পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৭০৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

রাজসিংহ চঞ্চল, চক্ষর জল মাছিয়া, লজায় একটা হাসিল। নিম্পমালও হাসিল। তখন নিম্পমাল হাসিয়া বলিল, “আমি দিল্লীর বাদশাহের কাছে কখন অপ্রতিভ হই নাই—তোমার কাছে অপ্রতিভ হইলাম—ইহা দিল্লীর বাদশাহের পক্ষে বড় লড়াজার কথা। ইমলি বেগমেরও কিছ: লতজার কথা। তা, তুমি একবার ইমলি বেগমের মনশীআনা দেখ। দোওয়াত কলম লইয়া লিখিতে আরম্ভ করা—আমি বলিয়া যাইতেছি। ” চণ8ল জিজ্ঞাসা করিল, “কাহাকে লিখিব—মাকে, না বােপকে ?” নিৰ্ম্মমল বলিল, “বাপকে । “ চ৭gল পাঠ লিখিলে, নিৰ্ম্মমল বলিয়া যাইতে লাগিল, “এখন মোগল বাদশাহ মহারাণার হসেত”— “বাদশাহ' পৰ্যন্ত লিখিয়া চ৭9লকুমারী বলিল, “মহারাণার হস্তে" লিখিব না—“রাজপতের হস্তে" লিখিব। নিম্মলকুমারী ঈষৎ হাসিয়া বলিল, “তা লেখা।” তার পর নিম্পমালের কথন মতে চ৭8ল লিখিতে লাগিল— “হস্তে পরাভব প্ৰাপত হইয়া রাজপতনা হইতে তাড়িত হইয়াছেন। এক্ষণে আর তাঁহার আমাদিগের উপর বলপ্রকাশ করিবার সম্পভাবনা নাই। এক্ষণে আপনার সন্তানের প্রতি আপনার কি আজ্ঞা ? আমি আপনারই অধীন—“ পরে নিম্মল বলিল, “মহারাণার অধীন নই।” চঞ্চল বলিল, “দর হা পাপিঠা৷ ” সে কথা লিখিল না। নিৰ্ম্মমল বলিল, “তবে লেখ, “আIব কাহারও অধীন নাই” । “ অগত্য চ৭8ল তাহাই লিখিল । এইরুপ পত্র লিখিত হইলে, নিৰ্ম্মমল বলিল, “এখন রপনগর পাঠাইয়া দাও।” পত্ৰ রপনগরে প্রেরিত হইল। উত্তরে রপনগরের রাও লিখিলেন, “আমি দই হাজার ফৌজ লইয়া উদয়পাের যাইতেছি। ঘাট খালিয়া রাখিতে রাণাকে বলিবে।” এই আশ্চৰ্য্য উত্তরের অর্থ কি, তাহা চঞ্চল ও নিৰ্ম্মমল কিছই স্থির করিতে পারিল না। পরিশেষে তাহারা বিচারে স্থির করিল যে, যখন ফৌজের কথা আছে, তখন রাণাকে অবগত কবা আবশ্যক। নিৰ্ম্মলকুমারী মাণিকলালের নিকট সংবাদ পাঠাইয়া দিল। রাণাও সেইরােপ গোলযোগে পড়িয়াছিলেন। চঞ্চলকুমারীকে ভুলেন নাই। তিনি বিক্ৰম সোলাঙ্কিকে পত্র লিখিয়াছিলেন। পত্রের মাম্পমা, চঞ্চলকুমারীর বিবাহের কথা। বিক্ৰম সিংহ কন্যাকে শাপ দিয়াছিলেন, রাণা তাহা স্মরণ করাইয়া দিলেন। আর তিনি যে অঙ্গীকার করিয়াছিলেন যে, তিনি যখন রাজসিংহকে উপযক্ত পােত্র বিবেচনা করিবেন, তখন তাঁহাকে আশীৰ্ব্ববাদের সহিত কন্যা সম্প্রদান করিবেন, তাহাও সমরণ করাইলেন। রাণা জিজ্ঞাসা করিলেন, “এখন আপনার কিরােপ অভিপ্রায় ?” এই পত্রের উত্তরে বিক্ৰম সিংহ লিখিলেন, “আমি দই হাজার অশবারোহী লইয়া আপনার নিকট যাইতেছি। ঘাট ছাড়িয়া দিবেন।” রাজসিংহ, চ৭৮লকুমারীর মত সমস্যা বঝিতে পারিলেন না। ভাবিলেন, “দই হাজার মাত্র আশবারোহী লইয়া বিক্ৰম আমার কি করিবে ? আমি সতক আছি।” অতএব তিনি বিক্ৰমকে ঘাট ছাড়িয়া দিবার আদেশ প্রচার করিলেন । দ্বাদশ পরিচ্ছেদ ঃ অগ্নি পািনজৰালিত উদয়সাগরের তীরে ফিরিয়া আসিয়া, ঔরঙগজেব তথায় শিবির সন্থাপন ও রাত্রি যাপন করিলেন। সৈনিক ও বাহকগণ খাইয়া বাঁচিল । তখন সিপাহী মহালে গান, গলপ এবং নানাবিধ রসিকতা আরম্ভ হইল। একজন মোগল বলিল, “হিন্দরে রাজ্যে আসিয়াছি বলিয়া আমরা একাদশীর উপবাস করিয়াছিলাম।” শনিয়া একজন মোগলানী বলিল, “বাঁচিয়া আছ, তব, ভাল। আমরা মনে করিয়াছিলাম, তোমরা নাই—তাই আমরাও একাদশী করিয়াছিলাম।” একজন গায়িকা কতকগািল সৌখীন মোগলদিগের সম্পম খে। গীত করিতেছিল; গায়িতে গায়িতে তাহার তাল কাটিয়া গেল। একজন শ্রোতা জিজ্ঞাসা করিল, “বিবিজান ! এ কি হইল ? তাল কাটিল যে ?” গায়িকা বলিল, “আপনাদের য়ে বীরপনা দেখিলাম, তাহাতে আর হিন্দ স্থানে SJ Գ Օ Գ