পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৭০০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

झाङन्निश्छ् শ্রেণী দেখিয়াছিলাম, লক্ষ অস্ত্রের ঝঞ্চনা শনিয়াছিলাম—তার একখানিতে আমার সব জবালা পারে; কৈ, সে চেস্টা ত করি নাই ? হাতীর উপর হইতে লাফাইয়া পড়িয়া, হাতীর পায়ের তলে পিষিয়া মরিতে পারিতাম,-কৈ ? সে চেস্টাও ত করি নাই। কেন করি নাই ? মরিবার ইচ্ছা আছে, কিন্তু মরিবার উদ্যোগ করি নাই কেন ? এখনও ত অঙ্গে অনেক হীরা আছে, গড়াইয়া খাইয়া মারি না কেন ? আমার মনের আর সে শক্তি নাই যে, উদ্যোগ করিয়া মরি।” এমন সময়ে বেগবান বায়, মক্তদবার কক্ষমধ্যে, অতি বেগে প্রবেশ করিয়া সমস্ত বাতি নিবাইয়া দিল। অন্ধকারে জেব-উন্নিসার মনে একটা ভয়ের সঞ্চার হইল। জেব-উন্নিসা ভাবিতে লাগিল, “ভয় কেন ? এই তা মরণ কামনা করিতেছিলাম! যে মরিতে চাহে, তার আবার কিসের ভয় ? ভয় ? কাল মরা মানষে দেখিয়াছি, আজও বাঁচিয়া আছি। ) বঝি যেখানে মরা মানষি থাকে, সেইখানে যাইব, ইহা নিশ্চিত; তবে ভয় কিসের ? তবে বেহেস্ত আমার কপালে নাইবঝি জাহান্নায় যাইতে হইবে, তাই এত ভয়! তা, এত দিন এ সকল কথা কিছই বিশ্ববাস করি নাই। জাহান্নাও মানি নাই, বেহেস্তও মানি নাই; খোদাও জানিতাম না, দীন ও জানিতাম না। কেবল ভোগবিলাসই জানিতাম। আল্লা রহিমা! তুমি কেন ঐশবষ্য দিয়াছিলে ? ঐশবয্যেই আমার জীবন বিষময় হইল। তোমায় আমি তাই চিনিলাম না। ঐশবয্যে সখি নাই, তাহা আমি জানিতাম না, কিন্তু তুমি ত জান ! জানিয়া শনিয়া নিদায় হইয়া কেন এ দঃখ দিলে ? আমার মত ঐশ্বব্যয্য কাহার কপালে ঘটিয়াছে ? আমার মত দঃখী কে ?” শয্যায় পিপীলিকা, কি অন্য একটা কীট ছিল—রত্নশয্যাতেও কীটের সমাগমের নিষেধ নাই —কীট জেব-উন্নিসাকে দংশন করিল। যে কোমলাঙ্গে পৎপধন্বাও শরাঘাতের সময়ে মদ্যহস্তে বাণিক্ষেপ করেন, তাহাতে কীট অবলীলাক্লমে দংশন করিয়া রক্ত বাহির করিল। জেব-উন্নিসা জবালায় একটা কাতর হইল। তখন জেব-উন্নিসা মনে মনে একট, হাসিল। ভাবিল, “পিপীলিকার দংশনে আমি কাতর।!! এই অনন্ত দঃখের সমযেও কাতর।!! আপনি পিপীলিকাদংশন সহ্য করিতে পারিতেছি না, আর অবলীলাক্লমে আমি, যে আমার প্রাণাধিক প্রিয়, তাহাকে ভুজঙ্গমদংশনে প্রেরণ করিলাম। এমন কেহ নাই কি যে, আমাকে তেমনই বিষধর সাপ আনিয়া দেয় ! হয়। সাপ, নয় মবারক!” প্রায় সকলেরই ইহা ঘটে যে, অধিক মানসিক যন্ত্রণার সময়, অধিক ক্ষণ ধরিয়া একা, মৰ্ম্মভেদী চিন্তায় নিমগন হইলে মনের কোন কোন কথা ম্যুখে ব্যক্তি হয়। জেব-উন্নিসার শেষ কথা কয়টি সেইরাপ মাখে ব্যক্ত হইল। তিনি সেই অন্ধকার নিশীথে, গাঢ়ন্ধকার কক্ষমধ্য হইতে, সেই বায়ার হােঙ্কার ভেদ করিয়া যেন কাহাকে ডাকিয়া বলিলেন, “হয় সাপ! নয় মবারক!” কেহ সেই অন্ধকারে উত্তর করিল, “মবারককে পাইলে তুমি কি মরিবে না ?” “এ কি এ ?” বলিয়া জেব-উন্নিসা উপাধান ত্যাগ করিয়া উঠিয়া বসিল । যেমন গীতধানি শনিয়া হরিণী উন্নমিতাননে উঠিয়া বসে, তেমনই করিয়া জেব-উন্নিসা উঠিয়া বসিল। বলিল, “এ কি এ ? এ কি শনিলাম ? কার ও আওয়াজ ?” জেব-উন্নিসা বলিল, “কার!! যে বেহেস্তে গিয়াছে, তারও কি কন্ঠস্বর আছে! সে কি ছায়া মাত্র নহে? তুমি কি প্রকারে বেহেস্ত হইতে আসিতেছ, যাইতেছ, মবারক ? তুমি কাল দেখা দিয়াছিলে, আজ তোমার কথা শানিলাম—তুমি মতে, না জীবিত ? আসিরাদ্দীন কি আমার কাছে মিছা কথা বলিয়াছিল ? তুমি জীবিত হও, মাত হও, তুমি আমার কাছে।---আমার এই পালণ্ডেক মহত্ত জন্য বসিতে পার না ? তুমি যদি ছায়া মাত্রই হও, তব, আমার ভয় নাই। একবার বসে।[ | ” জেব-উন্নিসা সকাতরে বলিল, “আমি কিছ: বলিব। আমি যাহা কখন বলি নাই, তাহা বলিব ।” মবারক-(বলিতে হইবে না যে, মবারক সশরীর উপস্থিত) তখন অন্ধকারে, জেব-উন্নিসার পাশে বা পালঙেকর উপর বসিল। জেব-উন্নিসার বাহতে তাহার বাহ সপশ হইল,-জেব-উন্নিসার শরীর হষী কন্টকিত, আহাদে পরিপািলত হইল;—অন্ধকারে মত্তার সারি গান্ড দিয়া বহিল। জেব-উনিসা আদরে মবারকের হােত আপনার হাতের উপর তুলিয়া লইল । বলিল, “ছায়া C Ndà