পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৫৭৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

क्रूक्ष्कांड्डद्ध छेशेव्न বিলম্ব করিও না, পীড়া বন্দিধ হইলে আর আরাম হইবে না। পার যদি, কালই লোক পাঠাইও । এখানে পীড়ার কথা বলিও না।" এই পত্র লিখিয়া গোপনে ক্ষরি চাকরাণীর দবারা লোক ঠিক করিয়া, ভ্রমর তাহা পিত্ৰালয়ে পাঠাইয়া দিল । যদি মা না হইয়া, আর কেহ হইত, তবে ভ্রমরের পত্ৰ পড়িয়াই বঝিতে পারিত যে, ইহার ভিতর কিছ জয়াচুরি আছে। কিন্তু মা, সন্তানের পীড়ার কথা শনিয়া একেবারে কাতরা হইয়া পড়িলেন। উদ্দেশে ভ্ৰমরের শাশড়ীকে এক লক্ষ গালি দিয়া স্বামীকে কিছ গালি দিলেন, এবং কাঁদিয়া কাটিয়া সিথর করিলেন যে, আগামী কল্য বেহােরা পালকি লইয়া চাকর চাকরাণী ভ্রমরকে আনিতে যাইবে । ভ্রমরের পিতা, কৃষ্ণকান্তকে পত্র লিখিলেন। কৌশল করিয়া, ভ্রমরের পীড়ার কোন কথা না লিখিয়া, লিখিলেন যে, “ভদ্রমরের মাতা অত্যন্ত পীড়িত হইয়াছেন— ভ্রমরকে একবার দেখিতে পাঠাইয়া দিবেন।” দাস-দাসী দিগকে সেই মত শিক্ষা দিলেন। কৃষ্ণকান্ত বড় বিপদে পড়িলেন। এ দিকে গোবিন্দলাল আসিতেছে, এ সময়ে ভ্রমরকে পিাত্ৰালয়ে পাঠান অকৰ্ত্তব্য । ও দিকে ভ্ৰমরের মাতা পীড়িতা, না পাঠাইলেও নয়। সাত পাঁচ ভাবিয়া, চারি দিনের কড়ারে ভ্রমরকে পাঠাইয়া দিলেন। চারি দিনের দিন গোবিন্দলাল আসিয়া পৌছিলেন। শনিলেন যে, ভ্রমর পিত্রালয়ে গিয়াছে, আজি তাঁহাকে আনিতে পালকি যাইবে। গোবিন্দলাল সকলই বঝিতে পারিলেন। মনে মনে বড় অভিমান হইল। মনে মনে ভাবিলেন, “এত অবিশ্ববাসী! না বকিয়া, না জিজ্ঞাসা করিয়া আমাকে ত্যাগ করিয়া গেল!! আমি আর সে ভ্রমরের মািখ দেখিব না। যাহার ভ্রমর নাই, সে কি প্রাণধারণা করিতে পারে না ? “ এই ভাবিয়া গোবিন্দলাল, ভ্রমরকে আনিবার জন্য লোক পাঠাইতে মাতাকে নিষেধ করিলেন। কেন নিষেধ করিলেন, তাহা কিছই প্রকাশ করিলেন না। তাঁহার সম্মতি পাইয়া, কৃষ্ণকান্ত বধ, আনিবার জন্য আর কোন উদ্যোগ করিলেন না । পঞ্চবিংশতিতম পরিচ্ছেদ এইরনুপে দাই চারি দিন গেল। ভ্রমরকে কেহ আনিল না, ভ্রমরও আসিল না। গোবিন্দলাল মনে করিলেন, ভ্রমরের বড় সাপদ্ধা হইয়াছে, তাহাকে একটা কাঁদাইব । মনে করিলেন, ভ্রমর বড় অবিচার করিয়াছে, একট, কাঁদাইব । এক একবার শান্য-গহ দেখিয়া আপনি একটা কাঁদিলেন। ভ্ৰমরের অবিশ্ববাস মনে করিয়া এক একবার একটা কাঁদিলেন। ভ্রমরের সঙ্গে কলহ, এ কথা ভাবিয়া কান্না আসিল। আবার চোখের জল মাছিয়া, রাগ করিলেন। রাগ করিয়া ভ্রমরকে ভুলিবার চেস্টা করিলেন। ভুলিবার সাধ্য কি ? সখি যায়, সমাতি যায় না। ক্ষত ভাল হয়, দাগ ভাল হয় না। মানষ যায়, নাম থাকে। শেষ দর্ববন্ধি গোবিন্দলাল মনে করিলেন, ভ্রমরকে ভুলিবার উৎকৃষ্ঠািট উপায়, রোহিণীর চিন্তা। রোহিণীর অলৌকিক রােপপ্রভা, একদিনও গোবিন্দলালের হৃদয় পরিত্যাগ করে নাই। গোবিন্দলাল জোর করিয়া তাহাকে স্থান দিতেন না, কিন্তু সে ছাড়িত না। উপন্যাসে শানা যায়, কোন গহে ভূতের দৌরাত্ম্য হইয়াছে, ভূত দিবারাত্রি উকি ঝাঁক মারে, কিন্তু ওঝা তাহাকে তাড়াইয়া দেয়। রোহিণী প্রেতিনী৷ তেমনি দিবারাত্ৰি গোবিন্দলালের হৃদয়মন্দিরে উকি ঝাঁকি মারে, গোবিন্দলাল তাহাকে তাড়াইয়া দেয়। যেমন জলতলে চন্দ্রসায্যের ছায়া আছে, চন্দ্র সােয্য নাই, তেমনি গোবিন্দলালের হৃদয়ে অহরহঃ রোহিণীর ছায়া আছে, রোহিণী নাই। গোবিন্দলাল ভাবিলেন, যদি ভ্রমরকে আপাততঃ ভুলিতে হইবে, তবে রোহিণীর কথাই ভাবি-নিহিলে এ দঃখ ভুলা যায় না। অনেক কুচিকিৎসক ক্ষ-দ্র রোগের উপশম জন্য উৎকট বিষের প্রয়োগ করেন। গোবিন্দলালও ক্ষদ্র রোগের উপশম জন্য উৎকট বিষের প্রয়োগে প্রবত্ত হইলেন। গোবিন্দলাল আপনি ইচ্ছায় আপনি আপন অনিষটসাধনে প্রবত্ত হইলেন। রোহিণীর কথা প্রথমে সমাতিমাত্র ছিল, পরে দঃখে পরিণত হইল। দঃখ হইতে বাসনায় পরিণত হইল। গোবিন্দলাল বারিণীতটে, পশুপবক্ষপরিবেন্টিত মন্ডপমধ্যে উপবেশন করিয়া সেই বাসনার জন্য অন্যতাপ করিতেছিলেন। বর্ষাকাল। আকাশ মেঘাচ্ছন্ন। বাদল হইয়াছে— বভিট কখনও কখনও জোরে আসিতেছে-কখনও মদ হইতেছে। কিন্তু বান্টি ছাড়া নাই। Ꮹ ᏄᏬ