পাতা:বঙ্কিম রচনাবলী (প্রথম খণ্ড).pdf/৮০৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

हनबी दक्षिद्भाक्षी অপরাহে বড়োর প্রাণবিয়োগ হইল। প্ৰফল্লি তাহাকে তুলিল-বড়া শীর্ণকায়; সতরাং লঘ; প্রফল্পের বলা যথেষ্ট। প্ৰফল্লি তাহাকে লইয়া গিয়া, কবরে শায়াইয়া মাটি চাপা দিল। পরে নিকটস্থ কাপে স্নান করিয়া ভিজা কাপড় আধখানা পরিয়া রৌদ্রে শকাইল। তার পরে কোদালি শাবল লইয়া বাড়ার টাকার সন্ধানে চলিল। বড়ো তাহাকে টাকা দিয়া গিয়াছে— সতরাং লাইতে কোন বাধা আছে মনে করিল না। প্রফতুল্ল দীন-দঃখিনী। নবম পরিচ্ছেদ প্রফতুল্ল বড়াকে সমাধি-মন্দিরে প্রোথিত করিবার পকেবই তাহার শয্যা তুলিয়া বনে ফেলিয়া দিয়াছিল—দেখিয়াছিল যে, শয্যার নীচে যথার্থই একখানি চৌকা তক্তা, দীঘে প্রস্থে তিন হাত হইবে, মেঝেতে বসান আছে। এখন শ্যাবল আনিয়া, তাহার চাড়ে তন্তু উঠাইল—অন্ধকার গহবর দেখা দিল। ক্লামে অন্ধকারে প্রফক্স দেখিল, নামিবার একটা সিড়ি আছে বটে। জঙ্গলে কাঠের অভাব নাই। কিছর কাঠের চেলা উঠানে পড়িয়াছিল। প্রফতুল্ল তাহ বহিয়া আনিয়া কতকগলা গহবরমধ্যে নিক্ষেপ করিল। তাহার পর অন্যসন্ধান করিতে লাগিল— চকমকি দিয়াশলাই আছে কি না। বড়ো মানষ—অবশ্য তামাকু খাইত। সার ওয়ালটার রালের আবিক্ৰিয়ার পর, কোন বাড়া তামাকু ব্যতীত এ ছার, এ নর্শবর, এ নীরস, এ দাবিবষহ জীবন শেষ করিতে পারিয়াছে ?—আমি গ্রন্থকার মক্তকণ্ঠে বলিতেছি যে, যদি এমন বড়া কেহ ছিল, তবে তাহার মারা ভাল হয় নাই—তার আর কিছ দিন থাকিয়া এই পথিবীর দাবিবষহ যন্ত্রণা ভোগ করাই উচিত ছিল। খাজিতে খজিতে প্রফতুল্ল চকমকি, সোলা, দিয়াশলাই, সব পাইল । তখন প্ৰফল্প গোহাল উচাইয়া বিচালি লইয়া আসিল । চকমকির আগমনে বিচালি জবালিয়া সেই সর, সিউড়িতে পাতালে নামিল। শাবল কোদালি আগে নীচে ফেলিয়া দিয়াছিল। দেখিল, দিব্য একটি ঘর। বায়কোণ—বায়কোণ আগে ঠিক করিল। তার পর যে সব কাঠ ফেলিয়া দিয়াছিল, তাহা বিচালির আগমনে জবালিল। উপরে মক্ত পথ দিয়া ধয়ো বাহির হইয়া যাইতে লাগিল। ঘর আলো হইল। সেইখানে প্রফল্পে খাঁড়িতে আরম্ভ করিল। খড়িতে খড়িতে “ঠং' করিয়া শবদ হইল। প্ৰফীল্লের শরীর রোমাঞ্চিত হইল—বঝিল, ঘটি কি ঘড়ার গায়ে শাবল ঠেকিয়াছে। কিন্তু কোথা হইতে কার ধন। এখানে আসিল, তার পরিচয় আগে দিই। বড়োর নাম কৃষ্ণগোবিন্দ দাস। কৃষ্ণগোবিন্দ কায়স্থের সন্তান। সে সবচ্ছন্দে দিনপাত করিত, কিন্তু অনেক বয়সে একটা সন্দরী বৈষ্ণবীর হাতে পড়িয়া, রাসকলি ও খঞ্জনিতে চিত্ত বিক্ৰীত করিয়া, ভেক লইয়া বৈষ্ণবীর সঙ্গে শ্ৰীবান্দাবন প্রয়াণ করিল। এখন শ্ৰীবান্দাবন গিয়া কৃষ্ণগোবিন্দের বৈষ্ণবী ঠাকুরাণী, সেখানকার বৈষ্ণবদিগের মধ্যর জয়দেব-গীতি, শ্ৰীমদভাগবতে পান্ডিত্য, আর নধর গড়ন দেখিয়া, তৎপাদপদ্মানিকর সেবনপৰ্ব্ববর্তক পণ্যসঞ্চয়ে মন দিল। দেখিয়া, কৃষ্ণগোবিন্দ বন্দোবন পরিত্যাগ করিয়া বৈষ্ণবী লইয়া বাঙগালায় ফিরিয়া আসিলেন। কৃষ্ণগোবিন্দ তখন গরিব ; বিষয়কম্পেমাির অন্বেষণে মশিদাবাদে গিয়া উপস্থিত হইলেন। কৃষ্ণগোবিন্দের চাকরি জটিল। কিন্তু তাঁহার বৈষ্ণবী যে বড় সন্দরী, নবাবমহলে সে সংবাদ পৌছিল। এক জন হাবাসী খোজা বৈষ্ণবীকে বেগম করিবার অভিপ্ৰায়ে তাহার নিকেতনে যাতায়াত করিতে লাগিল। বৈষ্ণবী লোভে পড়িয়া রাজি হইল। আবার বেগোছ দেখিয়া কৃষ্ণগোবিন্দ বাবাজী, বৈষ্ণবী লইয়া সেখান হইতে পলায়ন করিলেন। কিন্তু কোথায় যান ? কৃষ্ণগোবিন্দ মনে করিলেন, এ অমল্য ধন লইয়া লোকালয়ে বাস অনচিত। কে কোন দিন কাড়িয়া লইবে। তখন বাবাজী বৈষ্ণবীকে পদ্মাপার লইয়া আসিয়া, একটা নিভৃত স্থান অন্বেষণ করিতে লাগিলেন। পয্যটন করিতে করিতে এই ভগন অট্টালিকায় আসিয়া উপস্থিত হইলেন। দেখিলেন, লোকের চক্ষ হইতে তাঁর অমল্য রত্ন ল্যুকাইয়া রাখিবার স্থান বটে। এখানে যম ভিন্ন আর কাহারও সন্ধান রাখিবার সম্পভাবনা নাই। অতএব তাহারা সেইখানে রহিল। বাবাজী সপতাহে সপতাহে হাটে গিয়া বাজার করিয়া আনেন। বৈষ্ণবীকে কোথাও বাহির হইতে দেন না। এক দিন কৃষ্ণগোবিন্দ একটা নীচের ঘরে চুলা কাটিতেছিল,—মাটি খাঁড়িতে খড়িতে O (t