পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৬৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রাজসিংহ চঞ্চলকুমারী বিবেচনা করিয়া দেখিলেন, “ইহার অপেক্ষা সবাবস্থা এক্ষণে আর কিছ হইতে পারে না।” কাজেই সম্মত হইলেন। রাজসিংহও যেরপ অঙ্গীকার করিয়াছিলেন, সেইরাপ বন্দোবস্ত করিলেন। চতুৰ্থ পরিচ্ছেদ ঃ অগিন জবালিবার আরও প্রয়োজন মাণিকলালের কাছে নিৰ্ম্মমল শানিল যে, চন্gলকুমারী রাজমহিষী হইলেন। কিন্তু কবে বিবাহ হইল, বিবাহ হইয়াছে কি না, তাহা মাণিকলাল কিছই বলিতে পারিল না। নিম্পমাল তখন স্বয়ং চঞ্চলকুমারীকে দেখিতে আসিলেন। অনেক দিনের পর নিম্পমালকে দেখিয়া চঞ্চলকুমারী অত্যন্ত আনন্দিতা হইলেন। সে দিন নিশম্যািলকে যাইতে দিলেন না। রহপনগর পরিত্যাগ করার পর যাহা যাহা ঘটিয়াছিল, তাহা পরস্পর পরস্পরের কাছে সবিস্তারে বলিলেন। নিৰ্ম্মমলের সখি শনিয়া চঞ্চলকুমারী আহমাদিতা হইলেন। সখ—কেন না, মাণিকলাল রাণার কাছে অনেক পরিস্কার পাইয়াছিলেন—অনেক টাকা হইয়াছে; তার পর, মাণিকলাল রাণার অনগ্রহে সৈন্যমধ্যে অতি উচ্চ পদে প্ৰতিস্ঠিত হইয়াছেন; এবং রাজসম্পমানে গৌরবান্বিত হইয়াছেন; নিশ্চমালের উচ্চ অট্টালিকা, ধন-দৌলত, দাস-দাসী সব হইয়াছে, এবং মাণিকলাল তাঁহার কেনা গোলাম হইয়াছে। পক্ষান্তরে, নিৰ্ম্মমল, চঞ্চলকুমারীর দুঃখ শনিয়া অতিশয় মৰ্ম্মাহত হইল। এবং চ৭8লকুমারীর পিতা-মাতা, রাজসিংহ এবং চঞ্চলকুমারীর উপর অতিশয় বিরক্ত হইল। চঞ্চলকুমারীকে সে মহারাণী বলিয়া ডাকিতে অস্বীকৃত হইল—এবং মহারাণার সাক্ষাৎ পাইলে, তাঁহাকে দই কথা শনাইয়া দিবে, প্রতিজ্ঞা করিল। চঞ্চলকুমারী বলিল, “সে সকল কথা এখন থাক। আমার সঙ্গে আমার একটি চেনা লোক নাই। আত্মীয়-স্বজন কেহ নাই। আমি এ অবস্থায় এখানে থাকিতে পারি না। যদি ভগবান তোমাকে মিলাইয়াছেন, তবে আমি তোমাকে ছাড়িব না। তোমাকে আমার কাছে থাকিতে হইবে।” 爵 শনিয়া, প্রথমে নিৰ্ম্মলের বোধ হইল, যেন বকের উপর পাহাড় ভাঙ্গিয়া পড়িল। এই সে সবে স্বামী পাইয়াছে—নতন প্রণয়, নািতন সখি, এ সব ছাড়িয়া কি চঞ্চলকুমারীর কাছে আসিয়া থাকা যায় ? নিৰ্ম্মলকুমারী হঠাৎ সম্মত হইতে পারিল না—কোন মিছা ওজর করিল না—কিন্তু আসল কথা ভাঙিগয়াও বলিতে পারিল না ! বলিল, “ও বেলা বলিব।" চঞ্চলকুমারীর চক্ষে একট, জল আসিল; মনে মনে বলিল, “নিৰ্ম্মলও আমায় ত্যাগ করিল! হে ভগবান! তুমি যেন আমায় ত্যাগ করিও না।” তার পর চঞ্চলকুমারী একট, হাসিল, বলিল, “নিমািল, তুমি আমার জন্য এক পদব্রজে রােপনগর হইতে চলিয়া আসিয়া মরিতে বসিয়াছিলে! আর আজ ! আজি তুমি স্বামী পাইয়াছ!” নিৰ্ম্মমল অধোবাদন হইল। আপনাকে শত ধিক্কার দিল; বলিল, “আমি ও বেলা আসিব, যাহাকে মালিকা করিয়াছি, তাহাকে একবার জিজ্ঞাসা করিতে হইবে। আর একটা মেয়ে ঘাড়ে পড়িয়াছে, তাহার একটা ব্যবস্থা করিতে হইবে।” চঞ্চল। মেয়ে না হয়, এখানে আনিলে ? নিৰ্ম্মমল। সে খ্যান-খ্যান্য প্যান-প্যান্য এখানে কাজ নাই। একটা পাতান রকম পিসী আছে--সেটাকে ডাকিয়া বাড়ীতে বসাইয়া আসিব । এই সকল পরামর্শের পর নিম্মলকুমারী বিদায় লইল । গনুহে গিয়া মাণিকলালকে সমস্ত বত্তান্ত জানাইল। মাণিকলােলও নিৰ্ম্মলকে বিদায় দিতে বড় কািট বোধ করিল। কিন্তু সে নিতান্ত প্ৰভুভক্ত, আপত্তি করিল না। পিসীমা আসিয়া কন্যাটির ভার লাইলেন। পঞ্চম পরিচ্ছেদ ঃ সে প্রয়োজন কি ? নিৰ্ম্মমল শিবিকারোহণে দাস-দাসী সঙ্গে লইয়া রাণার অন্তঃপরাভিমখে চলিতেছেন। পথিমধ্যে বড় চক বা চৌকি। তাহার একটা বাড়ীতে বড় লোকের ভিড়। নিৰ্ম্মমলের দোলা বহমাল্য বস্ত্রে আব্বত ছিল। কিন্তু জনমন্দোর শব্দে তিনি কোঁত, হল্যাক্লান্ত হইয়া, আবরণ \ჟ \ხტ \5)