পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৭৬৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

बज्किा ब्रा5न्मावब्जी হয় রাজপরিষে মাথা কাটিয়া লইয়া যাইবে, নয় সন্তানেরাই বিশ্বাসঘাতী বলিয়া মারিয়া ফেলিয়া চলিয়া যাইবে । এই জন্য তোমাকে আমার পথে লইয়া যাইতে চাই। ভব। কেন, আমায় কেন ? ধীর। সেইটি আসল কথা। এই সন্তানসেনা তোমার আজ্ঞাধীন—সত্যানন্দ এখন এখানে নাই, তুমি ইহার নায়ক। তুমি এই সেনা লইয়া যাদ্ধ করা, তোমার জয় হইবে, ইহা আমার দঢ় বিশবাস। যাদ্ধ জয় হইলে তুমি কেন সর্বনামে রাজ্য সস্থাপন কর না, সেনা ত তোমার আজ্ঞাকারী। তুমি রাজা হও—কল্যাণী তোমার মন্দোদরী হউক, আমি তোমার অনাচর হইয়া সত্ৰীপত্রের মােখাবলোকন করিয়া দিনপাত করি, আর আশীৰ্ব্ববাদ করি। সন্তানধৰ্ম্মম অতল জলে ডুবাইয়া দাও । ভবানন্দ, ধীর।ানন্দের স্কন্ধ হইতে তরবারি ধীরে ধীরে নামাইলেন। বলিলেন, “ধীরানন্দ, যাদ্ধ করা, তোমায় বধ করিব। আমি ইন্দ্রিয়াপরবশ হইয়া থাকিব, কিন্তু বিশ্বাসহন্ত নই। তুমি আমাকে বিশবাসঘাতক হইতে পরামর্শ দিয়ােছ। নিজেও বিশ্ববাসঘাতক, তোমাকে মারিলে ব্ৰহ্মহত্যা হয় না। তোমাকে মারিব।” ধীর।ানন্দ কথা শেষ হইতে না হইতেই উদ্ধবশ্বাসে পলায়ন করিল। ভবানন্দ তাহার পশ্চাদবত্তীর্ণ হইলেন না। ভবানন্দ কিছযক্ষণ অন্যমনা ছিলেন, যখন খাজিলেন, তখন আর তাহাকে দেখিতে পাইলেন না। ষািঠ পরিচ্ছেদ মাঠে না গিয়া ভবানন্দ গভীর বনমধ্যে প্রবেশ করিলেন । সেই জওগলমধ্যে এক সন্থানে এক প্রাচীন অট্টালিকার ভাগনাবশেষ আছে। ভগনাবাশিস্ট ইস্টকাদির উপর, লতাগলমকণটকাদি অতিশয় নিবিড়ভাবে জন্মিয়াছে। সেখানে অসংখ্য সপোের বাস । ভগন প্রকোন্ঠের মধ্যে একটি অপেক্ষাকৃত অভগন ও পরিস্কৃত ছিল, ভবানন্দ গিয়া তাহার উপরে উপবেশন করিলেন। উপবেশন করিয়া ভবানন্দ চিন্তা করিতে লাগিলেন। রজনী ঘোর তমোময়ী। তাহাতে সেই অরণ্য অতি বিস্তৃত, একেবারে জনশন্যে, অতিশয় নিবিড়, বাক্ষলতা দাভেদ্য, বন্য পশরেও গমনাগমনের বিরোধী। বিশাল, জনশন্য, অন্ধকার, দাভেদ্য, নীরব ! রবের মধ্যে দরে ব্যান্ত্রের হােঙ্কার অথবা অন্য শব্যাপদের ক্ষধা, ভীতি বা আসিফালনের বিকট শবদ । কদাচিৎ কোন বহৎ পক্ষীর পক্ষকক্ষপন, কদাচিৎ তাড়িত এবং তাড়নকারী, বধ্য এবং বধকারী পশদিগের দ্রুতগামন-শবদ । সেই বিজনে অন্ধকারে ভগন অট্টালিকার উপর বসিয়া একা ভবানন্দ । তাঁহার পক্ষে তখন যেন পথিবী নাই, অথবা কেবল ভয়ের উপাদানময়ী হইযা আছেন । সেই সময়ে ভবানন্দ কপালে হাত দিয়া ভাবিতেছিলেন : সম্পন্দ নাই, নিশ্বাস নাই, ভয় নাই, অতি প্রগাঢ় চিন্তায় নিমগ্ন। মনে মনে বলিতেছিলেন, “যাহা ভবিতব্য, তাহা অবশ্য হইবে। আমি ভাগীরথীজলতরঙ্গসমীপে ক্ষদ্র গজের মত ইন্দ্ৰিয়স্রোতে ভাসিয়া গেলাম, ইহাই আমার দঃখ ৷ এক মহত্তে দেহের ধবংস হইতে পারে,--দেহের ধবংসেই ইন্দ্ৰিয়ের ধবংস—আমি সেই ইন্দ্ৰিয়ের বশীভূত হইলাম ? আমার মরণ শ্রেয়। ধৰ্ম্মত্যাগী ? ছিা! মরিব !” এমন সময়ে পেচক মাথার উপর গম্ভীর শব্দ করিল। ভবানন্দ তখন মন্তকণ্ঠে বলিতে লাগিলেন, “ও কি শবদ গৈ কাণে যেন গেল, যম আমায় ডাকিতেছে। আমি জানি না-কে শবদ করিল, কে আমায় ডাকিল, কে আমায় বিধি দিল, কে মরিতে বলিল! পণ্যময়ি অনন্তে! তুমি শব্দময়ী, কিন্তু তোমার শব্দের ত মৰ্ম্ম আমি বঝিতে পারিতেছি না। আমায় ধৰ্ম্মেম মতি দাও, আমায় পাপ হইতে নিরত কর। ধৰ্ম্মেম , -হে গরদেব ! ধৰ্ম্মে যেন আমার মতি থাকে!! : তখন সেই ভীষণ কাননমধ্য হইতে অতি মধরে অথচ গম্ভীর, মৰ্ম্মভেদী মনষ্যেকণ্ঠ শ্রত হইল ; কে বলিল, “ধৰ্ম্মেম তোমার মতি থাকিবে-—আশীৰ্ব্ববাদ করিলাম।” ভবানন্দের শরীরে রোমাণ্ড হইল। “এ কি এ ? এ যে গাের দেবের কন্ঠ। মহারাজ, কোথায় আপনি ! এ সময়ে দাসকে দশন দিন।” কিন্তু কেহ দশন দিল না—কেহ উত্তর করিল না। ভবানন্দ পােনঃ পািনঃ ডাকিলেন—উত্তর পাইলেন না। এদিক ওদিক খাজিলেন—কোথাও কেহ নাই। যখন রজনী প্ৰভাতে প্ৰাতঃসায্য উদিত হইয়া বহৎ অরণ্যের শিরঃস্থ শ্যামল পত্ররাশিতে C V V