পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৬৪৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ज्ञाङर्गन२छ् দশম পরিচ্ছেদ ঃ রসিকা পানওয়ালী মাণিকলাল তখনই রােপনগরে ফিরিয়া আসিল। তখন সন্ধ্যা উত্তীণ হইয়াছে। রািপনগরের বাজারে গিয়া মাণিকলাল দেখিল যে, বাজার অত্যন্ত শোভাময়! দোকানের শত শত প্ৰদীপের শোভায় বাজার আলোকময় হইয়াছে—নানাবিধ খাদ্যদ্রব্য উত্তজবলবণে রসনা আকুল করিতেছে— পশুপ, পশুপমালা থরে থরে নয়ন রঞ্জিত, এবং স্ত্ৰাণে মন মগধ করিতেছে। মাণিকের উদ্দেশ্য— আশব ও অস্ত্র সংগ্রহ করা, কিন্তু তাই বলিয়া আপন উদরকে বর্ণ8না করা মাণিকল্যালের অভিপ্রায় ছিল না। মাণিক গিয়া কিছ মিঠাই কিনিয়া খাইতে আরম্ভ করিল। সেরা পাঁচ ছয় ভোজন করিয়া মাণিক দেড় সের জল খাইল এবং দোকানদারকে উচিত মল্য দান করিয়া, তাম্বালান্বেষণে গেল। " দেখিল, একটা পানের দোকানে বড় জকি ৷ দেখিল, দোকানে বহিসংখ্যক দীপ বিচিত্র ফান ষমধ্য হইতে সিনপদ্ধ জ্যোতি বিকীর্ণ করিতেছে। দেওয়ালে নানা বণের কাগজ মোড়ানানা প্রকার বাহারের ছবি লটকান—তবে চিত্ৰগলি একটা বেশী মাত্রায় রঙ্গদার, আধনিক ভাষায় 'obscene,” প্রাচীন ভাষায় “আদিরসাশিত।” মধ্যস্থানে কোমল গালিচায় বসিয়া— দোকানের অধিকারিণী, তাম্বল বিক্লেত্রী-বয়সে ত্ৰিশের উপর, কিন্তু কুরপো নহে। বৰ্ণ গৌর, চক্ষ বড় বড়, চাহনি বড় চঞ্চল, হাসি বড় রঙগদার-সে। হাসি অনিন্দ্য দন্তশ্রেণীমধ্যে সববদাই খেলিতেছে—-হাসির সঙেগ সর্ববর্ণালঙ্কার দলিতেছে—অলঙ্কার কতক রােপা, কতক সোণা-কিন্তু সংগঠন ও সংশোভন। মাণিকলাল, দেখিয়া শনিয়া, পান চাহিল। পানওয়ালী স্বয়ং পান বেচে না-সম্মমখে একজন দাসীতে পান সাজিতেছে ও বেচিতেছে ——পানওয়ালী। কেবল পয়সা কুড়াইতেছে—এবং মিন্ট হাসিতেছে। দাসী একজন পান সাজিয়া দিল ; মাণিকলাল ডবল দাম দিল । আবার পান চাহিল। যতক্ষণ পান সাজা হইতেছিল, ততক্ষণ মাণিক পানওয়ালীর সঙ্গে হাসিয়া হাসিয়া দই একটা মিলিট কথা কহিতে লাগিল; পানওয়ালীর রাপের প্রশংসা করিলে পাছে সে কিছ মন্দ ভাবে, এজন্য প্রথমে তাহার দোকানসজা ও অলঙ্কারিগলির প্রশংসা করিতে লাগিল। পানওয়ালীও একটা ভিজিল। পানওয়ালী মিঠে পানের সঙ্গে মিঠে কথা বেচিতে আরম্ভ করিল। মাণিকলাল তখন দোকানে উঠিয়া বসিয়া, পান চিবাইতে চিবাইতে পানওয়ালীর হাকো কাড়িয়া লইয়া, টানিতে আরম্ভ করিল। এ দিকে মাণিকলাল পান খাইয়া দোকানের মসলা ফরাইয়া দিল । দাসী মসলা আনিতে অন্য দোকানো গেল। সেই অবসরে মাণিকলাল পানওয়ালীকে বলিল, মহারাজিয়া! তুমি বড় চতুরা। আমি একটি চতুরা স্ত্রীলোক খাজিতেছিলাম ; আমার একটি দশমন আছে—তাহাকে একটি জবাদ করিব ইচ্ছা। কি করিতে হইবে, তাহা তোমাকে বঝাইয়া বলিতেছি। তুমি যদি আমার সহায় তা কর, তবে এক আশরাফি পরিস্কার দিব।” পান। কি করিতে হইবে ? মাণিক চুপি চুপি কি বলিল। পানওয়ালী বড় রঙগাঁপ্রিয়া—তৎক্ষণাৎ সম্মত হইল। বলিল, “আশরাফির প্রয়োজন নাই-রঙগই আমার পরিস্কার!” মাণিকলাল তখন দোয়াত, কলম, কাগজ চাহিল। দাসী তাহা নিকটস্থ বেনিয়ার দোকান হইতে আনিয়া দিল। মাণিক পানওয়ালীর সঙ্গে পরামর্শ করিয়া এই পত্র লিখিল, “হে প্ৰাণনাথ! তুমি যখন নগরভ্রমণে আসিয়াছিলে, আমি তোমাকে দেখিয়া অতিশয় মগধ হইয়াছিলাম। তোমার একবার দেখা না পাইলে আমার প্রাণ যাইবে । শনিতেছি, তোমরা কাল চলিয়া যাইবেঅতএব আজ একবার অবশ্য অবশ্য আমায় দেখা দিবে। নাহিলে আমি গলায় ছরি দিব। যে পত্ৰ লইয়া যাইতেছে—তাহার সঙ্গে আসিও—সে পথ দেখাইয়া লইয়া আসিবে।” পত্র লেখা হইলে মাণিকলাল শিরোনামা দিল, “মহম্মদ খাঁ।” পানওয়ালী জিজ্ঞাসা করিল, “কে ও ব্যক্তি ?” DDS aaBBDD DD DJS বাসতবিক, মাণিকলাল মোগলদিগের মধ্যে একজনকেও চিনিত না। কাহারও নাম জানে না। সে মনে ভাবিল, দই হাজার মোগলের মধ্যে অবশ্য একজন মহম্মদ আছেই আছে—আর সকল Wり8 ○