” “আছে।” বলিয়া বিষ্ণরাম বােব আমাকে একটা কাগজ দেখিতে দিলেন, বলিলেন, “এ বিষয়ে যে যে প্রমাণ সংগহীত হইয়াছে, তাহা উহাতে ইয়াদ দাসত করিয়া রাখিয়াছি।” আমি ঐ কাগজ লইয়া পড়িতে লাগিলাম। তাহাতে পাইলাম যে, হরেকৃষ্ণ দাসের শ্যালীপতি রাজচন্দ্ৰ দােস; এবং হরেকৃষ্ণের কন্যার নাম রজনী। প্রমাণ যাহা দেখিলাম, তাহা ভয়ানক বটে। আমরা এত দিন অন্ধ রজনীর ধনে ধনী হইয়া তাহাকে দরিদ্র বলিয়া ঘণা করিতেছিলাম। বিষ্ণরাম একটি জোবানবন্দীর জান্বেতা নকল আমার হাতে দিয়া বলিলেন, “এক্ষণে দেখােন, এই জোবানবন্দী কাহার ?” ○ > ひ