পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৮০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

न८शभर्नान्झनौं “ও গো-বাবা গো—” বলিয়াই দিগগজ একেবারে চম্পট। দীঘ দীঘ চরণ-তিলাদ্ধ মধ্যে অন্ধ ক্লোশ পার হইয়া গেলেন। বিমলা গজপতির সর্বভাব জানিতেন; অতএব বেশ বঝিতে পারিলেন যে, তিনি একেবারে দগৰ্ব-দাবারে গিয়া উপস্থিত হইবেন। বিমলা তখন নিশিচন্ত হইয়া মন্দিরাভিমখে চলিলেন। বিমলা সকল দিক ভাবিয়া আসিয়াছিলেন, কেবল একদিক ভাবিয়া আইসেন নাই; রাজপত্ৰ মন্দিরে আসিয়াছেন কি ? মনে এইরহপ সন্দেহ জন্মিলে বিমলার বিষম ক্লেশ হইল। মনে করিয়া দেখিলেন যে, রাজপত্র আসার নিশ্চিত কথা কিছই বলেন নাই; কেবল বলিয়াছিলেন যে, “এইখানে তঁমামার সাক্ষাৎ পাইবে; এখানে না দেখা পাও, তবে সাক্ষাৎ হইল না।” তবে ত না। আসারও সম্ভাবনা ৷ যদি না আসিয়া থাকেন, তবে এত ক্লেশ ব্যথা হইল। বিমলা বিষন্ন হইয়া আপনা। আপনি কহিতে লাগিলেন, “এ কথা আগে কেন ভাবি নাই ? ব্রাহ্মণকেই বা কেন তাড়াইলাম ? একাকিনী এ রাত্রে কি প্রকারে ফিরিয়া যাইব । শৈলেশবের ! তোমার ইচ্ছা।” বটবক্ষেতল দিয়া শৈলেশ্ববর-মন্দিরে উঠিতে হয়। বিমলা বােক্ষতল দিয়া যাইতে দেখিলেন যে, তথায় ষান্ড নী।াই; বক্ষমতুলে যে ধবল পদাৰ্থ দেখিয়াছিলেন, তাহা আর তথায় নাই। বিমলা কিঞ্চিৎ বিস্মিত হইলেন; ষন্ড কোথাও উঠিয়া গেলে প্রান্তর মধ্যে দেখা যাইত। বিমলা বক্ষমতলের প্রতি বিশেষ দক্ষিটপাত করিলেন; বোধ হইল, যেন বক্ষের পশ্চাদিকসােথ কোন মনষ্যের ধবল পরিচ্ছদের অংশমাত্ৰ দেখিতে পাইলেন, সাতিশয় চঞ্চলপদে মন্দিরাভিমখে চলিলেন ; সবলে কবাট করতাড়িত করিলেন। কবাট বন্ধ। ভিতর হইতে গম্ভীর সবরে প্রশন হইল, “কে ?” শন্য মন্দিরমধ্য হইতে গম্ভীর সবরে প্রতিধবনি হইল, “কে ?” বিমলা প্ৰাণপণে সাহসে ভর করিয়া কহিলেন, “পথ-শ্রান্ত সত্ৰীলোক।” কবাট মক্ত হইল। দেখিলেন, মন্দিরমধ্যে প্রদীপ জবলিতেছে, সম্মখে কৃপাণ-হস্তে এক দীঘাকার পরষ দণডায়মান। বিমলা দেখিয়া চিনিলেন, কুমার জগৎসিংহ। ষোড়শ পরিচ্ছেদ ঃ শৈলেশবার সাক্ষাৎ বিমলা মন্দিরমধ্যে প্রবেশ করিয়া প্রথমে বসিয়া একটি স্থির হইলেন। পরে নতভাবে শৈলেশ্ববরকে প্ৰণাম করিয়া যদুবরাজকে প্ৰণাম করিলেন। কিয়ৎক্ষণ উভয়েই নীরব হইয়া রহিলেন, কে কি বলিয়া আপন মনোগত ভােব ব্যক্ত করিবেন ? উভয়েরই সঙ্কট। কি বলিয়া প্রথমে কথা কহিবেন ? বিমলা এ বিষয়ের সন্ধিবিগ্রহে পন্ডিতা, ঈষৎ হাস্য করিয়া বলিলেন, “যদুবরাজ ! আজি শৈলেশ্ববরের অনগ্রহে আপনার দশন পাইলাম, একাকিনী এ রাত্রে প্রান্তরমধ্যে আসিতে ভীতা হইয়াছিলাম, এক্ষণে মন্দিরমধ্যে আপনার দর্শনে সাহস পাইলাম।” যদুবরাজ কহিলেন, “তোমাদিগের মঙ্গল ত?” বিমলার অভিপ্রায়, প্রথমে জানেন,-রাজকুমার যথার্থ তিলোত্তমাতে অন্যরক্ত কি না, পশ্চাৎ অন্য কথা কহিবেন। এই ভাবিয়া বলিলেন, “যাহাতে মঙ্গল হয়, সেই প্রার্থনাতেই শৈলেশবরের পজা করিতে আসিয়াছি। এক্ষণে বঝিলাম, আপনার পজাতেই শৈলেশবর পরিতৃপ্ত আছেন, আমার পজা গ্রহণ করিবেন না, অননুমতি হয় তা প্ৰতিগমন করি।” যােবা। যাও। একাকিনী তোমার যাওয়া উচিত হয় না, আমি তোমাকে রাখিয়া আসি। বিমলা দেখিলেন যে, রাজপত্র যাবতজীবন কেবল অস্ত্র শিক্ষা করেন নাই। বিমলা উত্তর করিলেন, “একাকিনী যাওয়া অন্যচিত কেন ?” যােবা। পথে নানা ভীতি আছে। বি। তবে আমি মহারাজ মানসিংহের নিকটে যাইব । GCA