পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৬৬১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

ब७का ब्रा5नाबव्नी বলিলেন, “মহারাজ ! ক্ষত্রিয় রাজগণ বিবােহার্থেই কন্যাহরণ করিতে পারেন। অন্য কোন কারণে কন্যাহরণ মহাপাপ। মহাপাপ করিতে আপনাকে অননুরোধ করিব কি প্রকারে ?” রাণা। আমি তোমাকে হরণ করি নাই। তোমার জাতিকুল রক্ষার্থ তোমাকে মসলমানের হাত হইতে উদ্ধার করিয়াছি। এক্ষণে তোমাকে তোমার পিতার নিকট প্রতিপ্রেরণ করাই রাজধৰ্ম্মম | চঞ্চলকুমারী কয়টা কথা কহিয়া যাবতীসলভ লাজজকে বশে আনিয়াছিল। এক্ষণে মািখ তুলিয়া, রাজসিংহের প্রতি চাহিয়া বলিল, “মহারাজ ! আপনার রাজধৰ্ম্মম আপনি জানেন। আমার ধৰ্ম্মম ও আমি জানি। আমি জানি যে, যখন আমি আপনার চরণে আত্মসমপণ করিয়াছি, তখন আমি ধৰ্ম্মতঃ আপনার মহিষী। আপনি গ্রহণ করন বা না করন, ধৰ্ম্মমতঃ আমি আর কাহাকেও বরণ করিতে পারিব না। যখন ধৰ্ম্মমতঃ আপনি আমার স্বামী, তখন আপনার আজ্ঞা মাত্র শিরোধাৰ্য্য। আপনি যদি আমাকে রপনগরে ফিরিয়া যাইতে বলেন, তবে অবশ্য আমি যাইব । সেখানে গেলে পিতা আমাকে পনববাের বাদশাহের নিকট পাঠাইতে বাধ্য হইবেন। কেন না, আমাকে রক্ষা করিবার তাঁহার সাধ্য নাই। যদি তাহাই অভিপ্রেত, তাহা হইলে রণক্ষেত্রে যখন আমি বলিয়াছিলাম যে, “মহারাজ ! আমি দিল্লী যাইব”—তখন কেন। যাইতে দিলেন না ?” রাজসিংহ। সে আমার আপনার মােনরক্ষাৰ্থ । চক্ষু, তার পর এখন, যে আপনার শরণ লইয়াছে, তাহাকে আবার দিল্লী যাইতে ק রাজা। তাও হইতে পারে না। তবে, তুমি এইখানেই থােক। চঞ্চল। অতিথিস্বরপ থাকিব ? না দাসী হইয়া ? রািপনগরের রাজকন্যা এখানে মহিষী ভিন্ন আর কিছর হইতে পারে না। রাজা। তোমার মত লোকমনোমোহিনী সন্দিরী যে রাজার মহিষী, সকলেই তাঁহাকে ভাগ্যবান বলিবো। তুমি এমন অদ্বিতীয়া রপবতী বলিয়াই তোমাকে মহিষী করিতে আমি সঙ্কুচিত হইতেছি। শনিয়াছি যে, শাস্ত্ৰে আছে, রািপবতী ভাৰ্য্যা শত্র স্বরপ— “ঋণকারী পিতা শত্রমাতা চ ব্যভিচারিণী। ভাৰ্য্যা রপবতী শত্ৰঃ পত্ৰঃ শত্ররপন্ডিতঃ ৷” চঞ্চলকুমারী একট, হাসিয়া বলিল, “বালিকার বাচালতা মাত্তজনা করিবেন—উদয়পরের রাজমহিষীগণ সকলেই কি কুরাপা ?” রাজসিংহ বলিলেন, “তোমার মত কেহই সরোেপা নহে।” চ৭8লকুমারী বলিল, “আমার বিনীত নিবেদন, কথাটা মহিষীদিগের কাছে বলিবেন না। মহারাণা রাজসিংহেরও ভয়ের সােথান থাকিতে পারে।” রাজসিংহ উচ্চহাস্য করিলেন। চ৭gলকুমারী এতক্ষণ দাঁড়াইয়া ছিল—এখন চাপিয়া বসিল, মনে মনে বলিল, “আর ইনি আমার কাছে মহারাণা নহেন, ইনি এখন আমার বর।” আসন গ্রহণ করিয়া চঞ্চলকুমারী বলিল, “মহারাজ! বিনা আজ্ঞায় আমি যে মহারাজের সম্মখে আসন গ্রহণ করিলাম, সে অপরাধ আপনাকে মাজজনা করিতে হইতেছে—কেন না, আমি আপনার নিকট জ্ঞানলাভের আকাঙক্ষায় বসিলাম—শিষ্যের আসনে অধিকার আছে। মহারাজ ! রপবতী ভাৰ্য্যা শত্র কি প্রকারে, তাহা আমি এখনও বঝিতে পারি নাই।” রাজসিংহ। তাহা সহজে বঝােনা যায়। ভাৰ্য্যা রপবতী হইলে, তাহার জন্য বিবাদ বিসংবাদ উপস্থিত হয়। এই দেখ, তুমি এখনও আমার ভায্যা হও নাই, তথাপি তোমার জন্য ঔরঙ্গজেবের সঙ্গে আমার বিবাদ বাধিয়াছে। আমাদের বংশের মহারাণী পদ্মিনীর কথা শনিয়াছ ত ? চঞ্চল। ঋষিবাক্যে আমার বড় শ্রদ্ধা হইল না। সন্দরী মহিষী না থাকিলে রাজারা কি বিবাদ হইতে মাক্তি পান ? আর এ পামরীর জন্য মহারাজ কেন এ কথা তুলেন ? আমি সরিপো হই, কুরাপা হই, আমার জন্য যে বিবাদ বাধিবার, তাহা ত বাধিয়াছে। রাজসিংহ। আরও কথা আছে। রংপবতী ভাৰ্য্যাতে পােরষি অত্যন্ত আসক্ত হয়। ইহা রাজার পক্ষে অত্যন্ত নিন্দনীয়। কেন না, তাহাতে রাজকায্যের ব্যাঘাত ঘটে। WV V O