পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৫৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब७दक ब्रष्नाबव्ी রংপো মনে ভাবিল—আজি না জানি উঠিয়া কার মািখ দেখিয়াছিলাম—আজি ত দেখাচি টাকা রোজগারের দিন। গরিব মানষের দই পয়সা এলেই ভাল। প্রকাশ্যে বলিল, “যা বলবেন, তাই পারিব। কি, আজ্ঞা করবেন।” রো। ঐ বাবার সঙ্গে সঙ্গে নামিয়া যা। উনি আমার বাপের বাড়ীর দেশ থেকে এসেছেন। সেখানকার কোন সংবাদ আমি কখনও পাই না—তার জন্য কত কাঁদি। যদি দেশ থেকে একটি লোক এসেছে, তাকে একবার আপনার জনের দটো খবর জিজ্ঞাসা করবো। বাব তা রেগে ওকে উঠিয়ে দিলেন। তুই গিয়ে তাকে বসা। এমন জায়গায় বসা, যেন বাবা নীচে গেলে না। দেখতে পান। আর কেহ না দেখিতে পায়। আমি একটা নিরিবিলি পেলেই যাব। যদি বসতে না চায়, তবে কাকুতি মিনতি করিসি! রংপো বখশিশের গন্ধ পাইয়াছে—“যে আজ্ঞা’ বলিয়া ছটিল। নিশােকর কি অভিপ্ৰায়ে গোবিন্দলালকে ছলিতে আসিয়াছিলেন, তাহা বলিতে পারি না, কিন্তু তিনি নীচেয় আসিয়া যেরপ আচরণ করিতেছিলেন, তাহা বন্ধিমানে দেখিলে তাঁহাকে বড় অবিশ্ববাস করিত। তিনি গহপ্রবেশদ্বারের কবাট, খিল, কব্জা প্রভৃতি পৰ্যবেক্ষণ করিয়া দেখিতেছিলেন। এমত সময়ে রাপো খানসামা আসিয়া উপস্থিত হইল। রংপো বলিল, “তামাকু ইচ্ছা করিবেন কি ?” নিশা। বােব ত দিলেন না, চাকরের কাছে খাব কি ? রংপো । আজ্ঞে তা নয়—একটা নিরিবিলি কথা আছে। একটা নিরিবিলিতে আসন । রংপো নিশাকরকে সঙ্গে করিয়া আপনার নিজজন ঘরে লইয়া গেল। নিশােকরও বিনা ওজার আপত্তিতে গেলেন। সেখানে নিশাকরকে বসিতে দিয়া, যাহা যাহা রোহিণী বলিয়াছিল, র্যাপচাঁদ তাহা বলিল । নিশােকর আকাশের চাঁদ হাত বাড়াইয়া পাইলেন। নিজ অভিপ্রায় সিদিধর অতি সহজ উপায় দেখিতে পাইলেন। বলিলেন, “বাপ, তোমার মনিব তা আমায় তাড়িয়ে দিয়েছেন, আমি তাঁর বাড়ীতে ল্যুকাইয়া থাকি কি প্রকারে ” রংপো । আজ্ঞে তিনি কিছ জানিতে পারিবেন না। এ ঘরে তিনি কখনও আসেন না। নিশা। না আসন, কিন্তু যখন তোমার মা ঠাকুরাণী নীচে আসিবেন, তখন যদি তোমার বােব ভাবেন, কোথায় গেল দেখি ? যদি তাই ভাবিয়া পিছৰ পিছ আসেন, কি কোন রকমে যদি আমার কাছে তোমার মা ঠাকুরাণীকে দেখেন, তবে আমার দশােটা কি হবে বলা দেখি ? রাপচাঁদ চুপ করিয়া রহিল। নিশােকর বলিতে লাগিলেন, “এই মাঠের মাঝখানে, ঘরে পরিয়া আমাকে খােন করিয়া এই বাগানে পতিয়া রাখিলেও আমার মা বলতে নাই, বাপ বলতেও নাই। তখন তুমিই আমাকে দা, ঘা লাঠি মারি বে।—অতএব এমন কাজে আমি নই। তোমার মাকে বঝাইয়া বলিও যে, আমি ইহা পারিব না। আর একটি কথা বলিও । তাঁহার খড়া আমাকে কতকগলি অতি ভারি কথা বলিতে বলিয়া দিয়াছিল। আমি তোমার মা ঠাকুরাণীকে সে কথা বলিবার জন্য বড়ই ব্যস্ত ছিলাম। কিন্তু তোমার বাব, আমাকে তাড়াইয়া দিলেন। আমার বলা হইল না, আমি চলিলাম।” রংপো দেখিল, পাঁচ টাকা হাতছাড়া হয়। বলিল, “আচ্ছা, তা এখানে না বসেন, বাহিরে একটি তফাতে বসিতে পারেন না ?” নিশা। আমিও সেই কথা ভাবিতেছিলাম। আসিবার সময় তোমাদের কুঠির নিকটেই নদীর ধারে, একটা বাঁধা ঘাট, তাহার কাছে দইটা বকুল গাছ দেখিয়া আসিয়াছি। চেন সে জায়গা ? র। পো। চিনি। নিশা। আমি গিয়া, সেইখানে বসিয়া থাকি। সন্ধ্যা হইয়াছে।--রাত্ৰি হইলে, সেখানে বসিয়া থাকিলে বড় কেহ দেখিতে পাইবে না। তোমার মা ঠাকুরাণী যদি সেইখানে আসিতে পারেন, তবেই সকল সংবাদ পাইবেন । তেমন তেমন দেখিলে, আমি পলাইয়া প্রাণরক্ষা করিতে পারিব। ঘরে পরিয়া যে আমাকে কুক্কাের-মারা করিবে, আমি তাহাতে বড় রাজি নাহি। অগত্যা রপো, চাকর রোহিণীর কাছে গিয়া নিশােকর যেমন যেমন বলিল, তাহা নিবেদন করিল। এখন রোহিণীর মনের ভাব কি, তাহা আমরা বলিতে পারি না। যখন মানষে নিজে G d R