পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৭৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

STSThale কল্যাণীর শয়নঘরে গিয়া দেখিলেন যে, নবীনানন্দ গহমধ্যে দাঁড়াইয়া আছে, কল্যাণী তাঁহার গায়ে হাত দিয়া বাঘছালের গ্রন্থি খলিয়া দিতেছেন। মহেন্দ্র অতিশয় বিস্ময়াপন্ন হইলেন—অতিশয় রস্ট হইলেন। নবীনানন্দ তাঁহাকে দেখিয়া হাসিয়া বলিল, “কি গো গোঁসাই! সন্তানে সন্তানে অবিশ্ববাস ?” মহেন্দ্ৰ বলিলেন, “ভবানন্দ ঠাকুর কি বিশ্ববাসী ছিলেন ?” নবীনানন্দ চােখ ঘরাইয়া বলিল, “কল্যাণী কি ভবানন্দের গায়ে হাত দিয়া বাঘছাল খালিয়া দিত ?” বলিতে বালিতে শান্তি কল্যাণীর হাত টিপিয়া ধরিল, বাঘছাল খলিতে দিল না। ম। তাতে কি ? ন। আমাকে অবিশ্ববাস করিতে পারেন-কল্যাণীকে অবিশ্ববাস করেন কোন হিসাবে ? এবার মহেন্দ্র বড় অপ্রতিভ হইলেন। বলিলেন, “কই, কিসে অবিশ্ববাস করিলাম ?” ন। নহিলে আমার পিছৰ পিছ অন্তঃপারে আসিয়া উপস্থিত কেন ? ম। কল্যাণীর সঙ্গে আমার কিছু কথা ছিল; তাই আসিয়াছি। ন। তবে এখন যান। কল্যাণীর সঙ্গে আমারও কিছ, কথা আছে। আপনি সরিয়া যান, আমি আগে কথা কই। আপনার ঘর বাড়ী, আপনি সব্বদা আসিতে পারেন, আমি কন্টে একবার আসিয়াছি। মহেন্দ্ৰ বোকা হইযা রহিলেন। কিছই বঝিতে পারিতেছেন না। এ সকল কথা ত অপরাধীর কথাবাত্তার মত নহে। কল্যাণীরও ভাব বিচিত্র। সেও ত অবিশবাসিনীর মত পলাইল না, ভীত হইল না, লডিজ তা নহে।--কিছুই না, বরং মদ, মদ হাসিতেছে। আর কল্যাণী— যে সেই বােক্ষতলে অনায়াসে বিষ ভোজন কবিয়াছিল-- সে কি অপরাধিনী হইতে পারে ? মহেন্দ্র এই সকল ভাবিতেছেন, এমত সময়ে অভাগিনী শান্তি, মহেন্দ্রের দরবস্থা দেখিয়া ঈষৎ হাসিয়া কল্যাণীর প্রতি এক বিলোল কটাক্ষ নিক্ষেপ করিল। সহসা তখন অন্ধকার ঘচিল—মহেন্দ্র দেখিলেন, এ যে রমণীকটাক্ষ। সাহসে ভর করিয়া, নবীনানন্দের দাড়ি ধরিয়া মহেন্দ্ৰ এক টান দিলেন—কৃত্রিম দাড়ি-গোঁপ খসিয়া আসিল । সেই সময়ে অবসর পাইয়া কল্যাণী বাঘছালের গ্রন্থি খলিয়া ফেলিল—বাঘছালও খসিয়া পড়িল। ধরা পড়িয়া শান্তি অবনতমখী হইয়া রহিল। মহেন্দ্র তখন শান্তিকে জিজ্ঞাসা করিলেন, “তুমি কে ?” শা। শ্ৰীমান নবীনানন্দ গোস্বামী। ম। সে ত জন্য চুরি ; তুমি স্ত্রীলোক ? শ। এখন কাজে কাজেই । ম। তবে একটা কথা জিজ্ঞাসা করি তুমি স্ত্রীলোক হইয়া সৰ্ব্বদা জীবানন্দ ঠাকুরের সহবাস কর কেন ? শা। সে কথা আপনাকে নাই বলিলাম । ম। তুমি যে সত্ৰীলোক, জীবানন্দ ঠাকুর তা কি জানেন ? ? | Gr শনিয়া, বিশদ্ধাত্মা মহেন্দ্র অ৩িশয় বিষগ্ন হইলেন। দেখিয়া কল্যাণী আব্ব থাকিতে পারিল না; বলিল, “ইনি জীবানন্দ গোস্বামীবা ধর্মম পত্নী শান্তিদেবী।” মহন্ত জন্য মহেন্দ্রের মাখ প্ৰফল্প হইল। আবার সে মাখ অন্ধকারে ঢাকিল। কল্যাণী বঝিল, বলিল, “ইনি ব্রহ্মচারিণী।” চতুর্থ পরিচ্ছেদ উত্তর বাঙ্গালা মসলমানের হাতছাড়া হইয়াছে। মানুসলমান কেহই এ কথা মানেন না— মনকে চোখ ঠারেন— বলেন, কতকগলো লাঠেড়াতে বড় দৌরাত্ম্য করিতেছে —শাসন করিতেছি। এইরনুপ কত কাল যাইত বলা যায় না; কিন্তু এই সময়ে ভগবানের নিয়োগে ওয়ারেন হেস্টিংস কলিকাতার গবর্ণর জেনাবেল। ওয়ারেন হেস্টিংস মনকে চোখ ঠারিবার লোক নহেন—তাঁর সে বিদ্যা থাকিলে আজ ভারতে ব্রিটিশ সাম্রাজ্য কোথায় থাকিত ? আগৌণে সন্তানশাসনাথে Major Edwards নামা দ্বিতীয় সেনাপতি নািতন সেনা লইয়া উপস্থিত হইলেন। Գ Գ Տ