পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৭১৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বঙিকম রচনাবলী মখে আহার দিতে পরিবেন। কিন্তু কই ? চাটনীতে ত মনষ্যে নাই! বড় বড় ঘর পড়িয়া আছে, মানষে সকল পলাইয়াছে। মহেন্দ্র ইতস্ততঃ নিরীক্ষণ করিয়া সত্ৰী কন্যাকে একটি ঘরের ভিতর শোয়াইলেন । বাহির হইয়া উচ্চৈঃস্বরে ডাক হকি করিতে লাগিলেন। কাহারও উত্তর পাইলেন না। তখন মহেন্দ্র কল্যাণীকে বলিলেন, “একটা তুমি সাহস করিয়া একা থােক, দেশে যদি গাই থাকে, শ্ৰীকৃষ্ণ দয়া করন, আমি দধি আনিব।" এই বলিয়া একটা মাটির কলসী হাতে করিয়া মহেন্দ্ৰ নিৰ্ভক্রান্ত হইলেন। কলসী আনেক পড়িয়া ছিল। দ্বিতীয় পরিচ্ছেদ মহেন্দ্ৰ চলিয়া গেল। কল্যাণী এক বালিকা লইয়া সেই জনশন্য সন্থানে প্রায়-অন্ধকার কুটীরমধ্যে চারি দিক নিরীক্ষণ করিতেছিলেন। তাঁহার মনে মনে ভয় হইতেছিল। কেহ। কোথাও নাই, মনষ্যেমাত্রের কোন শবদ পাওয়া যায় না, কেবল শািগাল-কুক্করের রব। ভাবিতেছিলেন, কেন তাঁহাকে যাইতে দিলাম, না হয়। আর কিছশক্ষণ ক্ষধা-তৃষ্ণা সহ্য করিতাম। মনে করিলেন, চারি দিকে দবার রদ্ধ করিয়া বসি । কিন্তু একটি দবারেও কপাট বা আগলি নাই। এইরপ চারি দিক চাহিয়া দেখিতে দেখিতে সম্পমখস্থ দবারে একটা কি ছায়ার মত দেখিলেন। মনষ্যাকৃতি বোধ হয়, কিন্তু মনানুষ্যও বোধ হয় না। অতিশয় শতক, শীর্ণ—অতিশয় কৃষ্ণবণ, উলঙ্গ, বিকটাকার মনতুষ্যের মত কি আসিয়া দবারে দাঁড়াইল। কিছফক্ষণ পরে সেই ছায়া যেন একটা হাত তুলিল, অস্থিচৰ্ম্মম বিশিস্ট, অতি দীঘ, শাহুক হস্তের দীঘ শম্ভক অঙ্গলি দ্বারা কাহাকে যেন সঙ্কেত করিয়া ডাকিল। কল্যাণীর প্রাণ শকাইল। তখন সেইরােপ আর একটা ছায়া—শত্ৰুক, কৃষ্ণবর্ণ, দীঘাকার, উলঙ্গ-প্রথম ছায়ার পাশে আসিয়া দাঁড়াইল। তার পর আর একটা আসিল, তার পর আরও একটা আসিল । কত আসিল, ধীরে ধীরে নিঃশবেদ তাহারা গহমধ্যে প্রবেশ করিতে লাগিল। সেই প্রায়-অন্ধকার গহ নিশীথ-শামশানের মত ভয়ঙ্কর হইয়া উঠিল। তখন সেই প্রেতিবৎ মাত্তি সকল কল্যাণী এবং তাঁহার কন্যাকে ঘিরিয়া দাঁড়াইল। কল্যাণী প্রায় মচ্ছি তা হইলেন। কৃষ্ণবৰ্ণ শীর্ণ পরিষেরা তখন কল্যাণী এবং তাঁহােব কন্যাকে ধরিয়া তুলিয়া, গাহের বাহির করিয়া, মাঠ পার হইয়া এক জওগলমধ্যে প্রবেশ করিল। কিছফক্ষণ পরে মহেন্দ্র কলসী করিয়া দগধ লইয়া সেইখানে উপস্থিত হইল। দেখিল, কেহ। কোথাও নাই, ইতস্ততঃ অননুসন্ধান করিল, কন্যার নাম ধরিয়া, শেষ সত্ৰীব নাম ধরিয়া অনেক ডাকিল : কোন উত্তর, কোন সন্ধান পাইল না। डूडीश ब्रिहष्छा যে বনমধ্যে দস্যরা কল্যাণীকে নামাইল, সে বন অতি মনোহর। আলো নাই, শোভা দেখে এমন চক্ষও নাই, দরিদ্রের হৃদয়ান্তগত সৌন্দয্যের ন্যায় সে বনের সৌন্দৰ্য্য অদম্পট রহিল। দেশে আহার থাকুক বা না থাকুক-বনে ফল আছে, ফলের গন্ধে সে অন্ধকারেও আলো বোধ হইতেছিল। মধ্যে পরিভ্রকৃত সংকোমল শৰৎপাবত ভূমিখন্ডে দস্যরা কল্যাণী ও তাঁহার কন্যাকে নামাইল । তাহারা তাঁহাদিগকে ঘিরিয়া বসিল । তখন তাহারা বাদানবোদ করিতে লাগিল যে, ইহাদিগকে লইয়া কি করা যায়—যে কিছ, অলঙ্কার কল্যাণীর সঙ্গে ছিল, তাহা পকেবই তাহারা হস্তগত করিয়াছিল। একদল তাহার বিভাগে ব্যতিব্যস্ত। অলঙ্কারগলি বিভক্ত হইলে, একজন দস্য বলিল, “আমরা সোণা-রাপা লইয়া কি করিব, একখানা গহনা লইয়া কেহ আমাকে এক মটাে চাল দাও, ক্ষধায় প্রাণ যায়—আজি কেবল গাছের পাতা খাইয়া আছি।” একজন এই কথা ৱিলিলে সকলেই সেইরােপ বলিয়া গোল করিতে লাগিল। “চাল দাও”, “চাল দাও”, “ক্ষধায় প্ৰাণ যায়, সোণা-র পা চাহি না।” দলপতি তাহাদিগকে থামাইতে লাগিল, কিন্তু কেহ থামে না, ক্ৰমে উচ্চ উচ্চ কথা হইতে লাগিল, গালােগালি হইতে লাগিল, মারামারিব উপক্ৰম । যে, যে অলঙকার ভাগে পাইয়াছিল, সে, সে অলঙ্কার রাগে তাহার দলপতির গায়ে ছড়িয়া মারিল। দলপতি দই এক জনকে মারিল, তখন সকলে দলপতিকে আক্রমণ করিয়া তাহাকে আঘাত করিতে লাগিল। দলপতি অনাহাবে শীর্ণ এবং ক্লিন্ট ছিল, দই এক আঘাতেই ভূপতিত হইয়া a Sty Om