পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৫৫৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

बध्दकाश ब्रष्नाबव्ी এই জন্য অনেক সখী জনে মন্ত্যুকামনা করে—আর দঃখী, দঃখের ভার আর বাঁহতে পারে না। বলিয়া মাতুকে ডাকে। মাতুকে ডাকে, কিন্তু কার কাছে মাতৃত্যু আসে ঠ ডাকিলে মাতু্য আসে না। যে সখী, যে মরিতে চায় না, যে সন্দর, যে যােবা, যে আশাপািণ, যাহার চক্ষে পথিবী নন্দনকানন, মাতৃত্যু তাহারই কাছে আসে। রোহিণীর মত কাহারও কাছে আসে না। এ দিকে মনতুষ্যের এমন শক্তি অলপ যে, মাতুকে ডাকিয়া আনিতে পারে না। একটি ক্ষ-দ্র সর্বাচনীবোধে, অন্ধবিন্দ, ঔষধভক্ষণে, এ নিশবার জীবন বিনম্ৰাট হইতে পারে, এ চ৭8ল জলবিম্ব কালসাগরে মিলাইতে পারেকিন্তু আন্তরিক মাতুত্যুকামনা করিলেও প্রায় কেহ ইচ্ছাপাকবািক সে সািচ ফটােয় না, সে অন্ধবিন্দ ঔষধ পান করে না। কেহ কেহ তাহা পারে, কিন্তু রোহিণী সে দলেব নহে!—রোহিণী তাহা পারিল না। কিন্তু এক বিষয়ে রোহিণী কৃতসঙ্কলপ হইল—জােল উইল চালান হইবে না। ইহার এক সহজ উপায় ছিল—কৃষ্ণকান্তকে বললে, কি কাহারও দবারা বলাইলেই হইল যে, মহাশয়ের উইল চুরি গিয়াছে—দেরাজ খলিয়া যে উইল আছে, তাহা পড়িয়া দেখান। রোহিণী যে চুরি করিয়াছিল, ইহাও প্রকাশ করিবার প্রয়োজন নাই—“যেই চুরি করােক, কৃষ্ণকান্তের মনে একবার সন্দেহ মাত্র জন্মিলে, তিনি সিন্দােক খালিয়া উইল পড়িয়া দেখিবেন-- তাহা হইলে জাল উইল দেখিয়া নািতন উইল প্রস্তুত করিবেন। গোবিন্দলালের সম্পত্তি রক্ষা হইবে, অথচ কেহ জানিতে পরিবে না যে, কে উইল চুরি করিয়াছিল। কিন্তু ইহাতে এক বিপদ-কৃষ্ণকান্ত জাল উইল পড়িলেই জানিতে পারিবেন যে, ইহা ব্ৰহ্মানন্দের হাতের লেখা—তখন ব্ৰহ্মানন্দ মহা বিপদে পড়িবেন। অতএব দেরাজে যে জাল উইল আছে, ইহা কাহারও সাক্ষাতে প্রকাশ করা যাইতে পারে না । অতএব হরলালের লোভে রোহিণী, গোবিন্দলালের যে গবতের অনিষট সিদ্ধ করিয়া রাখিয়াছিল, তৎপ্রতিকারার্থ বিশেষ ব্যাকুলা হইয়াও সে খািল্লতাতের রক্ষান রোধে কিছই করিতে পারিল না। শেষ সিদ্ধান্ত করিল, যে প্রকারে প্রকৃত উইল চুরি করিয়া জাল উইল রাখিয়া আসিয়াছিল, সেই প্রকারে আবার প্রকৃত উইল রাখিয়া তৎপরিবত্তে জাল উইল লইয়া আসিবে। নিশীথকালে, রোহিণী সন্দিরী, প্রকৃত উইলখানি লইয়। সাহসে ভর করিয়া একাকিনী কৃষ্ণকান্ত রায়ের গাহাভিমখে যাত্রা করিলেন। খড়ঙ্কীদ্বার রন্ধ : সদর ফটকে যথায় দাবারবানেরা চারপাইয়ে উপবেশন করিয়া, অন্ধ নিমনীলিত নেত্ৰে, আদর্ধািরদ্ধ কন্ঠে, পিল রাগিণীর পিতৃশ্ৰাদ্ধ করিতেছিল, রোহিণী সেইখানে উপস্থিত হইল। সবারবানেরা জিজ্ঞাসা করিল, “কে তুই ?” রোহিণী বলিল, “সখী।" সখী, বাটীর একজন যাবতী চাকরাণী, সতরাং দবারবানেরা আর কিছ, বলিল না। রোহিণী নিবিবাঘের গহমধ্যে প্রবেশপাকবািক, পািকব পরিচিত পথে কৃষ্ণকান্তের শয়নকক্ষে গোল—পরী সংরক্ষিত বলিয়া কৃষ্ণকান্তের শয়নগাহের দাবার রুদ্ধ হইত না। প্রবেশকালে কাণ পাতিয়া রোহিণী শনিল যে, অবাধে কৃষ্ণকান্তের নাসিকাগজজািন হইতেছে। তখন ধীরে ধীরে বিনা শব্দে উইলচোর গহমধ্যে প্রবেশ করিল। প্রবেশ করিয়া প্রথমেই দীপ নিফর্বাপিত করিল। পরে পাকবািমত চাবি সংগ্ৰহ করিল। এবং পরবর্তমত, অন্ধকারে লক্ষ্য করিয়া, দেরাজ খলিল । রোহিণী অতিশয় সাবধান, হস্ত অতি কোমল গতি। তথাপি চাবি ফিরাইতে খট করিয়া একটা শবদ হইল। সেই শব্দে কৃষ্ণকান্তের নিদ্ৰাভঙ্গ হইল । কৃষ্ণকান্ত ঠিক বঝিতে পারিলেন না যে, কি শব্দ হইল। কোন সাড়া দিলেন না-কাণ পাতিয়া রহিলেন । রোহিণীও দেখিলেন যে, নাসিকাগজজািনশবদ বন্ধ হইয়াছে। রোহিণী বঝিল, কৃষ্ণকান্তের ঘাম ভাঙিগয়াছে। রোহিণী নিঃশব্দে সিথর হইয়া রহিলেন। কৃষ্ণকান্ত বলিলেন, “কে ও : কেহ কোন উত্তর দিল না। p সে রোহিণী আর নাই। রোহিণী এখন শীর্ণা, ক্লিন্টা, বিবশা—বোধ হয় একটা ভয় হইয়াছিল—একটা নিশবাসের শবদ হইয়াছিল। নিশবাসের শব্দ কৃষ্ণকান্তের কাণে গেল। কৃষ্ণকান্ত হরিকে বার কয় ডাকিলেন। রোহিণী মনে করিলে এই অবসরে পলাইতে পারিত, কিন্তু তাহা হইলে গোবিন্দলালের প্রতীকার হয় না। রোহিণী মনে মনে ভাবিল, “দািস্কমের Gk Ćk NR