পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৬০৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब्राञ्जर्गनश्श् 3 지ov5 চিত্রে চরণ প্রথম পরিচ্ছেদ ঃ তসবিরওয়ালী রাজস্থানের পাব্বিত্যপ্রদেশে রপনগর নামে একটি ক্ষদ্র রাজ্য ছিল। রাজ্য ক্ষদ্র হউক, বহৎ হউক, তার একটা , রাজা থাকিবো। রািপনগরেরও রাজা ছিল। কিন্তু রাজ্য ক্ষদ্র হইলে রাজার নামটি বহৎ হওয়ার আপত্তি নাই—ব্রািপনগরের রাজার নাম বিক্রমসিংহ। বিক্রমসিংহের আরও সবিশেষ পরিচয় পশ্চাৎ দিতে হইবে। সম্প্রতি তাঁহার অন্তঃপারমধ্যে প্রবেশ করিতে আমাদিগের ইচ্ছা। ক্ষদ্র রাজ্য; ক্ষদ্র রাজধানী; ক্ষদ্র পরী। • তন্মধ্যে একটি বড় ঘর সশোভিত। গালিচার অন্যাকরণে শেবতকৃষ্ণপ্রস্তররঞ্জিত হস্ম্যতল ; শেবতপ্রস্তরনিশ্চিমত নানা বণ্যের রত্নরাজিতে রঞ্জিত কক্ষপ্রাচীর; তখন তাজমহল ও ময়রতত্তের অন্যাকরণই প্ৰসিদ্ধ, সেই অননুকরণে ঘরের দেওয়ালে সাদা পাথরের অসম্পভব পক্ষী সকল, অসম্পভব রকমে। অসম্পভব লতার উপর বসিয়া, অসম্ভব জাতির ফলের উপর পােচ্ছ রাখিয়া, অসম্পভব জাতীয় ফল ভোজন করিতেছে। বড় পাের গালিচা পাতা, তাহার উপর এক পাল সত্ৰীলোক, দশ জন কি পািনর জন্য। নানা রঙের বস্ত্রের বাহার ; নানাবিধ রত্নের অলঙ্কারের বাহার ; নানাবিধ উত্তজবল কোমল বর্ণের কমনীয় দেহরাজি,-কেহ মল্লিকাবণ, কেহ পদ্মরক্ত, কেহ চম্পকাণ্ডগী, কেহ নবদম্ববাদলশ্যামা-খনিজ রত্নরাশিকে উপহাসিত করিতেছে। কেহ তাম্বল চক্ৰবাণ করিতেছে, কেহ আলবোলাতে তামাকু টানিতেছে—কেহ বা নাকের বড় বড় মতিদার নাথ দালাইয়া ভীমসিংহের পদামিনী রাণীর উপাখ্যান বলিতেছেন, কেহ বা কাণের হীরকজড়িত কণী ভূষা দলাইয়া পরনিন্দ যি মজলিস জাঁকাইতেছেন। অধিকাংশই যাবতী ; হাসি টিটকারির কিছর ঘটা পড়িয়া গিয়াছে——একটি রঙ্গ জমিয়া গিয়াছে। যাবতীগণের হাসিবার কারণ, এক প্রাচীনা, কতকগলি চিত্র বেচিতে আসিয়া তাঁহাদিগের হাতে পড়িয়াছিল। হস্তিদন্তনিমিত ফলকে লিখিত ক্ষদ্র ক্ষদ্র অপব্ব চিত্ৰগলি; প্রাচীনা বিব্রুয়াভিলাষে এক একখানি চিত্র বস্ত্রাবরণমধ্য হইতে বাহির করিতেছিল; যাবতীগণ চিত্রিত ব্যক্তির পরিচয় জিজ্ঞাসা করিতেছিল। প্রাচীনা প্রথম চিত্ৰখানি বাহির করিলে, এক কামিনী জিজ্ঞাসা করিল, “এ কাহার তসবির। আীিয় ?” প্রাচীনা বলিল, “এ শাহ জাঁদা খাদশাহের তসবির।” যাবতী বলিল, “দর মাগি, এ দাড়ি ধে আমি চিনি। এ আমার ঠাকুর দাদার দাড়ি।” আর একজন বলিল, “সে কি লো ? ঠাকুর দাদার নাম দিয়া ঢাকিস কেন ? ও যে তোর বরের দাড়ি।” পরে আর সকলের দিকে ফিরিয়া রাসাবতী বলিল, “ঐ দাড়িতে একদিন একটা বিছা লাকাইয়াছিল—সই আমার ঝাড় দিয়া সেই বিছােটা মারিল।” তখন হাসির বড় একটা গোল পড়িয়া গেল। চিত্রবিক্রেত্ৰী তখন আর একখানা ছবি দেখাইল। বলিল, “এখােনা জাহাগীর বাদশাহের ছবি।” দেখিয়া রসিকা যাবতী বলিল, “ইহার দাম কত ?” প্রাচীন বড় দাম হকিল । রসিকা পািনরপি জিজ্ঞাসা করিল, “এ ত গোল ছবির দাম। আসল মানষটা নীরজাহা বেগম কততে কিনিয়াছিল ?” তখন প্রাচীনও একট, রসিকতা করিল; বলিল, “বিনামল্যে।” রসিকা বলিল, “যদি আসলটার এই দশা, তবে নকলটা ঘরের কড়ি কিছ দিয়া আমাদিগকে দিয়া যাও।” V OC